শিরোনাম
১১ মেগা প্রকল্প বাজেটে গুরুত্ব পাচ্ছে
প্রকাশ : ০১ জুন ২০১৭, ১১:১৫
১১ মেগা প্রকল্প বাজেটে গুরুত্ব পাচ্ছে
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

এবারের বিগ বাজেটে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার ফার্স্ট ট্র্যাকের ১১ মেগা প্রকল্প সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এর মধ্যে চলমান আট প্রকল্পে ৩৩ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। এ সব প্রকল্পে চলতি অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ রয়েছে ২৪ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা। বাজেটে দেশে এ যাবত্কালের সবচেয়ে বড় প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে।


এক লাখ ১৩ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকায় চলমান এ প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হবে ১১ হাজার ২৪৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে এ প্রকল্পে ৬ হাজার ৫৩২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। আগামী বছরের এপ্রিল মাসে রাশিয়া থেকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপকরণ আসা শুরু হবে।


অন্যদিকে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরে চলমান পদ্মা সেতু প্রকল্পে মার্চ পর্যন্ত ১১ হাজার ৩৭৭ কোটি টাক ব্যয় হয়েছে। আগামী অর্থবছর এতে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ছয় হাজার ২৬ কোটি টাকা। ফার্স্ট ট্রাকের মধ্যে দৃশ্যমান সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে এ প্রকল্পে। অন্যদিকে ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ের পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে পাঁচ হাজার ৬৩ কোটি টাকা।


চলতি অর্থবছরে এ কাজে চার হাজার ১০২ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। মার্চ মাস পর্যন্ত এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে মাত্র চার কোটি টাকা। ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা চলমান মেট্রো রেল প্রকল্পে মোট খরচ হয়েছে ৭৬০ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এ প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে তিন হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল দুই হাজার ২২৭ কোটি টাকা। এছাড়া আসছে অর্থবছরে মাতারবাড়ী কয়লাভত্তিক বিদ্যুত্ কেন্দ্রে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে এক হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা। রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে এক হাজার ৪০২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরে থাকছে ৬শ কোটি টাকা। দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ৩ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেয়া হবে।


এগারো বারের মতো আজ বৃহস্পতিবার সংসদে বাজেট দিতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদে ২০০৯-১০ অর্থবছরে এক লাখ ১৩ হাজার ৮১৫ কোটি টাকার বাজেট দিয়ে শুরু করেন মুহিত। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট দিতে যাচ্ছেন তিনি। বিনিয়োগ বাড়িয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে আগামী বাজেটে বেশি ব্যয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ জন্য বিশাল এই বাজেটে ঘাটতি পাঁচ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। যা টাকার অংকে এক লাখ ১২ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা।


রাজস্ব আহরণ, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ব্যয়সহ বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের উচ্চাভিলাসী লক্ষ্য থাকছে। এ বছর ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হতে পারে বলে সরকারি হিসাবে বলা হয়েছে। আসছে বাজেটে এটি বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে। বাজেটে রাজস্ব আদায়েরও উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য থাকছে।


অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আয়ব্যয়ের ব্যবধান ঘোচাতে বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭৪ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৪৮ হাজার ৯৬ কোটি টাকা আসবে ব্যাংকিং খাত থেকে। এর বাইরে বিদেশী উৎস থেকে ঋণ নেয়া হবে ৫৪ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। ইআরডির এক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, স্বাধীনতার পর থেকেই প্রতিবার বিদেশি সহায়তা ছাড় হচ্ছে প্রতিশ্রুতির প্রায় অর্ধেক। প্রচলিত এ ধারার বিপরীতে আগামী অর্থবছর প্রতিশ্রুতির চাইতে বেশি অর্থ ছাড় করাতে চাইছে ইআরডি।


তবে এবারের বাজেটে নানা কারণে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে নতুন ভ্যাট আইনের বাস্তবায়ন ইস্যু। আইনটি জুলাই থেকে কার্যকর হচ্ছে। এ নিয়ে বাজেটের আগেই জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে। আইনটি কার্যকর হলে পণ্যমূল্য বাড়তে পারে বলে ইতিমধ্যে ব্যবসায়ীদের তরফে প্রচার চালানো হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী নিজেও নতুন আইনটির বাস্তবায়নকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। নতুন আইনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ব্যবসায়ী ও সরকার বিপরীতমুখী অবস্থানে রয়েছে। তবে দুই শতাধিক পণ্য ও সেবাকে নতুন করে ভ্যাট অব্যাহতির আওতায় আনা হচ্ছে।


নির্দিষ্ট পরিমাণে জমি কিংবা অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ভ্যাট অব্যাহতির তালিকায় আসছে। বর্তমানে জমি কেনাবেচায় আড়াই শতাংশ হিসেবে ভ্যাট প্রযোজ্য। নতুন ব্যবস্থায় এ খাতে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে। বিমান ভাড়ার উপর বিদ্যমান আবগারি শুল্ক (এক ধরনের বিক্রয় কর) দ্বিগুণ হতে যাচ্ছে। ব্যাংকে আমানতের উপর বার্ষিক এককালীন আবগারি শুল্ক দ্বিগুণ হচ্ছে। তবে ২০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত স্থিতির উপর বিদ্যমান হারই প্রযোজ্য থাকছে।


বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com