শিরোনাম
‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে’
প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৯:৫৬
‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে’
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে চেয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাম্প্রদায়িক অপপ্রচারের নামে যারা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও সুনাম ক্ষুণ্ন করবে তাদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশের বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক বন্ধন ও সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা হলে কঠোরভাবে দমন করা হবে।


বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত। এ দেশে বসবাসরত সকল ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের মানুষের মধ্যে যে পারস্পারিক গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে তা জাতি হিসেবে আমাদের গৌরবের বিষয়। স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহারের মাধ্যমে রাজনীতি করে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে চেয়েছে। তবে, আমাদের ঐকান্তিক চেষ্টায় বারবার তা ব্যর্থ হয়েছে।


কুচক্রীমহল দেশে যাতে কোনোভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ক্ষেত্র তৈরি করতে না পারে সে ব্যাপারে সরকার সজাগ রয়েছে উল্লেখ করে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। অপরাধীদের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান কঠোর। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। যারা সাম্প্রদায়িক অপপ্রচারের নামে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও সুনাম ক্ষুণ্ন করবে তাদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক বন্ধন ও সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করা হলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।


জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আত্ম মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ যাচ্ছি। দেশ আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে বাংলাদেশকে বিশ্ব সম্প্রদায় এখন সম্মানের দৃষ্টিতে দেখে।


যতদিন বেঁচে থাকবেন দেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য কাজ করে যাবেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে উন্নত, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবো। স্বাধীন ও আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে আগামী দিনেও সুসম্পর্ক বজায় রাখবো। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ভবিষ্যতে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের এ অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত, সমৃদ্ধ ও শান্তিময় দেশ।


রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি নরওয়ে, ফ্রান্স, রাশিয়াসহ বিশ্বের প্রায় সব গণতান্ত্রিক দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানরা ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন।


বিভিন্ন দেশের মোট ৯৭ জন নেতা অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর জবাবে উল্লেখ করা হয়।
সরকারি দলের আব্দুল মতিন খসরুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর শিক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এর ভিত্তিতে কার্যক্রম ব্যাপকভাবে চলে। ওই নীতিমালায় শিক্ষা কমিশনের কথাও উল্লেখ আছে। ভবিষ্যতেও শিক্ষা কমিশন গঠন করা হবে।


গ্রামের নির্মল বায়ু ও শ্যামল-সবুজ পরিবেশ তাকে টানে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ কারণেই তিনি অবসরে গ্রামে থাকার আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে গ্রামে জন্মেছি ও বেড়ে উঠেছি সে গ্রামের স্মৃতি বড় মধুর। গ্রামের কাদা মাটি মেখে বড় হয়েছি। এ স্মৃতি কোনো দিন ভোলা যায় না, মোছা যায় না। গ্রামের নির্মল বাতাস এখনও আমাকে টানে। ইট পাথরের এই নগরী আর ভালো লাগে না। গ্রামের নির্মল বায়ু, খোলা মেলা আকাশ। প্রাণ খুলে নিঃশ্বাস নেয়া যায়। এ কারণে অবসরে গ্রামে থাকা আমার খুব আকাঙ্ক্ষা।


অবসরে গ্রামে গিয়ে বসবাসের ব্যাপারে তিনি বলেন, আসলে আমাদের গ্রাম আমাদের প্রাণ। গ্রামের মানুষদের আমরা যেমন নাগরিক সুবিধা দিতে চাই, অবস্থা একটু ভালো হলেই সবাই গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসতে চাই, এটা আমার পছন্দ না। আমি ছোটবেলায় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছি। আমি বড় হয়েছি গ্রামের কাদামাটিতে। বড় হয়েছি খালে ঝাঁপ দিয়ে, গাছে উঠে নানাভাবে খেলাধুলা করেই গ্রামে বড় হয়েছি। হয়ত একটা পর্যায়ে চলে এসেছি। কিন্তু গ্রামের টান কখনও মুছে যায়নি। মুছে যাবে না। এখনও মনটা পড়ে থাকে প্রিয় গ্রামে। সবসময় একটা আকাঙ্ক্ষা- যখন আমি অবসর নেব তখনই গ্রামের বাড়িতে গিয়ে থাকব।


শেখ হাসিনা বলেন, সবুজ শ্যামল সুন্দর পরিবেশ সবসময় আমাকে টানে। কাজেই আমার একটা ইচ্ছা আমি মনে করি গ্রামের নির্মল বাতাস, সুন্দর পরিবেশ এটা মানুষকে স্বাভাবিকভাবেই অনেক সুস্থ রাখে। মন ভালো থাকে। শহরের ইট-কাঠের বদ্ধ আবহাওয়া পরিবেশ থেকে গ্রামের উন্মুক্ত পরিবেশটা সব সময় আমাকে টানে।


উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা পার্টির (ভিডিপি) ৩৯তম জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি’র অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণের পরে তিনি তার গ্রামে বাস করবেন। তিনি বলেন, ‘যখনই আমি রাজনীতি থেকে অবসর নেব, আমি আমার গ্রামে চলে যাব এবং এটিই আমার সিদ্ধান্ত।’


বিএনপির নির্বাচিত প্রার্থীদের সংসদে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত ১০ বছরের যে উন্নয়ন, সেই উন্নয়নের সফলতার জন্যই জনগণ আমাদের ভোট দিয়েছেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে অল্প সিট পেয়েছে, সেই অভিমানে তারা সংসদে আসছেন না। আমি মনে করি, এটা একটি রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্ত। কারণ ভোটের মালিক জনগণ। তারা যাকে খুশি তাকে ভোট দেবেন। সেভাবেই তারা দিয়েছেন।


তিনি আরোও বলেন, যদি তারা পার্লামেন্টে আসে আর তাদের যদি কোনো কথা থাকে তা বলার সুযোগ পাবেন। এই সুযোগটা শুধু সংসদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এখন মিডিয়ায় সংসদের সবকিছু প্রচার হয়। তার মাধ্যমে সারা দেশবাসী তা জানতে পারবে। এই সুযোগটা কেন তারা হারাচ্ছে তা আমি জানি না। তবে আমি তাদের আহ্বান করব- যারা নির্বাচিত সংসদ সদস্য তারা সবাই পার্লামেন্টে আসবেন, বসবেন এবং যার যার কথা তারা বলবেন। এটাই আমি আশা করি। কাজেই আমি তাদের সেই আহ্বান জানাচ্ছি।



নবম ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদের সুপারিশমালা পরীক্ষা করে দ্রুত গেজেট প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।


শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সাংবাদিক ও সংবাদ কর্মীদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে প্রতি ৫ বছর পর পর ওয়েজবোর্ড গঠন করছে। নবম ওয়েজবোর্ড সব সংবাদপত্র ও গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য ৪৫ ভাগ মহার্ঘভাতা প্রদানের সুপারিশ করেছে।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসচ্ছল, অসুস্থ ও দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক এবং নিহত সাংবাদিকদের অনুকূলে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ‘বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ গঠন করা হয়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত এ ট্রাস্ট থেকে মোট ১ হাজার ৩৯৬ জনকে মোট ১০ কোটি ৭ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।


শেখ হাসিনা বলেন, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ তহবিলে ২ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ তহবিল থেকে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট ফান্ডে সিড মানি হিসেবে ২০ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। এ নিয়ে কল্যাণ ট্রাস্ট ফান্ডে বর্তমানে মোট ৩৫ কোটি টাকা সিড মানি রয়েছে।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্য প্রবাহের অধিকার সুরক্ষায় অঙ্গীকারাবদ্ধ। ইতোমধ্যে সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদের আলোকে দেশে গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।


শেখ হাসিনা বলেন, দেশে সাংবাদিকদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যাপক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৪টি টেলিভিশন লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৩টি সম্প্রচার করছে। ২৮টি এফএম রেডিও-এর লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি এফএম রেডিও সম্প্রচার করছে। এলাকা ও অঞ্চলভিত্তিক ৩২টি কমিউনিটি রেডিও লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে, এর মধ্যে ১৭টি সম্প্রচারে রয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে সারাদেশে প্রকাশিত মোট দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা ১ হাজার ২৪৮টি, যার মধ্যে ঢাকা থেকে প্রকাশিত পত্রিকার সংখ্যা ৫০২টি ও আঞ্চলিক পত্রিকার সংখ্যা ৭৪৬টি। সারাদেশে সাপ্তাহিক পত্রিকার সংখ্যা ১ হাজার ১৯২টি, মাসিক পত্রিকার সংখ্যা ৪১৪টি ও অন্যান্য পত্রিকার সংখ্যা ৪১টি। এছাড়াও ২ হাজার ২১৭টি অনলাইন মিডিয়া রয়েছে, যার মধ্যে অনলাইন পত্রিকা ১ হাজার ৮৭৪টি, ইন্টারনেট টেলিভিশন ২৫৭টি, অনলাইন রেডিও ৪৫টি ও ই-পেপার ৪১টি।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রচার আইন, ২০১৮ এর খসড়া তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত অক্টোবরে খসড়া আইনটি নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে। এটি গত ৪ নভেম্বরে ভেটিংয়ের জন্য লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।


শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা-২০১৪ এর অনুচ্ছেদ ৩.২.২ থেকে বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য পরিবেশনের বিরুদ্ধে সতর্ক করা হয়েছে। দেশের প্রচলিত অন্যান্য আইনেও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের বিরুদ্ধে বিধি-নিষেধ রয়েছে। মিথ্যা সংবাদ প্রচার করলে টিভি চ্যানেলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।


তিনি বলেন, সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরি সুরক্ষার জন্য ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরি ও শর্তাবলী) আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। গত বছর ১৫ অক্টোবরে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এর নীতিগত অনুমোদন করা হয়।


বিবার্তা/শারমিন/শাহনাজ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com