শিরোনাম
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালো জাতীয় সংসদ
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০১৮, ০৬:৪২
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালো জাতীয় সংসদ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের প্রাথমিক স্বীকৃতিপত্র পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছে সংসদ। বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় পার্টির পিরোজপুরের সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী এই প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেন।


ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, ১৪ দলের শরিক জাসদ, তরীকত ফেডারেশন এবং বিএনএফ’র বেশ কয়েকজন সদস্য এই প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য রাখেন। ১৪ দলের নেতারা সবাই শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আনতে জনগণকে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। বলেন, নৌকা ছাড়া এই জাতির গতি নাই।


আর বক্তব্য উপস্থাপনের পর স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরী প্রস্তাবটি ভোটে দেন। এ সময় সব দলের সংসদ সদস্যরাই প্রস্তাবটিকে সমর্থন করেন। বিরুদ্ধে একটিও ভোট পড়েনি।


প্রস্তাবের পক্ষে দীর্ঘ বক্তব্যে ফরাজী বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকার ফলেই বাংলাদেশ এই অর্জন করতে পেরেছে।


পরে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার প্রাথমিক স্বীকৃতিপত্র পেলেও এটি পুরোপুরি পাওয়ার জন্য অগ্রগতি ধরে রাখতে হবে। আমরা সবাই মিলে এক থাকলে এটা সম্ভব।’


তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ১০টি বিশেষ উদ্যোগের জন্য শেখ হাসিনা সফল হয়েছেন। মেগা প্রকল্প, বিদ্যুৎ গ্যাসের ঘাটতি পূরণ, তথ্য প্রযুক্তি উন্নয়ন, কৃষিতে ভর্তুকি, গ্রামীণ অর্থনীতির বহুমূখীকরণ, চর, হাওর উপকূলীয় উন্নয়ন, শিল্পায়নে নতুন গতির সঞ্চারণ, সরাকরি বিনিয়োগে উৎসাহ দেয়া, আমদানি রপ্তানি বৃদ্ধি করাসহ নানা কারণে মানব উন্নয়ন সূচক বেড়েছে বাংলাদেশের।


জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘জাতিসংঘের প্রতিটি সদস্য বলেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের পথে আছে। এই ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য আবার শেখ হাসিনার সরকার। শতভাগ আলোকিত বাংলাদেশ গঠন করার জন্য আবার শেখ হাসিনার সরকার দরকার।’


তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে ২৪ ঘণ্টা প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছেন। একাদশতম সংসদ নির্বাচনে দেশের মানুষ দলমত নির্বিশেষে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে।’


আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘বিএনপির আমলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং ছিল, আজকে মানুষ লোডশেডিং ভুলে গেছে। আমাদের ১০টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এগুলোর কাজ শেষ হলে প্রবৃদ্ধি হবে ১০ শতাংশ।’


ক্ষমতাসীন দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘ভৌত অবকাঠামো, সামাজিক অবকাঠামোসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন বাংলাদেশ চিরদিন গরিব দেশ থাকবে। কেউ কেউ বলেছিলেন বাংলাদেশ টিকে থাকতে পারবে না। এখন বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ এসে বলেন, আমি বাংলাদেশে এসেছি উন্নয়নের কাহিনি শোনার জন্য।’


সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু বলেন, ‘শেখ হাসিনা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তার প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তার কারণে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। এই উন্নয়ন ধরে রাখার জন্য আমাদের যা যা প্রয়োজন করতে হবে।’


কুমিল্লা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আলী আশরাফ বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে পৃথিবীকে চমকে গিয়েছিল। আর উন্নয়নেরে জন্য শেখ হাসিনার দক্ষ এবং সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে প্রসার হচ্ছে, সেটা জাতির জন্য গর্বের।’


হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০ বছর আগে বাংলাদেশে পুরনো কাপড় আমদানি হতো। নিম্ন আয়ের এমনকি মধ্যবিত্তরাও এই কাপড় পরত। আর আজ আমাদের কাপড় বিশ্বের নামিদামি দোকানে পাওয়া যায়। এটাই বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ আরও বদলে যাবে যদি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকবে।’


আওয়ামী লীগের খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘রুস্তম আলী ফরাজী আওয়ামী লীগের কট্টর সমালোচক। তিনিও আজ বুঝেছেন, শেখ হাসিনার বিকল্প বাংলাদেশে নাই। বঙ্গবন্ধুর যারা সমালোচনা করেছেন, তারাও আজ বুঝতে পারছেন কী ভুল তারা করেছেন।’


যশোর-২ আসনের মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমাদেরকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। আজ আমরা উন্নয়নের দিক থেকে সব সূচকে পাকিস্তানের থেকে এগিয়ে। পাকিস্তান আমাদের দাবায়ে রাখতে পারেনি।’


জয়পুরহাটের সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘শেখ হাসিনার হাত দিয়ে কেবল উন্নয়নশীল দেশ নয়, তার হাতে বাংলাদেশ থাকলে একদিন উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করবেন। তিনি এর সব ভিত্তি রচনা করেছেন।’


জাসদের শিরীন আখতার বলেন, ‘আমি একজন সালেহাকে চিনি, কিছুই ছিল না। মানুষের বাড়িতে কাজ করত। গত নয় বছরে তার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হয়েছে, সে এখন ইউপি মেম্বার হয়েছে। এ রকম সালেহা একজন নয়, লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি সালেহা এখন বাংলাদেশে।’


‘আজকে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। শুধু বিদ্যুৎ নয়, সামাজিক নিরাপত্তা, গ্রামীণ অর্থনীতির বহুমুখীকরণ, শিল্পায়নসহ সব দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে বিস্ময়কর দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’


১৪ দলের শরিক তরীকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘আমাদের প্রতীক ফুলের মালা। কিন্তু নৌকায় না উঠলে আমাদের গতি নাই। তাই আমরা নৌকায় উঠেছি। নৌকা ছাড়া জাতির গতি নাই।’


কোটা আন্দোলনের কথা তুলে ধরে মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘এই আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য তারেক রহমান উস্কানি দিয়েছেন। যারা এই কাজ করেছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’


বিএনএফ’র এস এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এখন আমি বলি, এক নেতার এক দেশ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, এক নেতার এক দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।’


সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুণ, মৃণাল কান্তি, তাজুল ইসলাম, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সানজিদা খানম, ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পী, সাবিনা আক্তার তুহিন, আমাতুল্লাহ কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী প্রমুখ এই প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য রাখেন।


সংসদে প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বলেন, ‘ধন্যবাদের প্রয়োজন নেই। আমি মনে করি, এটি আমার দায়িত্ব–কর্তব্য। আমি ধন্যবাদ জানাই দেশের জনগণকে, যারা আমাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছেন। সরকার গঠন করার সুযোগ দিয়েছেন।’


বিবার্তা/হাসান/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com