শিরোনাম
আমরা চুনোপুটিও ধরব, বড় মাছও ধরব: দুদক চেয়ারম্যান
প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০১৯, ১৪:৩৩
আমরা চুনোপুটিও ধরব, বড় মাছও ধরব: দুদক চেয়ারম্যান
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ (ফাইল ফটো)
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

দুদক যেসব মামলা বা অভিযোগে তদন্ত করছে, তার মধ্যে অধিকাংশই চুনোপুটির বিরুদ্ধে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্থাটির (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।


তিনি বলেন, এর সংখ্যা প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগ। তাই অনেকে প্রশ্ন করেন আমরা কি শুধু চুনোপুটির বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করছি? আসলে ছোট গাছ উপড়ে ফেলা যত সহজ, বড় গাছ উপড়ানো তত কঠিন। তাই বলে যে আমরা বড় গাছ ধরছি না, তা নয়। আমরা ধরছি। চুনোপুটিও ধরব। বড় মাছও ধরব।


শনিবার (২০ জুলাই) ‘দুর্নীতি দমনে আইনজীবী ও বিচার বিভাগের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইকবাল মাহমুদ এসব কথা বলেন।


দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আসলে বৈপ্লবিকভাবে কিংবা হুট করে সবকিছু করা সম্ভব হবে না। আমরা আস্তে আস্তে ধরব। চুনোপুটি ধরেছি, বড় মাছও ধরা হবে। ইন ওয়ান গোয়িং ওয়ান জাম্প।


তিনি বলেন, ‘আমরা হাত দিলে হাত নিয়ে আসতে চাই না। হাত পুড়ে যাক, আমরা সবাই চলে যাই, তাও ভালো। যদি হাত দেই তো দেবই। যদি না পারি তাহলে দেব না। এটাই আমাদের কমিশনের ফিলোসফি।’


মানি লন্ডারিং মামলা প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, মানি লন্ডারিং ইস্যুটা আমাদেরই। মানি লন্ডারিং আইন সংস্কার করে শুধু ঘুষ আর দুর্নীতির বিষয়গুলো কমিশন দেখছে। এ সংক্রান্ত ২০০ মামলা তদন্ত করছে কমিশন। এর মধ্যে ২২টি মামলার ২২টিতেই শাস্তি হয়েছে। অর্থাৎ শতভাগ শাস্তি হয়েছে।


ঘুষ থেকে উৎসরিত অর্থ যদি লন্ডারিং হয়, তাহলে আমরা আছি। বাকিগুলো সিআইডি, বাংলাদেশ কিংবা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর দেখছে। তবে দুদকের ওপর অনেকেরই মানি লন্ডারিং মামলার তদন্ত নিয়ে প্রত্যাশা বেশি। সেটা ভালো।


তিনি বলেন, আমরা এসব নিয়ে তিনটি রিসার্চ করছি। আমাদের ফিলোসফি রয়েছে। আমাদের দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে। দুর্নীতির কারণে তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর তারা কিন্তু সব অফিস-আদালতেই দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন।


ইকবাল মাহমুদ বলেন, সমাজে দুই পেশাজীবী শ্রেণির গুরুত্ব অনেক বেশি। ডাক্তার শ্রেণি সরাসরি মানুষের জীবন রক্ষায় কাজ করে থাকেন। কিন্তু আইনজীবীদের ক্ষেত্রে আরো দায়িত্ব ও গুরুত্ব বেশি। কারণ তারা জীবন, সম্পত্তি ও বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষায়ও কাজ করে থাকেন। দুদকের মামলায় আমরা ভালো আইনজীবী নিতে চাই।


দুদকের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে তিনি বলেন, দুদক কিন্তু হুট করে আসেনি। আমরা যারা দুদকে কাজ করি, তারাও এ সমাজেরই মানুষ। এ সমাজেরই অংশ। সুতরাং আমরা মুরুদ্দার নই। সমাজের অন্যান্য জায়গায় যা হয়, তা আমাদের এখানে যে হয় না, তা নয়। আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। সে দায় আমাদেরই। আমাদের তদন্তকারী কর্মকর্তাও কম। একটা প্রশ্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, একজন ডেপুটি পরিচালক কিংবা সহকারী পরিচালক যখন সচিবের পদমর্যাদার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করেন। তখন সরকারি কর্মকর্তাকে ধরতে সরকারের অনুমতি লাগে না।


তিনি বলেন, ১০ থেকে ১৫ জন সরকারদলীয় এমপি-মন্ত্রীর বিরেুদ্ধে তদন্ত করছে দুদক। অন্য এক দলের ১৫ জন, আরেক দলের ১২ জন। আরেক দলের ব্যবসা সংক্রান্ত তদন্ত ২৫ জন, ঊর্ধ্বতন আমলা সচিব থেকে শুরু করে ডেপুটি সেক্রেটারি পর্যন্ত ১৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে দুদক।


ইকবাল মাহমুদ বলেন, আসলে সমন্বিত প্রয়াস ছাড়া দুর্নীতি রোধ সম্ভব না, মূল্যবোধসম্পন্ন বাচ্চা তৈরি করতে হবে। আমরা যদি একটা জেনারেশনকে বদলে দেয়ার যুদ্ধে সফল হতে পারি, তাহলে তারাই হবে আমাদের অ্যাসেড।


অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলদেশ’ এর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ’ কর্তৃক আয়োজিত সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার আমির-উল-ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হক, সাবেক আইনমন্ত্রী ও সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল মতিন খসরু।


বিবার্তা/রবি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com