বিদ্যুতের বকেয়া নিয়ে বাংলাদেশকে আদানি গ্রুপের কঠোর বার্তা
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:০০
বিদ্যুতের বকেয়া নিয়ে বাংলাদেশকে আদানি গ্রুপের কঠোর বার্তা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বিদ্যুৎ বিক্রির বকেয়া বাবদ প্রায় ৫০০ মিলিয়ন (৫০ কোটি) ডলার অর্থ পরিশোধের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে কঠোর বার্তা দিয়েছে ভারতের আদানি গ্রুপ।


৯ সেপ্টেম্বর, সোমবার ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, ভারতের ঝাড়খন্ডের ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় বাবদ আদানির কাছে বাংলাদেশের বকেয়া ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।


এ পরিস্থিতিকে আদানি গোষ্ঠী ‘টেকসই নয়’ বলে অভিহিত করেছে। মূলত একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ বিক্রির পাওনা বেড়ে চলার আদানির গোষ্ঠী থেকে এ সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।


ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে আদানি পাওয়ার জানিয়েছে, আর্থিক চাপের সত্ত্বেও আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুতের নির্ভরযোগ্য সরবরাহ বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং তাদের জানিয়েছি যে পরিস্থিতি আর টেকসই পর্যায়ে নেই। কারণ, আমরা একদিকে যেমন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি বজায় রাখছি, অন্যদিকে তেমনই আমাদের ঋণদাতা ও সরবরাহকারীদের কাছে দেয়া অঙ্গীকারও রয়েছে।


বিদ্যুৎ কেনা বাবদ এই বকেয়া মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের জন্য একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে জানিয়ে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এর পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের ক্ষমতা নেয়। আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনাসহ শেখ হাসিনার আমলে করা বিভিন্ন ব্যয়বহুল অবকাঠামো চুক্তির সমালোচনা করেছে নতুন সরকার।


তবে অর্থ পরিশোধের এই দায় বাংলাদেশের সার্বিক জ্বালানি সংকটেরই একটি অংশ। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সংক্রান্ত দায়ের পরিমাণ ৩৭০ কোটি ডলারে উঠেছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, আদানি বাংলাদেশের কাছে ৮০ কোটি ডলার পায়, তার মধ্যে ৪৯ কোটি ২০ লাখ ডলার পরিশোধ বিলম্বিত হয়েছে। দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল করতে অন্তর্বর্তী সরকার এখন বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ঋণদাতার কাছে অর্থসাহায্য চাইছে।


আদানি অবশ্য বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে। তবে ড. ইউনূসের প্রশাসন এমন ইঙ্গিত দিয়েছে যে আগের করা জ্বালানি চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করা হবে। এর উদ্দেশ্য হলো প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র পুনরায় চালু করা এবং নিয়ন্ত্রণমূলক তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করা।


বিদ্যুৎ সরবরাহ বাংলাদেশ থেকে না সরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আদানির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বর্তমানে আমাদের গড্ডা কেন্দ্র ভারতীয় বিদ্যুৎব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত নয়। তাই অন্য কোথাও এই বিদুৎ সরবরাহ করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।’


বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার অর্থ সাশ্রয়ের জন্য একদিকে যেমন বিভিন্ন চুক্তির শর্ত নিয়ে পুনরায় আলোচনা করতে চায়, তেমনই ভারত ও চীনের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রাখতেও আগ্রহী। সরকার জোর দিয়ে বলেছে যে ভবিষ্যতে অবকাঠামো খাতে যত চুক্তি হবে, তাতে অর্থ সাশ্রয় ও স্বচ্ছতার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।


বিবার্তা/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com