
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দেশের অর্থনীতির শ্বেতপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রতিবেদন গ্রহণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই প্রতিবেদন আমাদের জন্য একটা ঐতিহাসিক দলিল। আর্থিকখাতে যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তা ছিল একটা আতংকিত হওয়ার মতো বিষয়। আমাদের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু কেউ এটা নিয়ে কথা বলিনি।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ড. ইউনূসের কাছে শ্বেতপত্রটি তুলে দেন। সোমবার (২ ডিসেম্বর) প্রতিবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
এ সময় কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনও প্রস্তুতি ছিল না, এসডিসির কী উপলক্ষ, এর হিসাব কে রাখবে। বলেছে একটা কমিটি করে ফেলান, আমি বললাম তুমি করো। বললো ঠিক আছে। তখন থেকে সূত্রপাত। তার পর ফরমালি যাত্রা শুরু। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে দ্রুততার সাথে তৈরি করার উদ্যোগ নিলাম এজন্য, যত দেরি হবে তত দীর্ঘস্থায়ী ফল পাওয়া নাও যেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আজ যে দলিল এখানে উপস্থাপন হবে এটা প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ। প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ প্রস্তুত থাকবে মানুষের প্রশ্নের জবাবের জন্য।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি আনন্দিত এটা জেনে যে, কাজটা করতে গিয়ে একটা বৃহৎ গোষ্ঠীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে । এবং তৃণমূল পর্যায়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অভিমত নেওয়া হয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শ্বেতপত্রে প্রস্তাবিত যে সংস্কার বা পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে এবং যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার গঠিত এই কমিটি কোনও হস্তক্ষেপ ছাড়া সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে শ্বেতপত্র প্রস্তুত করবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকলেও (এমন শ্বেতপত্র) বাংলাদেশে এই প্রথম। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফসল হিসেবে একটি বৈষম্যহীন অর্থনীতি ও সমাজ প্রতিষ্ঠায় আমরা এটি কাজে লাগাতে পারবো।’
কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ কে এনামুল হক বলেন, ‘গত ১৫ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ৭ লাখ কোটি টাকারও বেশি অর্থ ব্যয় করা হয়েছে এবং এর ৪০ শতাংশ আমলাতন্ত্র লুট করেছে। কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আবু ইউসুফ এর পর্যবেক্ষণ হলো, বিগত শাসনামলে কর ছাড়ের পরিমাণ ছিল দেশের মোট জিডিপির৬ শতাংশ। তিনি বলেন, ‘যদি এটি অর্ধেক করা যায় তবে শিক্ষার বাজেট দ্বিগুণ করা যেতে পারে এবং স্বাস্থ্য বাজেট তিনগুণ করা যেতে পারে।’
উল্লেখ্য, আনুষ্ঠানিকভাবে শ্বেতপত্রের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে আগামীকাল সোমবার (২ ডিসেম্বর)। জানা গেছে, ২৪টি অধ্যায়ের সন্নিবেশিত হয়েছে দুর্নীতির বর্ণনা। অনিয়মের ফিরিস্তি তুলে ধরার পাশাপাশি এতে আছে প্রতিবেদনের ভূমিকা, উপসংহার ও অন্যান্য সংযুক্তি।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। পরে সেই মাসের ২৮ তারিখ দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরতে অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটিকে ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]