শিরোনাম
‘বাংলাদেশের ১ কোটি ৯০ লাখ শিশু ঝুঁকির মুখে’
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:২১
‘বাংলাদেশের ১ কোটি ৯০ লাখ শিশু ঝুঁকির মুখে’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বিশ্বে অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের অর্ধেকেরও বেশি অংশের বসবাস এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। মারাত্মক অপুষ্টি থেকে শুরু করে অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতা পর্যন্ত বিস্তৃত পরিসরে এবং প্রায় সব বয়সী মানুষের ওপরেই অপুষ্টির নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তবে বিশেষ করে শিশুদের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব বেশি পড়ে এবং তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।


জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভয়াবহ বন্যা, ঘুর্ণিঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশের ১ কোটি ৯০ লাখ শিশু ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।


শুক্রবার সংস্থাটির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।


‘গ্যাদারিং স্টর্ম : ক্লাইমেট চেঞ্জ ক্লাউডস দ্য ফিউচার অব চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ’ শিরোণামের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ‘সমতল ভূমি, ঘন বসতি ও দুর্বল অবকাঠামো একে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত শক্তিশালী ও অনিশ্চিত শক্তির কাছে ব্যাপকভাবে অরক্ষিত করে ফেলেছে।’ দেশের উত্তরের বন্যা ও খরা প্রবণ এলাকা থেকে ঝড় কবলিত বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকা পর্যন্ত এই ঝুঁকি বিরাজমান।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারেণ বন্যা কিংবা নদী ভাঙ্গনের কারণে লাখ লাখ শিশু গ্রাম ছেড়ে বড় শহরগুলোতে এসে আশ্রয় নিয়েছে। ইউনিসেফের এই তালিকায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুরাও রয়েছে। ২০১৭ সালে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের তাদের সন্তানদের নিয়ে এখন বাঁশ ও প্লাস্টিকের তৈরি ঘরে থাকতে হচ্ছে।


বর্তমানে ১ কোটি ৯৪ লাখ শিশুর মধ্যে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ শিশুর অধিকাংশই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত বড় নদীগুলোর পানি প্রবাহ এবং তাদের নিয়মিত ভাঙ্গনের শিকার। এর বাইরে উপকূলীয় এলাকায় ৪৫ লাখ শিশু বাস করছে যেখানে নিয়মিত শক্তিশালী ঘুর্ণিঝড় আঘাত হানছে।


প্রতিবেদনের লেখক সাইমন ইনগ্রাম বলেছেন, ‘বন্যার কারণে যে বিপদ দেখা যাচ্ছে তা ব্যাপক এবং এটা প্রায় বছর ভিত্তিক হয়ে গেছে। সর্বশেষ ২০১৭ সালে বড় আকারের বন্যা বাংলাদেশে আঘাত করেছিল, যখন প্রায় ৮০ লাখ লোক একাধিক বন্যার শিকার হয়েছিল।


ওই সময় ব্রহ্মপুত্র নদের কারণে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ৪৮০টি কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং অন্তত ৫০ হাজার টিউবওয়েল ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ওই অঞ্চলের নিরাপদ পানির সংস্থানের জন্য এই টিউবওয়েলগুলো খুবই জরুরি ছিল।


তিনি বলেন, ‘কেবল পরিবারগুলোকে বাস্তুচ্যুত ও তাদেরকে গৃহহীন হতে বাধ্য করার ওপরই কেবল এর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে তা নয়, বরং এটি স্বাস্থ্যসেবা এবং পানি ও পয়ঃব্যবস্থার মতো মৌলিক সেবাগুলোকে ধ্বংস করে ফেলেছে।


ঘরবাড়ি হারানোর কারণে অনেক পরিবারই তাদের আয়ের পথ হারিয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।


এতে বলা হয়েছে, ‘অনেক শিশুকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। পরিবার ভরণপোষণের ব্যয় নির্বাহ করতে না পারায় অনেক মেয়েকে বাল্যবিবাহে বাধ্য করা হচ্ছে। ‘


ইনগ্রাম আরো বলেছেন, ‘অনেক মেয়ে আছে যারা সুস্পষ্টভাবে ভাসমান হয়ে গেছে এবং শহরগুলোর যৌন ব্যবসার প্রসার ঘটাচ্ছে। যেসব মেয়েদের কাছে থেকে অন্য কোনো প্রাপ্তির আশা নেই তাদেরকে পরিত্যাগ করা হচ্ছে।’


প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে জাতিসংঘের চারটি বিশেষায়িত সংস্থা আজ সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছে জানানো হয়েছিলো এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো যদি সব ধরনের অপুষ্টির অবসানে এবং ২০৩০ সাল নাগাদ ক্ষুধামুক্ত অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় নিজেদের পুনরায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না করে তাহলে এই অঞ্চলের মানুষ ও অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।


বিবার্তা/শারমিন/শাহনাজ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com