শিরোনাম
জেলা প্রশাসকদের ৩১ নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০১৯, ১৫:১৫
জেলা প্রশাসকদের ৩১ নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

পাঁচ দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন রবিবার (১৪ জুলাই) থেকে শুরু হয়েছে। এ দিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। সম্মেলন শেষ হবে ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার।


জেলা প্রশাসকদের ৩১টি নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (১৪ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব নির্দেশনা দেন।


জেলা প্রশাসকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩১ দফা নির্দেশনা


(১) ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত উদযাপনের লক্ষ্যে আপনাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।


(২) ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধুর আজীবন লালিত স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে হবে।


(৩) সরকারি সেবা গ্রহণে সাধারণ মানুষ যাতে কোনোভাবেই হয়রারি বা বঞ্চনার শিকার না হন, সেদিকে অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে।


(৪) জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করে সর্বক্ষেত্রে শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে আপনাদের আরো সতর্কতার সঙ্গে এবং কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।


(৫) যুব সমাজকে মাদকের হাত থেকে রক্ষা করতে মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।


(৬) গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, সম্ভাবনাময় স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্যবিমোচনে আপনাদের ব্রতী হতে হবে।


(৭) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন ও বিকাশে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিতে হবে। দৈনন্দিন প্রয়োজনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহারে জেলার সাধারণ জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।


(৮) তৃণমূল পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করতে হবে।


(৯) শিক্ষার সকল স্তরে নারীশিক্ষার হার বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় ত্যাগের হার হ্রাস এবং ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে।


(১০) ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সরকারি ভূমি রক্ষায় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।


(১১) কৃষি-উৎপাদন বৃদ্ধিতে সার, বীজ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ইত্যাদির সরবরাহ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে হবে।


(১২) ভেজাল খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ প্রতিরোধে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে এবং এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।
(১৩) দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম আরো জোরদার করতে হবে।


(১৪) পরিবেশ রক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং এসংক্রান্ত আইন ও বিধি-বিধানের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।


(১৫) প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয় প্রশমনে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১২’ এবং এ সংক্রান্ত স্থায়ী নির্দেশনাবলি অনুসারে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।


(১৬) সাধারণ মানুষকে সহজে সুবিচার প্রদান ও আদালতে মামলার জট কমাতে গ্রাম আদালতগুলোকে কার্যকর করতে হবে।


(১৭) জেলা প্রশাসকজেলাপর্যায়ে বিভিন্ন কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসব কমিটিকে সক্রিয়, গতিশীল ও ফলপ্রসূ করতে হবে।


(১৮) দফতরসমূহের বিদ্যমান সেবাতৃণমূলে পৌঁছানোর লক্ষ্যে তথ্য মেলা, সেবা সপ্তাহ পালনসহ ইত্যাদি কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।


(১৯) শিল্পাঞ্চলে শান্তি রক্ষা, পণ্য-পরিবহন ও আমদানি-রফতানি নির্বিঘ্ন করা এবং চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, পেশিশক্তি ও সন্ত্রাস নির্মূল করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।


(২০) বাজার-ব্যবস্থার সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে। ভোক্তা-অধিকারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে এবং বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির যে কোনো অপচেষ্টা কঠোর হাতে দমন করতে হবে।


(২১ নারী ও শিশু নির্যাতন এবং পাচার, যৌতুক, ইভটিজিং এবং বাল্যবিবাহের মতোসামাজিক ব্যাধি থেকে মুক্তির জন্য আপনাদের দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।


(২২) নারীর প্রতি সহিংসতা, নিপীড়ন ও বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।


(২৩) শিশু-কিশোরদের পুষ্টিচাহিদা পূরণ এবং তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে শিক্ষা, ক্রীড়া, বিনোদন ও সৃজনশীল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সংস্কৃতিবোধ ও বিজ্ঞানমনস্কতা জাগিয়ে তুলতে হবে।


(২৪) প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক ও পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর কল্যাণে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।


(২৫) পার্বত্য জেলাসমূহের উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণের পাশাপাশি এ অঞ্চলের ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য, বনাঞ্চল, নদী-জলাশয়, প্রাণিসম্পদ এবং গিরিশৃঙ্গগুলোর সৌন্দর্য সংরক্ষণ করতে হবে। এছাড়া পর্যটনশিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং কুটিরশিল্পের বিকাশে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করতে হবে।


(২৬) বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে এ ব্যবস্থা নিতে হবে।


(২৭) জেলাসমূহের আকার ভিন্ন ভিন্ন। ছোট-বড়-মাঝারি ভৌগলিক অবস্থানও ভিন্ন। উন্নয়ন পরিকল্পনায় এ বিষয়গুলোবিশেষভাবে দৃষ্টি রেখে পদক্ষেপ নিতে হবে।


(২৮) স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ, ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ, জনগণের চাহিদা এবং উন্নত জীবন নিশ্চিতকরণের বিষয়ে বিশেষভাবে লক্ষ্য রেখে প্রকল্প/উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।


(২৯) চিত্ত বিনোদন ও সাংস্কৃতিক চর্চার সুবিধার্থে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে হবে।


(৩০) সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, হিজড়া, বেদে ও প্রতিবন্ধীদের প্রতি বিশেষ লক্ষেরাখতে হবে। জলাধার সংরক্ষণের নিমিত্তে খালও পুকুর খনন করতে হবে। পরিকল্পিত সড়ক, নগরায়ন ও বনায়ন নিশ্চিত করতে হবে।


(৩১) গৃহহারা, ভূমিহীন ও ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।


এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম স্বাগত বক্তব্য রাখেন। জেলা প্রশাসকদের পক্ষে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম ও শেরপুরের জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com