শিরোনাম
রাখাইনে এখনো নৃশংসতা চলছে: লি
প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০১৮, ০৯:৪৯
রাখাইনে এখনো নৃশংসতা চলছে: লি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াংহি লি বলেছেন, মিয়ানমার সরকার রাখাইন রাজ্যে এখনো অত্যাচার-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমার যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু দেশটির সরকার অনুমতি দেয়নি।


এছাড়া এখনো সেখানে নৃশংসতা চলায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আলোচনা ‘একেবারেই সময়োচিত’ নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন শেষে রবিবার রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে ইয়াংহি লি এসব কথা বলেন।


লি বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গাদের জন্য তিনটি বিষয় জরুরি। এগুলো হল- প্রাথমিক শিক্ষা, জীবিকা নির্বাহের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে দেশে ফেরত পাঠানো।


রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক জাতিসংঘের সংস্থাগুলো গোপন করছে বলে জাতিসংঘের এই বিশেষ দূত অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, সমঝোতা স্মারক সইয়ের খবর পেয়ে তার একটি অনুলিপি চেয়ে তিনি জেনেভায় মিয়ানমারের স্থায়ী মিশনের মাধ্যমে দেশটির সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তারা তা দেয়নি।


বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ তৈরিতে সহায়তার লক্ষ্যে গত মাসে দেশটির সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করে জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা-ইউএনডিপি ও শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা-ইউএনএইচসিআর।


এ বিষয়ে লি বলেন, তারা আমাকে কোনো অনুলিপি দেয়নি। বদলে একটি জাতিসংঘ সংস্থার তৈরি করা সারমর্ম তারা আমাকে দিয়েছে। গত তিন সপ্তাহ ধরে আমি ব্যক্তিগতভাবে জাতিসংঘের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছি। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েও সমঝোতা স্মারকের অনুলিপি আমাকে দেননি।


লি গত এক সপ্তাহব্যাপী বাংলাদেশে সফরে আছেন। এ সময়ে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনসহ বাংলাদেশের সরকারের বিভিন্ন প্রতিনিধি, দাতা সংস্থা এবং এনজিওদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। রোহিঙ্গাদের শরণার্থীর স্বীকৃতি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।


ইয়াংহি লি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে গঠিত জেআরপি থেকে মাত্র ২৬ শতাংশ তহবিল এসেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মনে রাখা উচিত, কক্সবাজারের স্থানীয়রা তাদের সীমিত সম্পদ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে শেয়ার করছেন। তাই দাতাদের দ্রুত অর্থ ছাড় দেয়া উচিত।


তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার শুরু থেকে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করে আসছে। এখনও সেটি অব্যাহত রেখেছে। এক্ষেত্রে তারা মানবাধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সব ধরনের আইন লঙ্ঘন করে আসছে। সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে এসেছে এমন কয়েকজন রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেছি।


লি বলেন, তারা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের গ্রামে ঢুকে তাদের ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড গ্রহণ করতে বলে, অন্যথায় দেশ থেকে চলে যেতে হবে বলে জানায়।


তিনি বলেন, আমি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আগামী অক্টোবরে জাতিসংঘে জমা দেব। মিয়ানমারের পরিস্থিতিও দেখতে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মিয়ানমার সরকার অনুমতি দেয়নি। গত বছর অগাস্টে রাখাইনে সহিংসতা শুরুর পর মিয়ানমারে লির প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটির সরকার। ভারতে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখতেও তিনি ভারত যেতে চেয়েছিলেন। ভারতও কোনো সাড়া দেয়নি।


তিনি বলেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসান চরে আবাসস্থল নির্মাণ করেছে। তিনি সেখানে যাওয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করলেও বর্ষার কারণে সরকার সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি।


মিয়ানমারের ওপর চাপ দিতে চীনকে অনুরোধ করা হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে লি বলেন, মিয়ানমার একটি স্বাধীন দেশ। তারা চীনের কথায় চলে না। তবে বিশ্ব নেতৃত্ব দেশ হিসেবে চাইলে চীন ভূমিকা রাখতে পারে।


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com