
বিশিষ্ট রাজনীতিক ও সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা নির্মল সেনের ৯৪তম জন্মদিন আজ শনিবার। ১৯৩০ সালের ৩ আগস্ট গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
নির্মল সেন স্মৃতি সংসদের সভাপতি সাংবাদিক মিজানুর রহমান বুলু বলেন, আমাদের সংগঠন ও নির্মল সেন স্কুল এন্ড মহিলা কলেজের পক্ষ থেকে নির্মল সেনের জন্মদিন পালন উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দিবসের প্রথম প্রহরে নির্মল সেনের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যে দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে। এরপর আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে আমাদের কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটবে।
নির্মল সেনের বাবার নাম সুরেন্দ্রনাথ সেন গুপ্ত। মায়ের নাম লাবণ্য প্রভা সেন গুপ্ত। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নির্মল সেন পঞ্চম। নির্মল সেনের বাবা সুরেন্দ্রনাথ সেন গুপ্ত কোটালীপাড়ার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ সরকারি কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের গণিত শিক্ষক ছিলেন। এর আগে সুরেন্দ্রনাথ সেন গুপ্ত ঢাকার ইস্ট বেঙ্গল ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করতেন।
নির্মল সেনের স্কুল জীবনে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। এরপর তিনি দীর্ঘ দিন শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রাজনীতি করতে গিয়ে নির্মল সেনকে জীবনের অনেকটা সময় জেলে কাটাতে হয়েছে।
দেশ বিভক্তির পর নির্মল সেনের বাবা-মা পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে কলকাতা চলে যান। কিন্তু জন্মভূমির প্রতি অকুণ্ঠ ভালোবাসার কারণে তিনি এদেশে থেকে যান। নির্মল সেন বড় হয়েছেন ঝালকাঠি জেলায় তার পিসির বাড়িতে। তিনি ঝালকাঠি জেলার কলসকাঠি বিএম একাডেমি থেকে ১৯৪৪ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে ম্যাট্রিক পাশ করেন। পিসির বাড়িতে যাওয়ার আগে নির্মল সেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জিটি স্কুলে ৪র্থ শ্রেণিতে এক বছর লেখাপড়া করেন। তিনি বরিশাল বিএম কলেজ থেকে আইএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ও মাস্টার্স পাশ করেন।
১৯৬১ সালে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার মধ্যে দিয়ে নির্মল সেন তার সাংবাদিক জীবন শুরু করেন। তার পর দৈনিক আজাদ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলা পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। তিনি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিষয়ে অতিথি শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন।
নির্মল সেনের লেখা বই- মা জন্মভূমি, আমার জবানবন্দি, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই, বার্লিন থেকে মস্কো, নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য, লেনিন থেকে গরভাচেভ ইত্যাদি বই বেশ সাড়া জাগিয়েছিল।
নির্মল সেন ২০০৩ সালে ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। এর পর দেশে বিদেশে অনেক চিকিৎসার পরে ২০১৩ সালে ৮ জানুয়ারি পরলোকগমন করেন। নির্মল সেনের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দান করা হয়েছে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]