শিরোনাম
‘শিশুরা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে’
প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০১৮, ১৬:৪০
‘শিশুরা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, শিশুদের থেকে অনেক সময় শিক্ষা নিতে হয়। সড়কে নিরাপত্তা চেয়ে শিক্ষার্থীরা যে দাবিগুলো উপস্থাপন করেছে, তা যৌক্তিক ও যুগোপযোগী। শিক্ষার্থীরা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, সড়ক নিরাপত্তায় আমাদের কী করা উচিত। আমরা তাদের দাবি বাস্তবায়নে কাজ করছি। তাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করছি।


আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেছেন।


মনিরুল ইসলাম বলেন, আজ পঞ্চম দিনেও পুলিশ ছাত্রদের ওপর লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস কিংবা গ্রেফতার- কোনো ধরনের অ্যাকশনে যায়নি। পুলিশ চেষ্টা করছে, তাদের সঙ্গে সমঝোতা করতে, বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে।


সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে সব দাবি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। কিন্তু যেগুলো দ্রুত করা সম্ভব, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।


সিটিটিসিপ্রধান আরো বলেন, বেপরোয়া, ফিটনেসবিহীন ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ি সড়কে নামবে বলে আমাদের নিশ্চিত করেছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা।


মনিরুল ইসলাম বলেন,‘নিহত পরিবারের প্রতি আমি সমবেদনা জানাই। আমরা তাদের সন্তান ফিরিয়ে দিতে পারব না, তবে সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার অনুরোধ, তারা যেন ঘরে ফিরে যায়। অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি আমি একই অনুরোধ জানাচ্ছি।’


তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নেয়ার বিষয়ে সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনার পর পুলিশের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করা হয়েছে। বিআরটিএ ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করছে। তবে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে লাইসেন্স পরীক্ষার কারণে গাড়ির দীর্ঘ জটলা সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে মুমূর্ষু রোগী, হজযাত্রী, বিদেশগামীদের ভোগান্তি হচ্ছে। তাই তাদেরকে অনুরোধ করে বলব, আপনারা চলে যান।’


কোনো ধরনের উস্কানিতে কান না দিতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে এক পুলিশ সদস্যকে এক ছাত্রের গলা চেপে ধরতে দেখা গেছে। কিন্তু ছবিটি ২০১৩ সালের আর এ ঘটনায় এএসআই পলাশ চন্দ্র শাস্তির মুখোমুখি হয়েছিলেন। আরেকটি ছবিতে এক ছাত্রীকে পুলিশের লাঠিচার্জ করতে দেখা গেছে, সেই ছবিটিও ২০১২ সালের। এ থেকে প্রমাণিত হয়, কেউ আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে ছাত্রদের উস্কানি দিচ্ছে। সেসব স্বার্থান্বেষীরা এ পর্যন্ত তিনশো গাড়ি ভাংচুর করেছে, যার মধ্যে পুলিশের ৫টি পিকআপ ভ্যানও রয়েছে। এ পর্যন্ত ৮টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।’


যারা উস্কানি দিয়ে এ ধরনের কাজ করছে, তাদেরকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।


আন্দোলনরত শিশুদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘ডিএমপি ও পুলিশ কথা দিচ্ছে- আপনাদের দাবি বাস্তবায়ন হবে। আপনারা কোনো কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। যারা এই সুযোগে ছাত্রদের বিভ্রান্ত করছে, তাদেরও শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।’


গত মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) শিশুদের ওপর লাঠিচার্জ করার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘যদি কোনো পুলিশ সদস্য আইনের বাইরে গিয়ে কোনো কাজ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ আন্দোলনে শিশুদের কথা মাথায় রেখে পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করেনি। ছাত্রদের বিষয়টি পুলিশ মানবিকভাবেই দেখেছে।’


ছাত্রদের লাইসেন্স পরীক্ষার সময় অনেক পুলিশের গাড়িচালকের লাইসেন্স পাওয়া যায়নি, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের সকল ড্রাইভারেরই লাইসেন্স রয়েছে। অনেক সময় সঙ্গে নিয়ে যান না কিংবা অনেক সময় এমটি (মোটর ট্রান্সপোর্ট) বিভাগে তাদের লাইসেন্স জমা রাখেন। তাই হয়তো অনেক ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে তারা লাইসেন্স দেখাতে পারেননি।’


বিবার্তা/খলিল/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com