শিরোনাম
‘ছেলে-মেয়েদের মেধা বিকাশের সুযোগ দিতে হবে’
প্রকাশ : ২৫ মে ২০১৭, ১৮:২০
‘ছেলে-মেয়েদের মেধা বিকাশের সুযোগ দিতে হবে’
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের সাঁতারুরা সঠিক প্রশিক্ষণ এবং অনুশীলনের মাধ্যমে একদিন বিশ্বমানের প্রতিযোগী হিসেবে গড়ে উঠবে। সে জন্য ছেলে-মেয়েদের মেধা বিকাশের সুযোগ করে দিতে হবে। বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদর দফতরের সুইমিংপুল কমপ্লেক্সে ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ শীর্ষক ‘সুইমার ট্যালেন্ট হান্ট’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।


প্রধানমন্ত্রী ‘সুইমার ট্যালেন্ট হান্ট’ অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত রাউন্ডের প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন এবং বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।


বাংলাদেশে সাঁতার একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলা উল্লেখ প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের আন্তরিক চেষ্টায় সাঁতার প্রতিযোগিতাও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। তারই নিদর্শন আজকের এ প্রতিযোগিতায় ক্ষুদে সাঁতারুদের মেধার প্রতিফলন।


তাঁর সরকার দেশের ক্রীড়া উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে আমাদের ক্ষুদে সাঁতারুদের, যে নৈপুণ্য দেখলাম তাতে আমি অত্যন্ত আশাবাদী। এখান থেকেই একদিন আমাদের বিশ্বমানের প্রতিযোগী উঠে আসবে।’


তিনি বলেন, এক সময় বাংলাদেশেরই মানুষ ব্রজেন দাস ইংলিশ চ্যানেল পার হয়েছিলেন। কাজেই আমরা যে পারি সেটা আসলে আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি।


অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বয়সভিত্তিক শ্রেষ্ঠ ৮ জন ক্রীড়াবিদের প্রত্যেককে খেলাধূলায় আরো উন্নতি সাধনের জন্য ৫ লাখ টাকা করে চেক প্রদান করেন।


দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রতিভাবান সাঁতারুদের খুঁজে বের করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশেনের উদ্যোগে ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সহযোগিতায় ২০১৬ সালের ১৯ মে ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতা শুরু হয়।


প্রথম পর্বে ৪৮৯টি উপজেলা হতে ২৫ হাজার সাতারু অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে দ্বিতীয় পর্বের জন্য ১২৭৫ জন নির্বাচিত হয়। পরবর্তীতে ১২৭৫ জনকে ঢাকায় এনে পুনরায় তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ১৬০ জনকে নির্বাচিত করা হয়। শেষ পর্বে বাংলাদেশে সুইমিং ফেডারেশনের তত্ত্বাবধানে এই সাঁতারুদের ৩ মাস নিবিড় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত হয় সেরা ৬০ জন সাঁতারু। এই কৃতী সাঁতারুদের জন্য লেখাপড়াসহ দেশে বিদেশে ৩ বছরব্যাপী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।



প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের সাঁতারুরা অংশগ্রহণ করে পদক নিয়ে আসছেন এবং দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে চলেছেন। সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত ১২তম এস এ গেমস-এ মাহফুজা খাতুন সাঁতারে মহিলাদের ১০০ মিটার ও ৫০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকে ২টি স্বর্ণ পদক জিতেছেন। এছাড়াও এই গেমস-এ আরো ১৭টি পদক অর্জন করে আমাদের খেলোয়াড়রা বিদেশের মাটিতে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করেছেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর অক্টোবর মাসে শ্রীলংকায় অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশীপ প্রতিযোগিতায় আমাদের সাঁতারুরা ২টি স্বর্ণ, ২টি রৌপ্যসহ ৯টি পদক পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন।


খেলাধূলার প্রসারে তাঁর সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের সকল উপজেলায় স্টেডিয়াম স্থাপনসহ জেলা পর্যায়ে স্টেডিয়াম উন্নয়ন ও সংস্কার করছি। এছাড়া বিভাগীয় শহরগুলোতে সুইমিংপুল নির্মাণসহ বিশেষায়িত ও আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম ও ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রতিটি উপজেলায় তাঁর সরকার মিনি স্টেডিয়াম করে দিচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।


তিনি বলেন, খেলাধূলার মধ্যদিয়ে একদিকে আমাদের ছেলে-মেয়েরা শারীরিকভাবে সুগঠিত হবে এবং মনের দিক থেকে উদার হবে। মানসিক শক্তি পাবে। তাদের ভেতরে আত্মবিশ্বাস জেগে উঠবে।


লেখাপড়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লেখাপড়া শিখতে হবে, লেখাপড়ার সাথে সাথে খেলাধূলাকেও আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কাজেই এই খেলাধূলার মধ্য দিয়েই আমাদের শিশুদের মেধা বিকশিত হবার সুযোগ পাবে।


প্রধানমন্ত্রী গতরাতে নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে পরাজিত করে বাংলাদেশের ওয়ানডে র্যাং কিং এ ৬ নম্বরে উঠে আসায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় ও সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশ একদিন ক্রিকেটে বিশ্বকাপও জয় করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


অনুষ্ঠানে নৌবাহিনীর প্রধান এবং বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনের সভাপতি এডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদ ও সাঁতার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এমবি সাইফ মোল্লা বক্তব্য দেন।


অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল, মন্ত্রী পরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনী প্রধানগণসহ উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা এবং সশস্ত্রবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: বাসস


বিবার্তা/পলাশ


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com