শিরোনাম
গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ৭৩৯৭ জন
প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০১৮, ১৩:৩৯
গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ৭৩৯৭ জন
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

২০১৭ সালে সারাদেশে ৪ হাজার ৯৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৩৯৭ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং ১৬ হাজার ১৯৩ জন আহত হয়েছে। আর এ সংখ্যা ২০১৬ সালের চেয়ে অনেক বেশি। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।


ঢাকা রির্পোটার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট-২০১৭’ প্রকাশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ তথ্য তুলে ধরেন।


দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রচারিত সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে সংগঠনটি। এতে দেখা গেছে, বিদায়ী ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২ মাসে ছোট-বড় চার হাজার ৯৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এতে সর্বমোট ২৩ হাজার ৫৯০ জন যাত্রী, চালক ও পরিবহন শ্রমিক সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় মারা গেছে সর্বমোট সাত হাজার ৩৯৭ জন, আহত হয়েছে ১৬ হাজার ১৯৩ জন।


এর মধ্যে হাত, পা বা অন্য কোনো অঙ্গ হারিয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়েছে এক হাজার ৭২২ জন। এইসব দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে জিডিপির প্রায় দেড় থেকে দুই শতাংশ।


এ সময় ১২৪৯টি বাস, ১৬৩৫টি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ২৭৬টি হিউম্যান হলার, ২৬২টি কার, জীপ, মাইক্রোবাস, ১০৭৪টি অটোরিক্সা, ১৪৭৫টি মোটরসাইকেল, ৩২২টি ব্যাটারি চালিত রিক্সা, ৮২৪টি নছিমন করিমন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।


সংগঠিত দুর্ঘটনার ৪২.৫ শতাংশ পথচারীকে চাপা, ২৫.৭ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১১.৯ শতাংশ খাদে পড়ে, ২.৮ শতাংশ চাকায় ওড়না পেচিয়ে সংগঠিত হয়।


সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৬ সালে চার হাজার ৩১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ছয় হাজার ৫৫ জনের মৃত্যু ও ১৫ হাজার ৯১৪ জন আহত হয়েছিল। এতে দেখা গেছে, ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে মোট দুর্ঘটনা ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ, নিহত ২২ দশমিক ২ শতাংশ, আহত ১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।



বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে, সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো হচ্ছে- বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বিপদজনক অভারটেকিং, রাস্তা-ঘাটের নির্মাণ ক্রটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, মহাসড়ক ও রেলক্রসিংয়ে ফিডার রোডের যানবাহন উঠে পরা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকায় রাস্তার মাঝ পথে পথচারীদের যাতায়াত।


সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমিতির সুপারিশগুলো হলো:
১। ট্রাফিক আইন, মোটরযান আইন ও সড়ক ব্যবহার বিধিবিধান সম্পর্কে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য, মসজিদ, মন্দির, গির্জায় জনসাধারণের জন্য ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা, টিভি চ্যানেল ও সংবাদপতে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে হাট-বাজার অপসারণ করা, ফুটপাত বেদখল মুক্ত করা, ট্রাফিক চিহ্ন স্থাপন করা, জেব্রাক্রসিং অংকন করা, চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিং ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা, যাত্রীবান্ধব সড়ক পরিবহন আইন ও বিধিবিধান প্রণয়ন, গাড়ির ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি উন্নত বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে আধুনিকায়ন করা, জাতীয় মহাসড়কে স্বল্পগতি ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা, প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইনে সড়ক নিরাপত্তা তহবিল গঠন করে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।


এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে যারা ছিন্নমূল ও দারিদ্রের কাতারে নেমে যাচ্ছে তাদের ভরণ-পোষণের দায়-দায়িত্ব সরকারকে গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতির সুপারিশে।


সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধ সংগঠন ফুয়ারার সভাপতি ইকরাম আহম্মেদ, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুন নেওয়াজ, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. হুমায়ন কবির হিরু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজসেবক মোঃ হারুন অর রশিদ প্রমুখ। -বিজ্ঞপ্তি


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com