
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদকে হাজির হতে নতুন তারিখ ধার্য করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আগামী ২৩ জুন তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিন ধার্য করেছে প্রতিষ্ঠিানটি।
৬ জুন, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন।
তিনি বলেন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকে দুদক তলব করলেও শুনানিতে অনুপস্থিত থাকায় ২৩ জুন নতুন তারিখ ঘোষণা করেছে দুদক।
এর আগে গত ২৮ মে বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠায় দুদক। ওই নোটিশ অনুযায়ী বেনজীরকে ৬ জুন এবং তার স্ত্রী ও সন্তানদের ৯ জুন দুদকে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। তবে গতকাল বুধবার দুদকের কার্যালয়ে বেনজীরের পক্ষে তার আইনজীবী ১৫ দিনের সময় আবেদন করেন। দুদক সে আবেদন মঞ্জুর করার পর নতুন তারিখ ধার্য করল।
সম্প্রতি এক জাতীয় দৈনিকে সাবেক আইজিপি ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এ শীর্ষ কর্মকর্তা।
জাতীয় ওই দৈনিকে ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে তার নানা অর্থ সম্পদের বিবরণ তুলে ধরা হয়।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেনজীরের বিপুল সম্পদের মধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামের এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র। এছাড়া তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে।
প্রতিবেদনে আরো দাবি করা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার কাছের এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।
অথচ গত ৩৪ বছর সাত মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদ বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় ১ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা।
বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকে চিঠি দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। পরে দুদক অনুসন্ধান শুরু করে।
দুদক আইন অনুযায়ী, এরপর বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব চেয়ে তাদের ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হবে। তাদের ঠিকানায় কাউকে না পাওয়া গেলে ভবনের ওয়ালে নোটিশ টানিয়ে জারি করা হবে। তারা সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সময় চেয়ে আবেদন করতে পারবেন। এসব ক্ষেত্রে তারা কার্যকর ভূমিকা না রাখলে আইন অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। পরে মামলা তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়া হবে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]