শিরোনাম
এফআর টাওয়ার নির্মাণে দুর্নীতি, দুদকের দুই মামলা
প্রকাশ : ২৫ জুন ২০১৯, ১৮:০৩
এফআর টাওয়ার নির্মাণে দুর্নীতি, দুদকের দুই মামলা
ফাইল ছবি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ঢাকার বনানীর এফআর টাওয়ারকে ২৩ তলা পর্যন্ত বাড়াতে নকশা জালিয়াতির অভিযোগে ভবন মালিক, নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং রাজউকের সাবেক দুই চেয়ারম্যানসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।


কমিশনের উপ-পরিচালক মো. আবুবকর সিদ্দিক মঙ্গলবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা দুটি দায়ের করেন বলে সংস্থার জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান।


মামলার প্রধান আসামি জমির ইজারাদার হোসাইন ঈমাম ফারুক, রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল। এছাড়া রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন খাদিম, রাজউকের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী সাইদুর রহমান, রাজউকের সাবেক অথোরাইজড অফিসার-২ সৈয়দ মকবুল আহমেদসহ ২৩ জনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।


এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ১৯৯০ সালে এফআর টাওয়ার ১৫ তলা নির্মাণের জন্য রাজউকে আবেদন করে এবং ওই বছরই সেটার অনুমোদন দেওয়া হয়। ১৯৯৬ সালে ১৮ তলা ভবন করার জন্য একটি সংশোধিত নকশা পাঠানো হয়। সংশোধিত এই নকশা বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বাধা-নিষেধে অনুমোদন যোগ্য হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৯৬ সালের ১১ নভেম্বর সম্পূর্ণ অবৈধভাবে রাজউকের অথরাইজড অফিসার ১৮ তলা ভবন করার অনুমোদন দেন।


যার সঙ্গে রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন খাদিম, রাজউকের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী সাইদুর রহমান, রাজউকের সাবেক অথরাইজড অফিসার-২ সৈয়দ মকবুল আহমেদ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। অনুমোদনের পর ২০০৩ সালের ওই জমিতে রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লি. ভবন নির্মাণ শুরু করে। জমিতে ভবন নির্মাণের সময় আড়াই মিটার খালি জায়গা রাখার কথা থাকলেও তা রাখা হয়নি। কার পার্কিং ৮২৭ বর্গমিটার বাধ্যতামূলক থাকলেও সংশোধন নকশায় ৩৮০ বর্গমিটার রাখা হয়।


অবৈধভাবে নির্মাণ করা ২০, ২১ ও ২২ তলা কিনতে ২০০৫ সালে কাসেম ড্রাইসেলস লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসবীর উল ইসলাম চুক্তি করেন। এজন্য পাঁচ কোটি ৬৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকা চুক্তিবদ্ধ হন। ভবনটি ১৮ তলা তৈরির পর অনুমোদন জালিয়াতির মাধ্যমে নেওয়া হলেও পরবর্তী সময়ে আবারও ২৩ তলা পর্যন্ত নির্মাণের অনুমোদন করার চেষ্টা করেন। অনুমোদন না থাকলেও ২৩ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করা হলেও রাজউক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি ভবন মালিকের বিরুদ্ধে।


মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৮ মার্চ দুপুরে বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগলে ফায়ার এলার্ম, ফায়ার এক্সিট, সরু সিঁড়ি ও জরুরি নির্গমন পথে প্রতিবন্ধকতা থাকায় ২৫ জন মারা যায় এবং ৭৩ জন পঙ্গুত্ব বরণ করে। এ ঘটনায় আহত ফায়ারম্যান সোহেল পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।


এদিকে এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় বনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিল্টন দত্ত বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় আসামিরা হলেন- ভবনের বর্ধিত অংশের মালিক তাসভির উল ইসলাম, জমির মালিক প্রকৌশলী এস এম এইচ আই ফারুক ও রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান। এছাড়া এফআর টাওয়ারের ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতাসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।


২৩ জুন রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান ওরফে মুকুল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান। রবিবার দুপুরে ঢাকা সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ ও জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ২০ হাজার টাকা বন্ডে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করে আদালত। পুলিশের করা এই মামলার মূল আসামিরা সবাই জামিন আছেন।


বিবার্তা/তাওহীদ/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com