শিরোনাম
১৯৮৫ সালের অর্গানোগ্রামেই ঝুলছে বেবিচক
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০১৬, ১২:৩২
১৯৮৫ সালের অর্গানোগ্রামেই ঝুলছে বেবিচক
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) জনবল কাঠামো বা অর্গানোগ্রাম সাত বছরেও চূড়ান্ত হয়নি। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাটি এখনও ১৯৮৫ সালের অর্গানোগ্রামের আলোকে পরিচালিত হচ্ছে। তবে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সরকারের পক্ষ থেকে জোরালো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।


যুগোপযোগী অর্গানোগ্রাম না থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অথরিটি (এফএএ) বেবিচককে দ্বিতীয় ক্যাটাগরির নিয়ন্ত্রণ সংস্থা হিসেবে চিহ্নিত করে ২০০৯ সালে। সে সময় বেবিচকের ক্যাটাগরি-১-এ উন্নীত হওয়ার প্রধান শর্ত ছিল পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন ও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ। কিন্তু দীর্ঘ সাত বছরেও নিজস্ব জনবল কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) চূড়ান্ত করতে পারেনি বেবিচক। উপরন্তু পুরনো যে জনবল কাঠামো তাতেও ৫১৮টি পদ এখনো শূন্য আছে।



নিজস্ব অর্গানোগ্রাম না থাকায় এফএএর তালিকায় ক্যাটাগরি-১-এ উন্নীত হতে পারছে না বেবিচক। আর ক্যাটাগরি-২-এ থাকায় বেবিচক থেকে অনুমোদন নেয়া সংস্থার উড়োজাহাজ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বেশকিছু দেশে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পাচ্ছে না। একই কারণে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া কোনো উড়োজাহাজেরও সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি নেই। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বহুল প্রতীক্ষিত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিউইয়র্ক রুটের ফ্লাইটও চালু করা সম্ভব হয়নি।


সূত্র মতে, বর্তমানে যে অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী বেবিচক পরিচালিত হচ্ছে তা ১৯৮৫ সালের। এতে চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ রয়েছে তিন হাজার ৭১৬টি। জনবলসংক্রান্ত গত আগস্ট পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সংস্থাটির প্রথম শ্রেণীর অনুমোদিত পদের সংখ্যা ২৭১; যার মধ্যে ৩০টি বর্তমানে শূন্য। দ্বিতীয় শ্রেণীর ১১৮টি অনুমোদিত পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১৪টি। এছাড়া তৃতীয় শ্রেণীর ২৪১৭টি অনুমোদিত পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ৪০৬টি ও চতুর্থ শ্রেণীর ৯১৪টি পদের মধ্যে শূন্য ৬৮টি পদ।


সূত্র মতে, বেবিচকে জনবল সংকট দীর্ঘদিনের। দেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী দেশী-বিদেশী এয়ারলাইনসগুলোর পাশাপাশি সবগুলো বিমানবন্দরও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব বেবিচকের। কেবল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন দেশের চারটি এয়ারলাইনস সংস্থার প্রায় ৫০টি ফ্লাইট পরিচালিত হয়। পাশাপাশি ১৮ দেশের ২৫টি এয়ারলাইনস সংস্থার প্রায় ১০০টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও পরিচালিত হয় এ বিমানবন্দর দিয়ে। এ অবস্থায় জনবল সংকটের কারণে এসব কার্যক্রম প্রায়ই দুর্বল নজরদারির মধ্যে থেকে যাচ্ছে। আবার বাণিজ্যিক ফ্লাইটের পাশাপাশি দেশে বর্তমানে নয়টি কোম্পানি ১৮টি হেলিকপ্টার পরিচালনা করলেও এসব পর্যবেক্ষণে ফ্লাইট অপারেশন ইন্সপেক্টর রয়েছেন মাত্র একজন। ফলে এতগুলো হেলিকপ্টার সবসময় নজরদারির মধ্যে রাখা সম্ভব হয় না বেবিচকের পক্ষে।


নাম না প্রকাশ করার শর্তে বেবিচকের একজন পরিচালক বলেন, জনবল সংকট দূর করতে বেবিচকের নিজস্ব অর্গানোগ্রাম তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে পুরনো অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী শূন্য পদগুলোয়ও জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন।


উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে নিজস্ব জনবল কাঠামোর (অর্গানোগ্রাম) অনুমোদন পায় বেবিচক। এর পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে জনবলের নিয়োগবিধি প্রস্তুতের কাজ চলছে। নিয়োগবিধি অনুমোদন পেলে অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী নিয়োগ দেয়ার কাজ শুরু হবে।


বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঁচ হাজার জনবলের চাহিদা দেয়া হলেও সবদিক যাচাই-বাছাই করে দুই হাজারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বেশকিছু পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, বেবিচকের সব ধরনের কার্যক্রম ডিজিটাল করতে হবে। দাপ্তরিক কাজে কাগজের পরিবর্তে ই-ফাইলিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এজন্য বেবিচকে একটি আইসিটি বিভাগ খোলার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া বেবিচকের প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর ডাটাবেজ (তথ্যভাণ্ডার) তৈরির বিষয়টি অর্গানোগ্রামে উল্লেখ করা হয়েছে। যেন কর্মচারীদের যাবতীয় কার্যক্রমে তথ্য সংগ্রহে রাখা যায়।


বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com