শিরোনাম
আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে: সিইসি
প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০১৮, ১৩:২৫
আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে: সিইসি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা বলেছেন, একাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের পর থেকে পুলিশের সঙ্গে মাঠে থাকবে সশস্ত্র বাহিনীর একটি ছোট টিম।


পুলিশকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তথ্য সংগ্রহের নির্দেশনা আমরা দেইনি। এটা আপনারা করবেন না। কারণ এটা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। এতে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তারা বিব্রত হন। আমরা এটা চাই না। তাদের হয়রানি করবেন না।


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা-বিষয়ক বিশেষ সভায় বৃহস্পতিবার সিইসি এসব কথা বলেন। সভায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ১২ দফা নির্দেশনা দেন সিইসি।


সিইসি বলেন, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর একটি ছোট টিম আপনাদের সঙ্গে দেখা করবে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে প্রতি জেলায় সশস্ত্র বাহিনীর ছোট টিম থাকবে, তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন। তাদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করে রাখতে হবে। অন্যান্য বাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেটকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন।


ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তথ্য সংগ্রহ করার বিষয়ে তিনি বলেন, অধিকাংশ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা এর আগেও ভোটগ্রহণে কাজ করেছেন। যে কারণে তাদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের কিছু নেই। তবে নতুন কোনো ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার তথ্য যদি সংগ্রহ করার প্রয়োজন হয় তাহলে গোপন সূত্র বা সোর্স ব্যবহার করে সংগ্রহ করতে পারেন। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করার দরকার নেই। এটা আমরা চাই না।


আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে তিনি আরো বলেন, তফসিল ঘোষণার পর কাউকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করবেন না, মামলা করবেন না। কাউকে হয়রানিমূলক মামলা বা গ্রেফতার করা যাবে না। আশা করি, আপনারা এটা করছেনও না।


তিনি বলেন, প্রত্যেক দলের চিহ্নিত সন্ত্রাসী-মাস্তান, সে যে দলের হোক না কেন, তাদের রাজনৈতিক পরিচয় যা-ই থাক না কেন, সেটি কোনো ব্যাপার নয়। যদি এমন থেকে থাকে, তবে তাদের আলাদাভাবে চিহ্নিত করবেন। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকলে মামলা নেয়ার দরকার নেই, তাদের পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। যেন তারা কোনো রকম সংগঠিত হতে না পারে, নির্বাচন ভণ্ডুল করতে যাতে তারা কোনো প্রস্তুতি নিতে না পারে।



অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে সিইসি বলেন, আপনাদের কারণে যেন নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখবেন। এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সব দল অংশ নেবে।


তিনি বলেন, নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি একা করা সম্ভব নয়। প্রজাতন্ত্রের সকলে মিলেই নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কাজ করবো। নির্বাচনের সিংহভাগ দায়িত্ব থাকে পুলিশের। ভোটারের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সব ধরনের নিরাপত্তার দায়িত্ব আপনাদের ওপরই।


সিইসি বলেন, আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে। তবে নির্বাচন কমিশন তা নজরদারি করবে। ইতিমধ্যেই অভিযোগ আসা শুরু করেছে। তবে নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ভালোভাবে যাচাই না করে কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।


তিনি আরো বলেন, নির্বাচন পরর্বতী সহিংসতা রোধ করাও আপনাদের দায়িত্ব। ঐতিহ্যগতভাবেই এই দায়িত্বও আপনাদের। এবারও দেশের বৃহত্তম স্বার্থে আপনারা দায়িত্ব পালন করবেন।


নুরুল হুদা বলেন, সংবিধান মতে- কর্তৃত্ব নয়, বিবেক মতো কাজ করতে হবে। প্রজাতন্ত্রের সকলে নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করবে। আমরা কারও ওপর কর্তৃত্ব করবো না। নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তার বিষয়ে সংবিধানে যেমন বলা আছে।


তিনি বলেন, এছাড়া আইনশৃঙ্খলার বিভিন্ন পর্যায়ের তথ্য একমাত্র পুলিশেরই আছে। তাই বিভিন্ন বাহিনী পুলিশের কাছ থেকেই পরামর্শ নেবে। তাই পুলিশকে এখনই কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।


তিনি আরো বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, ভোটের পর যাতে তারা নিরাপদে চলে আসতে পারেন, তা দেখতে হবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা আমাদের সঙ্গে দেখা করে এটি বলেছেন।


বিরোধী দলের গ্রেফতার তালিকা বিষয়ে সিইসি বলেন, বিরোধী দলের রাজনীতিবিদরা আমাদের কাছে একটি তালিকা পাঠিয়েছেন। আমরা দেখেছি, যেমন মনে করেন, আমার কাছে প্রথম দিন তারা প্রায় চার-পাঁচ হাজার লোকের একটি তালিকা পাঠিয়েছেন। সেই মোকদ্দমাগুলো ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ ও ২০১৫ সালের, যা তফসিলের আগে।


তিনি বলেন, আর এবারের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে করা মামলার পূর্ণাঙ্গ তথ্য বিএনপির পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি। তাই ব্যবস্থা নিতে পারছি না।


সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, অতিরিক্ত সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, আইজিপি, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক, ডিএমপি কমিশনারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/জাকিয়া


>>পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইসির বৈঠক

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com