শিরোনাম
‘জটিল রোগীদের সেবায় আরো সচেতন থাকতে হবে’
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০১৮, ১৩:০৬
‘জটিল রোগীদের সেবায় আরো সচেতন থাকতে হবে’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

জটিল রোগীদের সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আরোসর্তক হতে হবে বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রোগী বাঁচাতে চাইলে চিকিৎসা ভালোভাবে করতে হবে। আইসিওতে থাকা অবস্থায় সংকটাপন্ন রোগীদের ক্ষেত্রে দর্শনার্থীদের যাতায়াত বন্ধ করতে হবে।


রবিবার সকালে রাজিধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে বাংলাদেশ সোসাইটি অফ ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন এবং বাংলাদেশ সোসাইটি অফ ক্রিটিক্যাল কেয়ার নার্সিং-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এটা বড় অসুবিধা হলো ভিজিটরের সমস্যা। কোনো রোগী হাসপাতালে থাকলে ভিজিটর যেতেই হবে। না গেলে রোগীরও মন খারাপ হয়। কিন্তু যে রোগীর খুব ক্রিটিক্যাল অবস্থা, তার কাছেও কেন যেতে হবে?


‘আরেকটা বিষয় আমাদের মতো রাজনীতিকদের ক্ষেত্রে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ রোগী হলেই তাকে সবার দেখতে যেতে হবে। আর মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর তো যেতেই হবে। না গেলে প্রধানমন্ত্রীরও ইজ্জত থাকে না, রোগী আর রোগীর আত্মীয়-স্বজনেরও ইজ্জত থাকে না।’


এমনকি অপারেশন থিয়েটারেও মানুষ ক্যামেরা নিয়ে ঢুকে পড়ে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমি এখন ক্রিটিক্যাল রোগী দেখতে যাওয়া ছেড়েই দিয়েছি। এতে যেকোন সময় রোগীর ক্ষতি হতে পারে। বিদেশে তো যেতে দেয় না।


‘আইসিইউ’তে ঢোকা এখন ভাতমাছের মতো বলে উপহাস করেন প্রধানমন্ত্রী। অভিযোগ করেন, সেখানে রোগীর স্বজন, ভিজিটর সবাই ঢুকে বসে থাকে। আর রাজনৈতিক নেতাও মনে করেন, আমি না গেলে মনে হয় আমার দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করলাম না।’


প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এজন্য হাসপাতালে ভিজিটর’স কর্নার করে দেয়া যেতে পারে। সেখানে সবাই বসবেন, খাতায় সই করবেন। এছাড়া এখন ডিজিটাল সিস্টেম করা হয়েছে। এজন্য চাইলে রোগীকে মনিটরে, অথবা কাচ দিয়ে আলাদা করে কাচের অন্য প্রান্ত থেকে দেখা যাবে।


মেধা ও উন্নত ট্রেনিং প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে মেধার অভাব নাই। তবে সুযোগের অভাব ছিল। কিন্তু এখন আর তা নেই। আমরা সুযোগ করে দিচ্ছি। প্রতিটি বিভাগে মেডিকেল কলেজ তৈরি করে দিচ্ছি। বিদেশে ডাক্তার পাঠাচ্ছি উন্নত ট্রেনিং করার জন্য।


তিনি আরও বলেন, দেশের খ্যাতিমান চিকিৎসকদের বই লিখতে হবে। তাহলে চিকিৎসা খাতে আমরা আরও এগিয়ে যাবো। প্রতিটি মেডিকেল কলেজে লাইব্রেরি প্রয়োজন।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে পাবলিক ও প্রাইভেট মেডিকেল বৃদ্ধি করা হচ্ছে। তবে শিক্ষার মানের প্রতি নজর রাখতে হবে। মানুষের সেবার জন্য আওয়ামী লীগ কমিউনিটি ক্লিনিক করেছিলো। কিন্তু বিএনপি প্রতিহিংসার কারণে তা বন্ধ করে দিয়েছিলো।


শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মেধা বা জ্ঞানের কমতি নয়, সুযোগের কমতি ছিল। দেশে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে। প্রত্যেক স্থানে মেডিকেল কলেজ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দরজায় পৌঁছে দিতে কাজ করছে সরকার। এসময়, বেসরকারি হাসপাতালে গুরুতর রোগের চিকিৎসা সেবার ব্যয় সাধারণ মানুষের নাগালে রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।


চিকিৎসা ক্ষেত্রে সরকারের কার্যক্রম উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিট, মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় ইউনিটসহ শহরে এবং সারাদেশে হাসপাতাল তৈরি করেছে। টেলি মেডিসিন প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন উন্নত হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করে উন্নতমানের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে। নার্সিং ক্ষেত্রে বিশেষ মনযোগ দেয়া হচ্ছে। থাইল্যান্ড পাঠিয়ে নার্সদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। নার্সিং পেশাকে মর্যাদাশীল করতে সরকার কাজ করছে।


শেখ হাসিনা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের পর সরকার গঠন করে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই স্বাস্থ্যসেবাকে মানসম্মত করার চেষ্টা করেছেন বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশের সংবিধানে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। চিকিৎসা পেশাকে বঙ্গবন্ধু ১ম শ্রেণিতে উন্নীত করেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী আর্ত মানবতার সেবায়, যে কোনো পদক্ষেপ নেয়াকে অত্যন্ত সাহসী কাজ বলে উল্লেখ করেন।


জাতির জনকের ইউনিয়ন পর্যায়ে চিকিৎসা পৌঁছে দেয়ার স্বপ্নকে অনুসরণ করে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প নেয়া হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামায়াত সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প বন্ধ করে দেয়। এখন মেডিকেল কলেজগুলোতে শয্যার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে, এর ফলে মানসম্মত চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com