শিরোনাম
এসএসসির প্রশ্ন যাবে অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েলে
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০১৯, ২২:১৯
এসএসসির প্রশ্ন যাবে অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েলে
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্ন পাঠানো হবে অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি ফয়েল পেপারের বিশেষ নিরাপত্তা-প্যাকেটে। যাতে ট্রেজারি বা ব্যাংকের ভল্ট থেকে কেন্দ্রে নেয়ার পথে কেউ প্রশ্নের প্যাকেট খুললে সহজেই ধরা পড়েন।


অপরদিকে পরীক্ষা সামনে রেখে আগামী ২৭ জানুয়ারি থেকে একমাস বন্ধ থাকবে দেশের সব কোচিং সেন্টার। প্রশ্নফাঁস রোধে সতর্কতামূলক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


শিক্ষমন্ত্রী ডা. দীপু মনি রবিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি এই পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।


এই সংবাদ সম্মেলনের আগে পরীক্ষা সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও ইতিবাচক পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।


সূত্র জানায়, পাবলিক পরীক্ষা থেকে বহু নির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) তুলে দেয়ার ব্যাপারে বৈঠকে আলোচনা হয়। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে নতুন শিক্ষামন্ত্রীকে অবহিত করা হয় যে, প্রশ্নফাঁসের যে ঘটনা ঘটে সেটা এমসিকিউ প্রশ্ন কেন্দ্রিক। সৃজনশীল প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটে না বললেই চলে।


আলোচনার একপর্যায়ে সারাংশ করা হয় যে, হুট করেই এমসিকিউ প্রশ্ন বন্ধ করা যাবে না। কমপক্ষে দু’বছর সময় নিয়ে ঘোষণা দিতে হবে। সেক্ষেত্রে অষ্টম শ্রেণিতে যারা লেখাপড়া করে, তাদের এসএসসি পরীক্ষার সাল ধরে এমসিকিউ বন্ধের বছরটি নির্ধারণ করা যেতে পারে।


বৈঠক শেষে এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে (এমসিকিউ বন্ধ) যথাসময়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।


সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবারের এই পরীক্ষায় সর্বমোট ২১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬০ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এদের মধ্যে দাখিলে অংশ নিচ্ছে ৩ লাখ ১০হাজার ১৭২ জন। এসএসসি ভোকেশনালে পরীক্ষা দেবে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭২ জন। সারাদেশে মোট পরীক্ষা কেন্দ্র ৩ হাজার ৪৯২টি।


সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নিরাপত্তাজনিত কারণে ২৭ জানুয়ারি থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার থাকবে। এবারও পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। যদি বিশেষ কোনো কারণে কারও দেরি হয় সেই ক্ষেত্রে দেরির কারণ ও পরীক্ষার্থীর নাম ঠিকানা লিখে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে।


তিনি বলেন, প্রশ্নফাঁস রোধে আরেকটি পক্ষেপ হচ্ছে মোবাইল ফোনের ব্যবহার সীমিত করা। কেবল কেন্দ্র সচিব ক্যামেরাবিহীন ও ইন্টারনেট সংযোগ পায় না এমন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া পরীক্ষা ও প্রশ্ন বহনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ কোনো মোবাইল ফোনই ব্যবহার করতে পারবেন না। পরীক্ষার কাজে জড়িত নন এমন কেউ কেন্দ্রে যেতে পারবেন না। এসব নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের দায়ে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি পেতে হবে। আমরা প্রত্যাশা করব, সংশ্লিষ্ট সবাই সুষ্ঠু পরীক্ষা গ্রহণে সহায়তা করবেন।


ডা. দীপু মনি বলেন, নানা পদক্ষেপ নেয়ার ফলে ২০১৮ সালে প্রশ্নফাঁসের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ কারণে ২০১৮ সালে নেয়া পদক্ষেপগুলো এবারও অব্যাহত থাকবে। এর পাশাপাশি আমরা নতুন আরও কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি।


তিনি বলেন, কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা কার্যকর করা হবে। প্রশ্নফাঁসের চেয়ে অতীতে গুজবই ছিল বেশি। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে গুজব ছড়ানো হয়েছে। গুজব রোধে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে গঠিত গুজব প্রতিরোধ কমিটি পরীক্ষার ক্ষেত্রেও কাজ করবে। প্রশ্নফাঁসকারী ও গুজবকারীদের পাকড়াও করা হবে। এসব বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার তীব্র নজরদারি অব্যাহত আছে।


শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জঙ্গি দমনে সরকার সফল হয়েছে। সফলতার সঙ্গে এগিয়ে চলছে মাদকবিরোধী অভিযান। প্রশ্নফাঁস বন্ধের এই লড়াইয়েও সরকার সফল হবে। আশা করছি, কেউ ফাঁস দূরের কথা, গুজব রটানোর অপচেষ্টাও করবেন না। কেননা, সরকার কঠোর অবস্থানে থাকবে।


এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়াউল হক বলেন, একটানা দুবছর একই কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর কেন্দ্র এবার পরিবর্তনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।


বৈঠক ও সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, বোর্ড এবং পুলিশ বিভাগ ও বিটিআরসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/রোকন/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com