শিশুরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে উঠছে, যার ফলে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। প্রাইভেট পড়া, পাঠের বোঝা তাদের জ্ঞানচর্চা ও পড়ার আনন্দ নষ্ট করে দিচ্ছে। কিন্তু শিশুর সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন পরিবার, বিদ্যালয়, সমাজ, সুস্থ ও প্রকৃতিসম্মত পরিবেশ।
শুক্রবার সকালে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) মিলনায়তনে ফ্রয়বেল চাইল্ড এডুকেশন স্কুল সোসাইটি ও পবার যৌথ আয়োজনে “শিশু শিক্ষার পরিবেশ ও প্রকৃতি সুরক্ষা” শীর্ষক সেমিনারে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন,সরকার জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন করেছে। শিক্ষানীতিতে বাংলাদেশের সংবিধানের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কতিপয় বিধানের পাশাপাশি জাতিসংঘ শিশু অধিকার কনভেনশন বিবেচনায় নেয়া হয়েছে, যেখানে প্রত্যেক সদস্য দেশে সকল শিশুর শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার তাগিদ রয়েছে। শিক্ষানীতির মূল উদ্দেশ্য মানবতার বিকাশ এবং জনমূখী উন্নয়ন ও প্রগতিতে নেতৃত্বদানের উপযোগী মননশীল, যুক্তিবাদী, নীতিবান, নিজের এবং অন্যান্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কুসংস্কারমুক্ত, পরমতসহিষ্ণু, অসাম্প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক এবং কর্মকুশল নাগরিক গড়ে তোলা।
বক্তারা আরও বলেন, শিক্ষার মাধ্যমেই জাতি দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার বৈশিষ্ট্য ও দক্ষতা অর্জন করতে পারে। জনসংখ্যাকে দক্ষ করে তোলার ভিত্তিমূল হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। তাই মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণের জন্য জাতিসত্ত্বা, আর্থ-সামাজিক, শারীরিক-মানসিক সীমাবদ্ধতা এবং ভৌগোলিক অবস্থান নির্বিশেষে দেশের সকল শিশুর জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। এ কাজ করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। শিক্ষার এই স্তর পরবর্তী সকল স্তরের ভিত্তি সৃষ্টি করে বলে যথাযথ মানসম্পন্ন উপযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা অপরিহার্য।
প্রাথমিক শিক্ষার পর অনেকে কর্মজীবন শুরু করে বলে মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষা তাদের যথেষ্ট সহায়ক হতে পারে উল্লেখ করে তারা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষাক্ষেত্রে স্থান ও বিদ্যালয় ভেদে সুযোগ-সুবিধার প্রকট বৈষম্য, অবকাঠামোগত সমস্যা, শিক্ষক স্বল্পতা ও প্রশিক্ষণের দুর্বলতাসহ বিরাজমান সমস্যাসমূহ দূর করে জাতির সার্বিক শিক্ষার ভীত শক্ত করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা হবে সর্বজনীন, বাধ্যতামূলক, অবৈতনিক এবং সকলের জন্য একই মানের। অর্থনৈতিক, আঞ্চলিক এবং ভৌগোলিক কারণে বর্তমানে শতভাগ শিশুদের প্রাথমিক স্কুলের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। প্রাথমিক শিক্ষার পরিধি ৫ বছর, যা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বৃদ্ধির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য হবে-বাংলাদেশের শিশুর দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক, মানবিক ও নান্দনিক বিকাশ সাধন করা এবং তাদের উন্নত জীবনের স্বপ্ন দর্শনে উদ্বুদ্ধ করা।
বিশিষ্ট কবি ও সংসদ সদস্য কাজী রোজির সভাপতিত্বে সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সোবহান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর এ এম এম সফিউল্লাহ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার উদ্বোধক রফিকুল ইসলাম দাদু ভাই, দৈনিক সমকালের উপসম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, কবি আসলাম সানি, কবি সুজন হাজং ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ফারুক হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বিবার্তা/রাসেল/পলাশ/নাজিম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]