বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিয়াজ ইরফান কি আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে কেউ হত্যা করার পর লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চলিয়ে দিচ্ছে, এমন প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ দিয়াজের পরিবার ও ছাত্রলীগের মাঝে।
দিয়াজ ইরফানের পরিবার ও ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী দাবি করছেন, দিয়াজ ইরফানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা করে তার লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে।
এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড এই বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা মুঠোফোনে জানান, লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। রিপোর্ট হাতে আসলে বিস্তারিত জানা যাবে।
দিয়াজ ইরফানের মা জোবায়দা আমিন চৌধুরীর অভিযোগ, দিয়াজকে হত্যা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তিনি সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছেলে লাশের পাশে কান্নারত অবস্থায় সাংবাদিকদের জানান, টেন্ডারের টাকার জন্য সহকারী প্রক্টর আনোয়ার আমার বুকের মানিককে কেড়ে নিলো। তার টাকার প্রয়োজন হলে সে আমাকে বলতো। আমার ঘরে যখন ভাঙচুর হয়েছে তখন হাটহাজারী থানা পুলিশের ওসি বেলাল মামলা নেয়নি। সবাই মিলে আমার দিয়াজকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
এদিকে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা দাবি করে বলেন, দিয়াজ ইরফান ভাইয়ের লাশ উদ্ধারের সময় যে ছবিটি প্রকাশ হয় তা দেখেই বুঝা যায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। ছবিতে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় তাকে হত্যা করে ঝোলানো হয়েছে। কেননা খাটের সাথে তার পা লাগানো ছিল ঝুলন্ত অবস্থায়ও।
রবিবার রাতে দিয়াজ ইরফানের মরদেহ উদ্ধারের পর হাটহাজারী উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফসানা বিলকিস সাংবাদিকদের জানান, দিয়াজ ইরফানের শরীরের গলার উভয় পাশে আঁচড়ের চিহ্ন রয়েছে এবং হাতের কবজি ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে এ তিন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন থাকলেও ময়নাতদন্তের আগে নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না এগুলো কি আসলেই আঘাতের চিহ্ন কিনা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফসানা বিলকিসের সঙ্গে উপস্থিত থাকা চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা সংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়ার পর বলতে পারবো দিয়াজের মৃত্যু হয়েছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে। ভিসেরা রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানাতে পারবো।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবির) ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শোভন দাস জানান, বাসায় ভাঙচুরের পরদিন দিয়াজ ভাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তবে এ জন্য দিয়াজ ভাই আত্মহত্যা করবে তা মেনে নিতে পারছি না। বরং তাকে কেউ হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছে। এর সঠিক তদন্ত করে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবির) ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে ৯৫ কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আলমগীর টিপুর সাথে নিহত দিয়াজ ইরফানের সাথে কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের জের ধরে গত ৩০ অক্টোবর দিয়াজ ইরফানের বাসায় ভাঙচুর ও লুটপাট হয়। ঘটনার দিন হাটহাজারী থানায় দিয়াজ ইরফানের মা মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। যদিও ঘটনার চারদিন পর পুলিশ একটি চুরির মামলা নেয়।
বিবার্তা/রাজু/জিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]