শিরোনাম
ভুল চিকিৎসার প্রতিকারহীন অভিযোগ
প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০১৮, ১৬:৪৫
ভুল চিকিৎসার প্রতিকারহীন অভিযোগ
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সম্প্রতি রাইফা নামের একটি শিশুর মৃত্যুর পর চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার অভিযোগ এনেছেন তার অভিভাবকরা।


বাংলাদেশে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ বিভিন্ন সময়ই উঠেছে। প্রশ্ন হলো, এসব ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী রোগী বা তাদের পরিবার কতটা প্রতিকার পায়?


সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনো প্রতিকার হয় না। কারণ, চিকিৎসা ভুল না সঠিক - সেটি অনেক সময় আদালতে প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।


তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিকার পেতে হলে আগে আদালতে প্রমাণ করতে হবে যে এই চিকিৎসাটি ভুল ছিল, অন্যভাবে করলে ঠিক হতো। কিন্তু বাংলাদেশে একজন চিকিৎসক আরেকজনের বিরুদ্ধে সেই সাক্ষ্য দিতে চান না।’


জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, প্রচলিত ব্যবস্থায় কেউ এ ধরনের ঘটনার শিকার হলে বাংলাদেশের চিকিৎসা ও দন্ত পরিষদে (বিএমডিসি) অভিযোগ জানাতে পারেন। তারা তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সনদ স্থগিত বা বাতিল করতে পারেন। কিন্তু সমস্যা হলো, সেখানেও বড় ধরনের অবহেলার বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার করা হয়নি। আবার চিকিৎসকদের নানা সংগঠন শক্তিশালী হওয়ায় কোনো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বড় ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয় না।


বাংলাদেশের চিকিৎসকদের সনদ প্রদান ও তত্ত্বাবধানের গভর্নিং বডি বাংলাদেশ চিকিৎসা ও দন্ত চিকিৎসা পরিষদ (বিএমডিসি)। সংস্থাটি বলছে, অভিযোগ পাওয়ার পর তারা বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের সনদ বাতিল বা স্থগিত করেছে। তবে শুধু লিখিত অভিযোগ পেলেই তারা ব্যবস্থা নিতে পারে, অন্যথায় কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে না।


বিএমডিসির রেজিস্টার ড. এম জাহেদুল হক বসুনিয়া বলেন, ‘আমাদের পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। কোনো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আমরা সেই কমিটিতে পাঠিয়ে দেই। তারা সেটি তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া বা না নেয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করেন।’


উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের একজন অধ্যাপক ও শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজের একজন সহযোগী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে চিকিৎসা সংক্রান্ত অবহেলার অভিযোগ এই কমিটিতে প্রমাণিত হলে তাদের রেজিস্ট্রেশন তিন থেকে ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। যদিও চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগের তুলনায় এ ধরনের উদাহরণ খুবই কম।


ড. বসুনিয়া বলছেন, ‘গণমাধ্যম বা অন্য কোনো মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সরাসরি ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ বিএমডিসির নেই। শুধু লিখিত ও বিস্তারিত অভিযোগ পেলেই আমরা সেটি তদন্ত করতে পারি।’


সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এর আগেও নানা ঘটনায় কমিটি হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে প্রতিবেদনও জমা হয়েছে। কিন্তু বড় কোনো শাস্তির উদাহরণ তৈরি হয়নি। ফলে ভুল চিকিৎসা বা অবহেলার অভিযোগ ওঠাও বন্ধ হয়নি। সূত্র : বিবিসি


বিবার্তা/হুমায়ুন/সোহান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com