শিরোনাম
স্বপ্ন পূরণ হলো না জবি ছাত্রী দীপার
প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০১৬, ০৮:২০
স্বপ্ন পূরণ হলো না জবি ছাত্রী দীপার
খলিলুর রহমান
প্রিন্ট অ-অ+

স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শেষ করে শিক্ষক হবেন। এমন স্বপ্নকে বুকে ধারণ করেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গনিত বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী দীপা রাণী নাথ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই লালিত স্বপ্ন তিনি বাস্তবায়ন করতে পারেননি। অকালেই তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে।


জানা গেছে, দীপা রাণী নাথ চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার তেতুইয়া গ্রামের দীজেন্দ্রলাল নাথের মেয়ে। গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে থাকলেও তার বেড়ে উঠা রাজধানীতে। ২০০৬ সালে তিনি মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। ২০০৯ সালে একই প্রতিষ্ঠান থেকে ফের জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। সর্বশেষ তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। কিন্তু লেখাপড়া শেষ করার আগেই তিনি সবাইকে রেখে চলে গেছেন না ফেরার দেশে।


গত ২১ অক্টোবর বিকালে দীপার লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তার স্বামী সুব্রত চৌধুরী। সুব্রতের দাবি দীপা আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু দীপার পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে। সুব্রতর বাড়িও চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে। দীপা শ্বশুর ও শাশুড়ির সাথে রাজধানীর কাঠালবাগান এ/পি-১০/৪ জাহানারা গার্ডেনের ৬ষ্ষ্ঠ তলায় বসবাস করতেন। সেখান থেকেই লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান সুব্রত।


দীপার বড় বোন সুর্বণা রাণী দেবনাথ বিবার্তাকে জানান, ছোট বেলা থেকেই দীপা খুব মেধাবী ছিল। তার স্বপ্ন ছিলে লেখাপড়া শেষ করে শিক্ষক হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে গেছে।



এদিকে, গত বৃহস্পতিবার রাতে দীপার স্বামী সুব্রতকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


সুব্রতকে কারাগারে পাঠালেও এখনো অপমৃত্যু মামলা দিয়ে তদন্ত কাজ চলাচ্ছে পুলিশ।


বিষয়টি জানতে কলাবাগান থানার এসআই ধাকুর দাস মালোর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিবার্তাকে জানান, দীপা স্বজনদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। অপমৃত্যু মামলা থেকে হত্যা মামলা করার এখনো সুযোগ আছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী ওই কর্মকর্তা।


প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা সমর কান্তি চৌধুরীর ছেলে সুব্রত চৌধুরীর সঙ্গে দীপার বিয়ে হয়। প্রেম করে বিয়ে করার কারণে সুব্রতের বাবা-মা দীপাকে মেনে নিতে পারত না। প্রায় সময় তারা যৌতুক, পড়াশোনা বন্ধসহ নানা অজুহাতে দীপাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত।


দীপার বড় বোন সুর্বণা রাণী দেবনাথ জানান, চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন দীপা। পরে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দীপা বিষয়টি তার বাবা-মাকে জানায়। একপর্যায়ে সে স্বামীর ঘর ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে। এ ঘটনার ৩ থেকে ৪ দিন পর দীপাতে নিতে আসেন তার স্বামী সুব্রত। পরবর্তীতে এমন ঘটনা ঘটবে না এমন প্রতিশ্রুতিতে দীপাকে দেয়া হয়। এ সময় দীপার সঙ্গে তার বাবা দীজেন্দ্র লাল দেবনাথ ও মা রূপালী দেবনাথ সুব্রতের বাসায় যান। তারা বাসায় পৌঁছার পরই সুব্রতের বাবা-মা দীপার বাবা-মা’কে লাঞ্ছিত করেন। এর জের ধরেই দীপাকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন সুর্বণা।


বিবার্তা/খলিল/জিয়া


দীপার মৃত্যু রহস্য কাটছে না

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com