শিরোনাম
ফাঁকা রাজধানীতে অজানা ‘আতঙ্ক’, সতর্ক পুলিশ
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০১৮, ১৬:১৭
ফাঁকা রাজধানীতে অজানা ‘আতঙ্ক’, সতর্ক পুলিশ
খলিলুর রহমান
প্রিন্ট অ-অ+

ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরেছেন ঢাকাবাসী। মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকার রাজপথ প্রায় ফাঁকা। যানবাহনের সংখ্যা কম, যা আছে তাতেও যাত্রী নেই বললেই চলে। মার্কেটগুলোতে ব্যবসায়ীরা অলস সময় পার করছেন। রাস্তায় সাধারণ জনতার নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। তারা নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। এটাই এখন রাজধানীর চিত্র।


ঈদ উল আযহা উপলক্ষে মঙ্গলবার থেকে ছুটি শুরু হয়েছে। তাই সকাল থেকে নগরী ছেড়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন অনেকেই। গ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। তাই যানজট আর জনজটের নগরী এখন অনেকটাই ফাঁকা। পথে পথে নেই চিরচেনা দুর্ভোগ, নেই পথচারীদের ভিড়ও। নেই কোলাহল, চোখে পড়ে না কোনো হৈ হুল্লোড়।


মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সেই চিরচেনা যানজটও নেই। কমে গেছে নাগরিক কোলাহল। নগরী ফাঁকা হয়ে গেছে। রাস্তায় গাড়ি চলাচল করেছে খুব কম। মার্কেট ও বিপণি বিতানগুলো খোলা থাকলেও ক্রেতাদের আনাগোনা কম। সর্বত্রই নীরবতা। আর যারা রাজধানীতে রয়েছে, তাদের মধ্যে অজানা আতঙ্ক।


বরিশালের বাসিন্দা তুহিন আহমেদ। তিনি পশ্চিম তেজতুরী বাজারের একটি বাসার কেয়ারটেকারের দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বিবার্তাকে জানান, তার ফ্ল্যাটে অনেকেই বাড়ি গেছেন। আবার অনেকেই বাড়ি যাননি। তবে যারা রয়েছেন তারা বাসা থেকে বের হচ্ছে না। তাদের মধ্যে একটা চাপা আতঙ্ক রয়েছে বলেও জানান তিনি।


তিনি জানান, ঈদ এলে নগরীতে নীরবতা নামে। তাই অনেকেই ভয় পায়। তবে তাদের নিরাপত্তা জন্য মালিকের পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও যারা বাড়ি গেছেন তাদের বাসার জন্য বাড়তি নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে।


এদিকে, ঈদের ছুটিতে নগরী ফাঁকা হওয়ার সুযোগে যেকোনো সময় বড় ধরনের চুরি-ছিনতাই-ডাকাতির মতো ঘটনার শঙ্কায় পুলিশ। পুলিশ প্রশাসন মনে করছে- ফাঁকা নগরীতে ‘ঝোঁপ বুঝে কোঁপ মারতে পারে’ কোনোও অপরাধী চক্র। ঘটতে পারে চুরি-ছিনতাই-ডাকাতির মতো যেকোনো ঘটনাও। বিশেষ করে যারা বাসা-ভাড়ি তালা মেরে নগরী ছেড়েছেন, তাদের ফাঁকা বাসা-ভাড়ি নিয়েই বেশি চিন্তিত পুলিশ প্রশাসন। তাছাড়া নীরব-ফাঁকা রাস্তায় ছিনতাইকারীদের উপদ্রবও বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন তারা। আর সেজন্যই এসব নিয়ে বাড়তি চিন্তা করতে হচ্ছে তাদেরকে। তবে যেকোনো ধরনের অরাজক পরিস্থিতি এড়াতে সতর্কবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।


ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে রাজধানীকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সম্মানিত নগরবাসীকে সাথে নিয়ে সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদ-উল-আযহা ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে এবং আনন্দ উৎসবের মধ্যদিয়ে পরিপূর্ণ নিরাপত্তায় ঈদের সব কার্যক্রম সমাপ্ত করার জন্য সর্বোচ্চ এবং সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।


নগরবাসীকে আশ্বস্ত করে কমিশনার বলেন, ঈদের দিন এবং ঈদের পরের দিনগুলোতে যাতে কোনো ধরনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয় এবং নগরবাসী যাতে মন খুলে, আনন্দের সাথে ঈদুল আযহা পালন করতে পারে সেজন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষদের সাথে নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।


তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীতে গরুরহাট, বিপণীবিতান, বাস টার্মিনাল, লঞ্চ টার্মিনাল কেন্দ্রিক কোনো অপরাধ সংঘটনের তথ্য আমরা পাইনি। কোনো ধরনের চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে অচেতন হওয়ার কোনো খবর আমাদের কাছে আসেনি। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ঈদুল আযহার নিরাপত্তা পরিস্থিতি অত্যন্ত সন্তোষজনক আছে।


তিনি আরো বলেন, ঢাকা মহানগরীর প্রত্যেকটি পশু হাটে অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুম আছে। এসব পুলিশ কন্ট্রোল রুমে অজ্ঞান পার্টির হাত থেকে বাঁচতে জনসাধারণকে সচেতন করা, জাল টাকা শনাক্তকরণ ও মানি এস্কর্ট সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। এছাড়াও চোর, ডাকাত, অজ্ঞান পার্টি ধরার জন্য সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।


বিবার্তা/খলিল/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com