শিরোনাম
‘প্রতিবন্ধীদের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন হচ্ছে’
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:৫৮
‘প্রতিবন্ধীদের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন হচ্ছে’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোটা পদ্ধতি বাতিল হলেও প্রতিবন্ধীদের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।


তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে নতুন নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে।


প্রতিবন্ধীদের যাতায়াত সহজ করতে ভবিষ্যতে সব ধরনের স্থাপনা প্রতিবন্ধীদের যাতায়াতবান্ধব করে গড়ে তোলার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন,প্রতিবন্ধীরা যাতে সহজে যাতায়াত করতে পারে সে জন্য সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া সব স্থাপনায় তাদের উপযোগী টয়লেটসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে।


আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।


প্রতিবন্ধীদের ভেতরের শক্তি ও মেধাকে কাজে লাগানোর আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অবহেলিত জনগোষ্ঠী হিসেবে প্রতিবন্ধীদের মানুষ হিসেবে গণ্য করা হতো না। আমরা যেন তাদের অবহেলা না করি, মানুষ হিসেবে তাদের যে অধিকার তা যেন দিতে পারি।প্রতিবন্ধীদের ভেতর যে শক্তি আছে, যে মেধা আছে তা যেন ব্যবহার করতে পারি। তাদের অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই।


তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ১৬ লাখের বেশি প্রতিবন্ধীকে বর্তমানে ভাতা দেয়া হচ্ছে। শিগগিরই মোবাইলফোনের মাধ্যমে তাদের এই ভাতা পৌঁছে দেয়ার সহজ ব্যবস্থা করা হবে।


তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে সরকার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মোবাইল ভ্যানের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে প্রতিবন্ধী বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ওইসব এলাকার প্রতিবন্ধীদের সার্বিক সহায়তা দেয়ার বিষয়েও কাজ চলছে।


এ সময় দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মেধা ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রতিবন্ধীদের খেলাধুলাসহ অন্যান্য সৃজনশীল কাজে উৎসাহ প্রদানে ও সহায়তা করতে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে আন্তরিক প্রয়াস চালানোর আহবান জানান।


তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের আমরা যেন অবহেলা না করি সমাজ উন্নয়নে তাদের কাছে পায় সেই ভাবে তাদের গড়ে তুলতে হবে। মানুষ হিসেবে তাদের যে অধিকার আছে। সব অধিকার নিশ্চিত করতে পারি সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে পারি।


তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীরা এখন লেখাপড়া করছে, খেলাধুলার মাধ্যমে স্বর্ণ জয় করে তারা দেশের সুনাম বয়ে নিয়ে আসছে। সুতরাং এখন আর তারা অবহেলার পাত্র নয়।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের একজন প্রতিবন্ধী বোন যার হাত নেই, তিনি পা দিয়ে চমৎকার একটি নৌকা বানিয়ে আমাকে উপহার দিয়েছেন। এটা তার প্রতিভার স্বাক্ষর। তাকে ভালভাবে প্রশিক্ষণ দিলে সে সমাজের আর দশজন মানুষের মতোই কাজ করতে পারবে।


ভবিষ্যতের প্রতিটি পরিকল্পনায় যাতে প্রতিবন্ধীরা থাকতে পারে সে জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান তিনি।


তিনি আরো বলেন, প্রতিবন্ধীদের আঁকা ছবি দিয়ে আমি ঈদ কার্ড তৈরি করি এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই কার্ড বিতরণ করি। যারা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তাদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে বই তৈরি করেছি এতে তারা উপকৃত হচ্ছেন। তারা পড়াশোনা করতে পারছেন। যারা প্রতিবন্ধীদের দেখাশোনা করেন তারা যাতে আরো ভালো ট্রেনিংও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ পান সে ব্যবস্থা আমরা করছি।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধী সম্পর্কে আরো যাতে সচেতনতা সৃষ্টি হয় সে ব্যবস্থাও আমরা করেছি। আমরা প্রতিবন্ধীদের ভাতা দিচ্ছি, তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা নিচ্ছি, ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করছি। প্রতিবন্ধীরা যাতে অবহেলিত না থাকে সেজন্য তাদের প্রতি সরকার আলাদা দৃষ্টি দিয়েছে। প্রতিবন্ধীদের সাথে ভালো আচরণ করা এবং সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করার জন্য সমাজের বিত্তবানসহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।


আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে প্রতিবন্ধী শিশুরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দর্শক সারিতে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।


অনুষ্ঠানে সফল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেননসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com