
সরকার পরিবর্তনের পর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে লাগাম টেনে ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে দফায় দফায় নগদ টাকা উত্তোলনের সীমা বাড়ানোর ধারাবাহিকতায় এবার যেকোনো ব্যাংকে চেকের মাধ্যমে টাকা তোলার পরিমাণ আরও এক লাখ টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নতুন সপ্তাহের প্রথমদিন রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা তোলার সীমা বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তটি সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে অবহিত করা হয়েছে, সঙ্গে ‘নিরাপত্তার কারণ’ দেখিয়ে ব্যাংকগুলোকে এ নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। অর্থাৎ একজন গ্রাহক চেকের মাধ্যমে একসঙ্গে পাঁচ লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন না।
অর্থ লেনদেন বিষয়ক নির্দেশনায় বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, নিরাপত্তার বিষয়ক কারণে ব্যাংকের শাখাগুলোতে টাকা স্থানান্তর করতে সমস্যা হচ্ছে। সে জন্য চলতি সপ্তাহে ৪ লাখ টাকার বেশি উত্তোলন করা যাবে না। চেকের মাধ্যমে লেনদেন তদারকি জোরদার করতে হবে এবং সন্দেহজনক লেনদেন বন্ধ করতে হবে। তবে নগদ টাকা উত্তোলনে সীমা থাকলেও গ্রাহকেরা যেকোনো পরিমাণ টাকা স্থানান্তর ও ডিজিটাল লেনদেন করতে পারবেন। এখন নগদ টাকা উত্তোলনে সীমা থাকলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই সীমা প্রত্যাহার করা হবে।
এর আগে গত সপ্তাহে নগদ তোলার সুযোগ ছিল সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে নগদ উত্তোলনের সুযোগে আরও ১ লাখ টাকা বাড়িয়ে নতুন সীমা ঠিক করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগের সপ্তাহে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত তোলা যেত। তারও আগের সপ্তাহে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা উত্তোলন করার সুযোগ ছিল। অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে টাকা তোলার সীমা বাড়ানো হয়েছে।
৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর ব্যাংকিং লেনদেনে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ আসে। সেদিন থেকে ব্যাংক থেকে চেকের মাধ্যমে ১ লাখ টাকার বেশি তুলতে না দেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। চেকের মাধ্যমে টাকা তোলার ক্ষেত্রে বা কোনো লেনদেনে সন্দেহ হলে সেটি বন্ধ করতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অবশ্য চেকের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকার বেশি তোলা না গেলেও ডিজিটাল লেনদেনে যেকোনো পরিমাণ টাকা স্থানান্তর করার সুযোগ থাকছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, গত ৫ আগস্টের পর রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রেণির কর্মকর্তারা ব্যাংক থেকে বেশি বেশি টাকা তোলা শুরু করেন। সে কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডি বিভাগ নিয়ন্ত্রণমূলক এই নির্দেশনা দেয়। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ব্যাংক লেনদেনে ‘অতিরিক্তি সতর্কতা’ অবলম্বন করতে সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছে। ব্যাংকগুলোর প্রধান অর্থপাচার নিরোধ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে নির্দেশনাটি দিয়ে রাখে বিএফআইইউ।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]