বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যা-গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিচারপতিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তাজুল ইসলাম বলেন, আগামীকাল (বুধবার) ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষে বিচারপতিদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এরপর বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এজলাসে বসবেন। সেদিন থেকে বিচারকাজ শুরু হবে।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গণহত্যার ঘটনায় করা মামলার বিচার করতে নিয়োগ পাওয়া ট্রাইব্যুনালে তিন বিচারপতি যোগ দিয়েছেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা বিচারের শুরুর দিন কয়েকটি আবেদন করব। সে বিষয়ে এখনই ডিসক্লজ করছি না। এটি গোপন রাখাই ভালো।
এর আগে নিয়োগের পর প্রথম কর্মদিবসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার ও দুই সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা ট্রাইব্যুনালে আসেন। এ সময় ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার ও অন্যান্য কর্মকর্তারা তাদের অভ্যর্থনা জানান।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাতে হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাতে আইন সচিব শেখ আবু তাহের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ (১৯৭৩ সালের আইন নং ২১)-এর ধারা ৬-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীকে ওই ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করতে ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সেই ট্রাইব্যুনাল জামায়াত-বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণা করে এবং তা কার্যকরও হয়। মাঝখানে ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ অনেক দিন ধরে বন্ধ ছিল। এর মধ্যেই গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে গঠিত এ ট্রাইব্যুনালেও পরিবর্তন আনা হয়। গতকাল বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারকে প্রধান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল পুনর্গঠনের অনুমোদন দেয় আইন মন্ত্রণালয়। ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে বিচারিক কাজে যোগ দেন।
ছাত্র আন্দোলনের সময় কয়েকশ মৃত্যুর ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করে শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত সরকারের কয়েক ডজন মানুষের বিরুদ্ধে বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে এরইমধ্যে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে।
বিচারকাজ শুরু হলে সেগুলোর ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ট্রাইব্যুনালে বিচারকাজ শুরু হলে শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাইবে প্রসিকিউটর টিম।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]