শিরোনাম
নদীর সীমানা জটিলতা নিরসনে কমিটি
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:৪০
নদীর সীমানা জটিলতা নিরসনে কমিটি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

নদীর সীমানা জটিলতা নিরসনে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানকে আহবায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি আগামী তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবে।


এছাড়াও নদীর তীর দখলমুক্ত ও নদী দূষণ প্রতিরোধ আরো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।


বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘চট্টগ্রামের কর্ণফুলি নদীসহ রাজধানী ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধি’ সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের ৩৮তম সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। নৌপরিবহন মন্ত্রী ও টাস্কফোর্সের সভাপতি শাজাহান খান এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।


এ সভায় জানানো হয়, নদীর সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে নতুন করে ১০ হাজার ৪শ’ সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে। এসব পিলার বড় ও দৃশ্যমান করে নির্মাণ করা হবে। বিআইডব্লিউটিএ নতুন করে ১৯টি আরসিসি জেটিও নির্মাণ করবে।


সভায় বলা হয়, ঢাকার চারপাশে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং উচ্ছেদকৃত জায়গা যাতে পুনঃরায় দখল হয়ে না যায় সেজন্য উল্লেখিত নদীগুলোর উভয় পাশে ২২০ কিলোমিটার ‘ওয়াকওয়ে’ নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে ২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মিত হয়েছে।


এছাড়াও আগামী ৫ অক্টোবর থেকে আশুলিয়াতে ৫০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। বাকি ১৫০ কিলোমিটার ‘ওয়াকওয়ে’ নির্মাণ কাজের প্রকল্প গ্রহণের স্টাডি চলমান রয়েছে। নদী তীরে বনায়ন ও সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকার শ্যামপুর ও নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে দু’টি ইকোপার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। আশুলিয়া, সিন্নিরটেক ও টঙ্গিতে আরো ৩টি ইকোপার্ক নির্মাণ করা হবে বলেও এ সভায় জানানো হয়।


সভায় অপর এক সিদ্ধান্তে বলা হয়, গাজীপুর মহানগর ও নরসিংদীতে নতুন করে আর শিল্প,কল-কারখানা গড়ার অনুমতি দেয়া যাবে না। নতুন শিল্প কল-কারখানা অর্থনৈতিক জোন এলাকায় গড়তে হবে। স্লোব করে নদী তীর বা খাল পাড় বাঁধাই করা যাবে না। খাড়া (সোজাসুজি) করে তীর বাঁধাই করতে হবে যাতে সেগুলো দখল হতে না পারে। প্রয়োজনে ওয়াকওয়ের সাথে ড্রাইভওয়ে নির্মাণ করতে হবে।


সভায় আরো জানানো হয় যে, নদীর তীরের সীমানা চিহ্নিত করার লক্ষ্যে ৯,৫৭৭টি সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩,৮৫৬ টি পিলার নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বিতর্কিত ১,৭৫১টি পিলারের নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আগামী দু’মাসের মধ্যে বিতর্কিত ২,১০৫টি পিলারের নিষ্পত্তি করা হবে।


নতুন করে ১০,৪০০ সভায় জানানো হয়, বিআইডব্লিউটিএ নদী তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৫০১ দশমিক ২৬ একর জমি উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে ঢাকার চারপাশে ৩০৭ দশমিক ২৬ একর এবং নারায়ণগঞ্জে ১৯৪ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৯ হাজার ৭৩০ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এরমধ্যে ঢাকায় ৬ হাজার ৯৫১ টি এবং নারায়ণগঞ্জে ২ হাজার ৭৭৯টি উচ্ছেদ করা হয়েছে।


সভায় জানানো হয় যে, ঢাকা শহরের ৪৬টি খালের মধ্যে ২৬টি খাল উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি খালের সংস্কার কাজ চলছে। নতুন করে খাল যাতে দখল হয়ে না যায় সেজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। সাভারস্থ ট্যানারি শিল্প এলাকায় কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধানাগার স্থাপন যথাযথ হয়নি। এ বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


এ সভায় বলা হয়, পরিবেশ অধিদপ্তর মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্প কারখানা থেকে ১৫৪ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করেছে। নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ এলাকায় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে সিমেন্ট কারখানা স্থাপন করায় নদী তীর যাতে দখল ও দূষণ না হয় সেজন্য উক্ত এলাকার শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সঙ্গে সভা করার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়।


এছাড়াও নদী তীর দখল ও দূষণরোধে জেলা-প্রশাসকদের নিয়মিত মনিটরিং ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সমাবেশ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়।


অন্যান্যের মধ্যে ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহাদৎ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কর্মকর্তাগণ এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/রোকন/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com