শিরোনাম
‘সাধারণ মানুষ যাতে কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হয়’
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০১৯, ১৪:০৯
‘সাধারণ মানুষ যাতে কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হয়’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারী সেবা গ্রহণে সাধারণ মানুষ যাতে কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হয়। সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন ।


রবিবার (১৪ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশে জেলাভিত্তিক উন্নয়নের বাজেট প্রণয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। জেলার ভৌগলিক অবস্থান, আয়তন, জনসংখ্যা ও চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে আগামীতে জেলাভিত্তিক উন্নয়ন বাজেট প্রণয়ণ করা হবে।’


এ সময় দেশব্যাপী উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) আরও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের যে গতিধারায় এগিয়ে চলেছে সে ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকরা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’


তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে সার্বিক উন্নয়নে জেলা প্রশাসকরা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। জেলার ডিসিরা স্বপ্রণোদিত হয়ে নানা সামাজিক উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন। যার সুফল সাধারণ জনগন পেতে পারে। ইতোমধ্যেই তাদের গৃহীত উন্নয়ন উদ্যোগের ফলে জনগণ সুফল পাচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে সার্বিক কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের জনসংখ্যা বেশি হলেও তা বোঝা নয়। জনসংখ্যাকে দক্ষ জনশক্তিকে রুপান্তরিত করা গেলে তারাই হবে উন্নয়নের মূল শক্তি। এ দেশের কোনো মানুষ যেন গৃহহীন ও ভূমিহীন না থাকে সে লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।’


প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনসংখ্যা বেশি হলেও তা বোঝা নয়। জনসংখ্যাকে দক্ষ জনশক্তিকে রূপান্তরিত করা গেলে তারাই হবে উন্নয়নের মূল শক্তি। তিনি বলেন, দেশের কোনো মানুষ যেন গৃহহীন ও ভূমিহীন না থাকে সে লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।


তিনি বলেন, এক সময় আমেরিকা বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বা বটমলেস বাস্কেট বলতো। সেই আমেরিকাতে দারিদ্র্যের হার শতকরা ১৮ ভাগ। বর্তমানে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ২১ ভাগ।


তিনি আরো বলেন, অন্তত ৪ ভাগ দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আমেরিকার চেয়ে দারিদ্র্যের হার কমাতে হবে। এ ব্যাপারে তৎপর হয়ে ডিসিদের কাজ করার জন্য ওয়াদাবদ্ধ হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।


উল্লেখ্য, পাঁচ দিনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হয়েছে আজ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে সকাল ৯টায় এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর বেলা ১১টায় কবরী হলে প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে মুক্ত আলোচনা করেন। বেলা সাড়ে ১২টায় ফটোসেশনের মধ্যে দিয়ে উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষ হবে।


এদিকে রবিবার দুপুর আড়াইটায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে প্রথম কার্য অধিবেশন শুরু হবে। প্রথম অধিবেশনে তিনটি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।


প্রথম অধিবেশনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ৫টি প্রস্তাব রয়েছে। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক প্রস্তাব এনেছেন, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের নিদর্শন হিসেবে চট্টগ্রাম জেলার কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রটিতে স্বাধীনতা জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা। এর স্বপক্ষে যে যুক্তি দেখানো হয়েছে তা হলো, এখানে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামকালীন জাতির পিতার বঙ্গবন্ধুর পক্ষে সর্বপ্রথম স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। বর্তমানে বেতার কেন্দ্রটি অত্যান্ত জরাজীর্ণ ও অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। এ বেতার কেন্দ্রটি সংরক্ষণে এখানে স্বাধীনতা জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।


দ্বিতীয় প্রস্তাব হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য স্মার্টকার্ড প্রবর্তন। এ প্রস্তাবটি আনছেন যশোরের জেলা প্রশাসক। তৃতীয় প্রস্তাবটি হচ্ছে, মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্রে উন্নীতকরণ। এ প্রস্তাব করেছেন মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক। চতুর্থ প্রস্তাবটি এনেছেন বরিশাল জেলা প্রশাসক। আর প্রস্তাবটি হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থান স্থাপনাগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ। এ মন্ত্রণালয়ের সবশেষ প্রস্তাব হচ্ছে, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন বা বাড়ি নির্মাণ ও চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসকের অধীনে পর্যাপ্ত বরাদ্দ প্রদান। আর এ প্রস্তাবটি এনেছেন মাদারীপুর জেলা প্রশাসক।


সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উল্লেখযোগ্য প্রস্তাব হচ্ছে, ক্যানসার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজেড রোগীদের জন্য আর্থিক সহায়তার অনুদান বরাদ্দ জেলা প্রশাসকদের অনুক‚লে প্রদান। এ প্রস্তাব এনেছেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক । এরপরেই রয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।


আগামীকাল পাঁচটি অধিবেশন। প্রথমে থাকছে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, দ্বিতীয় অধিবেশনে বিদ্যুৎ বিভাগ ও জ্বালানি বিভাগ। তৃতীয় অধিবেশনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, চতুর্থ অধিবেশনে সংস্কৃতি ও তথ্য মন্ত্রণালয়। আর পঞ্চম অধিবেশনে থাকছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সংক্রান্ত।


জানা গেছে, পাঁচ দিনের অধিবেশনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মোট ৩৩৩টি প্রস্তাব ওঠবে। তবে সব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা না হওয়ার সম্ভাবনা বেশ। কারণ এত সংক্ষিপ্ত সময়ে এত বেশি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ থাকে না।


পাঁচ দিনের সম্মেলনে জেলা প্রশাসকরা রাষ্ট্রপতি ছাড়াও প্রধান বিচারপতি, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানা গেছে।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com