শিরোনাম
মঙ্গল শোভাযাত্রায় মানুষের ঢল
প্রকাশ : ১৪ এপ্রিল ২০১৮, ০৯:৫৫
মঙ্গল শোভাযাত্রায় মানুষের ঢল
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বছর ঘুরে আবার ফিরে এলো বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরের প্রথম দিন নব উল্লাসে মেতে উঠেছে কোটি বাঙালির হৃদয়। প্রতিবছর এ দিনে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ। ব্যতিক্রম ঘটছে না এবারো।


শনিবার সকাল থেকে চারুকলা অনুষদের শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে জমায়েত হতে থাকে হাজারো মানুষ।এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ছিল - ‘মানুষ ভজলে, সোনার মানুষ পাবি।’



বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে উপস্থিতি। ৯টা বাজতেই শাহবাগ থেকে টিএসসি এলাকা বৈশাখের রঙে রঙিন মানুষের পদভারে ভরে ওঠে। ৯টার একটু পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে চারুকলা থেকে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।



এ সময় শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রমুখ শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


মঙ্গল শোভাযাত্রায় ঢাবি শিক্ষার্থীরাসহ ঢাকা শহরের হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করছে।শোভাযাত্রার দুপাশে নিরাপত্তার জন্য ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। পেছনে র‍্যাব সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া প্রহরায় এবারের শোভাযাত্রা হয়। চারুকলা থেকে শুরু হয়ে এটি শাহবাগ ঘুরে টিএসসি পর্যন্ত গেছে। এরপর আবার চারুকলায় এসে শেষ হয়।


নানা রঙ্গের মুখোশ, ঢাক-ঢোল, কোলা ইত্যাদি নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন তারা। পুরুষরা পাঞ্জাবি, ধুতি, লুঙ্গি, গামছাসহ পোশাকে আর নারীরা বৈশাখী শাড়ি পরিধান করে বাঙালি সংস্কৃতির ছোঁয়াকে ধারণ করেছিলেন। শোভাযাত্রায় ছোট ছোট বাচ্চাদেরও ছিল উপচে পড়া ভিড়। মা-বাবার সঙ্গে তারা এসেছেন শোভাযাত্রায় অংশ নিতে। তাদের মুখে রংতুলি দিয়ে লেখা ছিল ‘শুভ নববর্ষ’।



এ আয়োজনে রয়েছে সর্বজনীন আর অসাম্প্রদায়িক আবহ। বর্ষবরণের এ উৎসবে যোগ দিয়েছেন দেশের বাইরের মানুষও। বিশেষ করে বিদেশি মিশন ও দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ ছাড়া বাংলাদেশে চাকরির সূত্রে অবস্থান করা বিদেশি নাগরিকরা ছুটে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গল শোভাযাত্রায়। বাঙালিয়ানার অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়েছেন বিদেশি নারীরা। আর বিদেশি পুরুষরাও পরেছেন লুঙ্গি, ধুতি, পাঞ্জাবি ও ফতুয়া। অনেকে মাথায় বেঁধেছেন গামছা।



কৃষিকাজ ও খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য বাংলা সন গণনার শুরু মোঘল সম্রাট আকবরের সময়ে। হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা সৌরসন ভিত্তি করে প্রবর্তন হয় নতুন এই বাংলা সন।


১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়।



মিরপুর থেকে আসা আরিফ ও রুমা দম্পতি তাদের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে এসেছেন মঙ্গল শোভাযাত্রায়। তাদের অনুভূতি জানতে চাইলে তারা বিবার্তাকে বলেন, আমরা ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী। প্রতিবছর পহেলা বৈশাখের দিন ঢাবির মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে চেষ্টা করি। এবারো আমাদের মেয়েকে নিয়ে এসেছি। অনেক ভালো লাগা কাজ করছে। এখানে এসে নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলোও দেখে যেতে পারবো।


এদিকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট আলাদা আলাদা উৎসব উদযাপন করছে। ঢাবি ক্যাম্পাস আজ যেন বৈশাখমুখর।


বিবার্তা/রাসেল/সোহান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com