শিরোনাম
‘রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে না’
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০১৭, ১৪:১৪
‘রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে না’
ফাইল ফটো
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

দেশে চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কোনো উদ্বেগ বা চিন্তা আছে বলে মনে হচ্ছে না। বিএনপি নেতারা তাদের হতাশ কর্মীদের চাঙ্গা করতে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে মিথ্যাচার করে আবোল তাবোল বকছেন।


এ মন্তব্য করছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রবিবার দুপুরে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।


ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন আপনারা বিএনপি কী বললো তা নিয়ে আলোচনা করছেন। বিএনপির রোহিঙ্গা সমস্যার ব্যাপারে কতটা আন্তরিক? আজকে বাংলাদেশে যে রোহিঙ্গা সমস্যা বা বাংলাদেশ যে সঙ্কটে পড়েছে এখানে তারা কতটা কনসার্ন? তাদের কনসার্নটা রাজনীতির।


দেশে তিন দফা বন্যা হলো, এরকম একটা গভীর সঙ্কটে দেশ নিপতিত। তাদের নেত্রী দিনের পর দিন শুধু তারিখ দিয়েই যাচ্ছেন। তিনি দেশে আসছেন না। তাদের এক নম্বর যিনি তারই তো এ ব্যাপারে কোনো উদ্বেগ বা চিন্তা আছে বলে মনে হয় না।


তিনি বলেন, বাকিরা এখানে বসে শুধু প্রেস ব্রিফিংয়ে মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছেন। তারা তাদের কর্মীদেরকে চাঙ্গা করার জন্য চেয়ারপার্সনের অনুপস্থিতিতে কর্মীরা যে হতাশ, এ হতাশ কর্মীদের চাঙ্গা করার জন্য আবোল তাবোল বকছেন। এছাড়া আমি অন্য কিছু দেখছি না।


কাদের বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সরকার কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে, বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে কাদের বলেন, যদি কূটনৈতিক উদ্যোগ ব্যর্থ হত তাহলে মিয়ানমারের সুর নরম হলো কেন? রোহিঙ্গা অভিযান, বিতাড়ন, জাতিগত নিধন একটা চরম পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল। তারা এ অবস্থানে অনড় এটিই বোঝা গিয়েছিল। এখন তো মিয়ানমারের মন্ত্রী এসে জয়েন্ট ওয়ার্ক করার একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে।


তিনি বলেন, কাজেই সুর নরম না হতো, অবস্থানের যদি পটপরিবর্তন না হতো তাহলে মিয়ানমারের মন্ত্রী কী করে বাংলাদেশে এসে আলোচনা করে? আমাদের সব কিছুর জন্য একটু ঠাণ্ডা মাথায় অপেক্ষা করতে হবে। যদি কোনো ফাঁদে আমরা পা দিই, তাহলে গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে।


জাতিসংঘ আবার আশঙ্কা করছে, মিয়ানমার থেকে আবার রোহিঙ্গা ঢল বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে। সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, আসতে পারে আশঙ্কা আছে। এটা আমরা দেখি। আমাদের কূটনৈতিক উদ্যোগও অব্যাহত রয়েছে। কাজেই এ আশঙ্কা সত্য হয় কিনা সেটাও দেখতে হবে। এখন যেটা আসছে ছিটেফোটা, কিছু লোক আসছে।


তিনি আরো বলেন, আমি স্পটে ছিলাম সিনস দ্যা বিগেনিং অব দ্যা ক্রাইসিস। কিভাবে আসছে সেটা আমি নিজেই সেই জনস্রোতটা দেখেছি। কিন্তু আগের মত সেই জনস্রোত আর নেই। আসতে পারে এ আশঙ্কা জাতিসংঘ করছে। কাজেই জাতিসংঘেরই এখানে কঠোর অবস্থান নেয়া উচিত। যাতে নতুন করে ইনফ্লাক্স হতে না পারে।


মিয়ানমার বারবার সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করছে এ বিষয়ে বাংলাদেশ কী পদক্ষেপ নিয়েছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সীমান্ত আইন লঙ্ঘনের প্রথমে কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছে। তাদের সামরিক হেলিকপ্টার আমাদের সীমান্ত লঙ্ঘন করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে বিশ্ব জনমতের চাপে, জাতিসংঘসহ আমাদের কূটনৈতিক উদ্যোগের ফলে সেটা এখন আর হচ্ছে না। দেট ইজ নাউ নন এক্সজিসটেন্স।


সীমান্তে রোহিঙ্গা ঢল বন্ধ করতে সরকার কোনো উদ্যোগ নেবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন মানবিক কারণে আমরা যখন সীমান্তের দরজা খুলেছি, তখন আবার কী এমন কারণ ঘটলো যে আমাদের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হবে। এইটা আমার মনে হয়ে না যে পর্যন্ত না আমাদের কূটনৈতিক উদ্যোগ জাতিসংঘসহ বিশ্ব জনমতের চাপে বন্ধ না হবে, আমরা জোর করে দরজা বন্ধ করে দিতে পারি না। কারণ আমাদের মানবিক দৃষ্টিকোণ এক এক সময় এক এক রকম করতে পারি না। এটা মানবিক বিপর্যয়। এই বিপর্যয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর যে উদার চিত্ততা তিনি দেখিয়েছেন, সেজন্য তিনি আজকে বিশ্বে বিপন্ন মানবতার লাইট হাউজে পরিণত হয়েছেন।


তিনি আরো বলেন, আমাদের সতর্কতার সঙ্গে চলতে হবে। কোনো প্রকার ফাঁদে আমরা পা দেব না। আমাদের তরফ থেকে কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত থাকবে। যত দ্রুত সম্ভব আমাদের উপর যে বাড়তি জনসংখ্যা চেপেছে, যদি তাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নেয়া হয় সেটার জন্যই আমরা চাপ প্রয়োগ করতে বিশ্বসভাসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আমাদের প্রতিবেশীদেশগুলোরই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখা দরকার। কারণ প্রতিবেশীর ঘরে আগুন লাগলে এ আগুনের আচ কিন্তু অন্য প্রতিবেশীর ঘরে গিয়েও লাগবে।


মিয়ানমারের এই জাতিগত নিধনের মাধ্যমে বাংলাদেশের উপর জনসংখ্যার বাড়তি চাপ সৃষ্টি করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্র কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা আমি জানি না। ষড়যন্ত্র তো একটা আছেই। এখন মিয়ানমার এদেরকে তাদের নাগরিক বলে স্বীকার করে না। এটা আরো খতিয়ে দেখতে হবে। হুট করে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। চক্রান্ত তো একটা আছেই। চক্রান্তের স্বরূপটা এখনো বলা যাচ্ছে না। কারণ এটা আরো জনতে হবে। আরো বুঝতে হবে, আরো খতিয়ে দেখতে হবে।


বিবার্তা/ওরিন/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com