শিরোনাম
বিশ্বে শান্তি স্থাপনে প্রধানমন্ত্রীর ৪ প্রস্তাব
প্রকাশ : ২২ মে ২০১৭, ১১:২৪
বিশ্বে শান্তি স্থাপনে প্রধানমন্ত্রীর ৪ প্রস্তাব
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বিশ্বে শান্তি স্থাপনে চারটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আয়োজিত ‘আরব ইসলামিক আমেরিকান সামিটে’ এ প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মুসলিম প্রধান অর্ধশতাধিক দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চারটি প্রস্তাব হলো- প্রথমত, অবশ্যই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কাছে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, সন্ত্রাসী ও তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলোর অর্থের যোগান বন্ধ করতে হবে। তৃতীয়ত, ইসলামী উম্মাহর মধ্যে বিভক্তি দূর করতে হবে। চতুর্থত, সংলাপের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংকটগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ বের করতে হবে, যাতে সকল পক্ষই তাদের নিজ নিজ সাফল্যের দিকটি নিশ্চিত করতে পারে।

 

রবিবার রিয়াদের কিং আব্দুল আজিজ কনভেনশন সেন্টারে ‘আরব ইসলামিক আমেরিকান সামিটে’র আয়োজন করে সৌদি আরব। মার্কিন প্রেসিডেন্টসহ এ সামিটে ৫৫টি দেশের নেতারা অংশ নেয়। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বিশেষ আমন্ত্রণ জানান সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ। আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে শনিবার সৌদি আরব যান তিনি।

 

সৌদি বাদশাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে, ‘এ সম্মেলনে সবার সাথে যোগ দিতে পেরে আমি আনন্দিত। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি বাদশাহ সালমানকে, এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি কর্মসূচিতে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য।’

 

রিয়াদে যে সন্ত্রাসবিরোধী ইসলামিক সেন্টার স্থাপনের সিদ্ধান্ত বাদশাহ সালমান নিয়েছেন তার জন্যও তাকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য দেশ হতে পেরে আমরা আনন্দিত।

 

সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস মৌলবাদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ আজ বিশ্বশান্তি ও উন্নয়নের পথে কেবল হুমকিই নয়, মানব সভ্যতাকে বিপর্যস্ত করে তুলছে। এর কুফল থেকে কোনো দেশই রেহাই পাবে না। কোনো ধর্ম কিংবা কোনো মতের মানুষই এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে পারবে না।

 

ইসলামকে শান্তির ধর্ম আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সহিংসতা, সন্ত্রাস আর হত্যার সমর্থন এই ধর্ম করে না। ধর্মের নামে কোনো ধরনের সহিংস মৌলবাদ আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের কাছে সন্ত্রাসীর আলাদা কোনো নাম নেই, যে সন্ত্রাসী সে সন্ত্রাসীই। তাদের কোনো ধর্ম নেই, নেই কোনো মত কিংবা জাতি।

 

বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে সন্ত্রাস মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান ও কর্মকাণ্ড তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধ জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছি। আমাদের সীমারেখা কিংবা সম্পদ, কেউ যাতে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা দৃঢ় অবস্থানে রয়েছি।

 

তিনি আরো বলেন, দেশে বেড়ে ওঠা কিছু সহিংস মৌলবাদী শক্তিকে আমরা কার্যকরভাবে মোকাবেলা করছি। কিছুসংখ্যক সন্ত্রাসবাদী দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই অপশক্তিগুলো দেশের ভেতরেই কিছু স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর সমর্থন পেয়ে আসছিল, যা ধীরে ধীরে দমন করা হচ্ছে।

 

শেখ হাসিনা জানান, এই অপতৎপরতা দমনে বহুমুখী কৌশল নিয়েছে বাংলাদেশ। আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সন্ত্রাস দমনে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে কার্যকর করে তোলা হয়েছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মাঝেও জনমত গড়ে তোলা হচ্ছে।

 

সন্ত্রাস ও সহিংসতার উত্থানে আজ বিশ্ব শরণার্থী সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, তিন বছরের শিশু আইলানের সমুদ্র তীরে মৃত পড়ে থাকার দৃশ্য কিংবা আলেপ্পোয় রক্তমাখা নিস্তব্দ শিশু ওমরান আমাদের বিবেককে নাড়া দিয়ে গেছে। একজন মা হিসেবে বিশ্বের যেখানেই ঘটুক, এমন দৃশ্য আমি সহ্য করতে পারি না। এর কার্যকর সমাধান প্রয়োজন।

 

ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফিলিস্তিনকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর মার্শাল প্ল্যানকে সামনে রেখে ইরাক ও সিরিয়ার মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোর পুনর্গঠনের আহ্বানও জানান শেখ হাসিনা।

 

এদিকে, সোমবার মহানবী (স.) এর রওজা জিয়ারত করতে মদিনায় যাবেন শেখ হাসিনা। একই দিন সন্ধ্যায় মদিনা থেকে ফিরে মক্কায় ওমরাহ পালন করবেন তিনি। মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

 

বিবার্তা/আছিয়া/নিশি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com