শিরোনাম
‘চাপাচাপির’ বাজেট বৃহস্পতিবার
প্রকাশ : ৩১ মে ২০১৭, ২০:৩৭
‘চাপাচাপির’ বাজেট বৃহস্পতিবার
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

নির্বাচনকে সামনে রেখে এটা বর্তমান সরকারের শেষ দিকের একটি বাজেট। এই বাজেটে ভ্যাট আইনসহ করকাঠামোতে আসছে ব্যাপক পরিবর্তন। বাজেট প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, এবারের বাজেট হলো ‘চাপাচাপি’র বাজেট।


বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের এই বাজেট ঘোষণা করবেন। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আকার এবং একইভাবে সবচেয়ে বড় ঘাটতির বাজেট।


প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এক লাখ ৫৩ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা, আর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা।


এবারের বাজেটে সবচেয়ে বেশি আলোচনা নতুন ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) আইন বাস্তবায়ন নিয়ে। ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে ভ্যাটের হার কমানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও শেষ পর্যন্ত ১ জুলাই থেকে ভ্যাটহার ১৫ শতাংশই কার্যকরা করা হবে বলে অর্থমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।


ভ্যাট খাতে চলতি বছরের চেয়ে আগামী অর্থবছরে ৩৫ শতাংশ বেশি টাকা আদায় করার চেষ্টা সরকারের। ফলে চলতি অর্থবছরে ভ্যাট খাতে সংশোধিত লক্ষ্য ঠিক করা আছে ৬৫ হাজার কোটি টাকা।


এছাড়া ব্যাংকে আমানতে নতুন করে আবগারি শুল্ক আরোপের খবরে উদ্বেগে পড়েছেন ব্যাংক আমানতকারীরা।


জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র বলছে, রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে প্রায় দুই লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের মাধ্যমে আসবে দুই লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। ভ্যাট থেকে সংগ্রহ করা হবে ৮৭ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা। আয়কর থেকে আসবে ৮৬ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা এবং শুল্ক থেকে আসবে ৭৩ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা।


সূত্রমতে, ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে পৌনে তিন লাখ টাকা করা হচ্ছে। বর্তমানে সোয়া দুই কোটি টাকার বেশি সম্পদ থাকলে মোট আয়করের ১০ শতাংশ সারচার্জ দিতে হয়।


এ ছাড়া তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের উৎসে কর ০.৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করা হতে পারে।


জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৪ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হচ্ছে।


আগামী অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্থানীয় উৎস থেকে জোগান দেয়া হবে ৯৬ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। আর উন্নয়ন-সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে ৫৭ হাজার কোটি টাকা। এটি মূল এডিপি হিসেবে পরিচিত। এর বাইরে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আরও ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকবে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে এডিপির আকার এক লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা হবে।


নতুন অর্থবছরে চলমান আট মেগা প্রকল্পে ৩৩ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পদ্মা সেতু প্রকল্পে আগামী অর্থবছরে ৫ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা এবং পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্পে ৭ হাজার ৬১০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে। এ ছাড়া মেট্রোরেল নির্মাণে বরাদ্দ থাকতে পারে ৩ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হতে পারে।


সর্বোচ্চ বরাদ্দ থাকছে পরিবহন খাতে পরিবহন খাতে ৪১,০৫৩ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির ২৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বিদ্যুত খাতে ১৮,৮৫৮ কোটি টাকা, শিক্ষা ও ধর্ম খাতে ১৬,৬৭৩ কোটি টাকা, ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ণ খাতে ১৪,৯৪৯ কোটি টাকা, বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ১৪,৪৫০ কোটি টাকা, পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতে ১৩,১৫৪ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবারকল্যাণ খাতে ১০,২০১ কোটি টাকা ও কৃষি খাতে ৬,০০৬ কোটি টাকা রয়েছে।


বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে আগামী বাজেটে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ বা পিপিপি খাতে আলাদাভাবে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকবে।


সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য মাসিক ভাতার পরিমাণ ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বছরে দুটি উৎসব ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসছে বাজেটে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে।


বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন


>>বাজেটে বাড়তে ও কমতে পারে যেসব পণ্যের দাম


>>আবগারি শুল্কের জালে ব্যাংকের আমানতকারীরা


>>করের জালে খাওয়াদাওয়া, সাজগোজ, বিনোদন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com