বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৪, ২১:১৫
বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশের বাজারে অ্যামাজন, বোয়িং, শেভরন, মেটা, কোকাকোলাসহ বেশ কিছু যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ব্যবসা করতে চায় বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।


২৮ মে, মঙ্গলবার দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।


তিনি আরো বলেন, জাতীয় লজিস্টিক নীতি ২০২৪ মাধ্যমে সেন্টার ওয়্যারহাউস সুবিধা থাকবে, সেখান থেকে অ্যামাজন পণ্য সংগ্রহ করে সেগুলো আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিকভাবে সাপ্লাই করবে। আমরা সেন্ট্রাল ওয়্যারহাউজের মাধ্যমে গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে যুক্ত হবো। আমদানি করা ইউএস কটন থেকে তৈরি পণ্য কীভাবে সে দেশের বাজারে ঢুকতে পারে সেজন্য তারা কাজ করবেন।


প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন, অ্যামাজন সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম৷ আমরা সেন্টার ওয়্যারিং হাউস তৈরি করব। তারা সেখান থেকে পণ্যগুলো সংগ্রহ করবে৷ এরপর তারা সেগুলো আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে বিক্রি করবে।


বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু আরো বলেন, তারা এ দেশের ই-কমার্স বিজনেস থেকে শুরু করে এ দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার বিভিন্ন বিনিয়োগ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে যেনো সহজে ব্যবসা করতে পারে সেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্যবসায় যাতে কোনও প্রতিবন্ধকতা না থাকে, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া, নতুন নতুন আমেরিকান কোম্পানি যারা বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহী যেমন আজকে অ্যামাজন আসছিল। তারা কীভাবে বাংলাদেশের পণ্য এখানে যুক্ত করতে পারে, কীভাবে বাংলাদেশের মার্কেট এই গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে যুক্ত হতে পারে, এই সুযোগ-সুবিধাগুলো আমাদের এখানে আসছে। আমাদের লক্ষ্য বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, এতে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরো শক্তিশালী হবে।


তিনি আরও বলেন, আমাদের ৯০ শতাংশ ব্যবসা গার্মেন্টসে৷ এখানে কিন্তু গার্মেন্টসের কেউ ছিল না। তারা মূলত এ দেশের ই-কমার্স ইনফ্রাসট্রাকচার, ই-কমার্স বিজনেস থেকে শুরু করে এ দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলেছে। এখানে শেভরনের প্রতিনিধি ছিল। টেলকোর প্রতিনিধিরা ছিল। ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডের প্রতিনিধিরা ছিল। এখানে স্টার্ট-আপ পর্যায় থেকে আরম্ভ করে একেবারে বোয়িং পর্যন্ত তাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। মূলত এখানে তিনটি জিনিস কাজ করবে সেগুলো হলো- বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এখন মার্কেট অ্যাকসেস নিয়ে কাজ করছে। এই মার্কেট অ্যাকসেসটা ইজিয়ার হবে যদি স্মার্ট বাংলাদেশ ফর স্ট্রাটেজিক গ্রোথের সাজেশনগুলো যদি অ্যাডাপ্ট করতে পারি।


আহসানুল ইসলাম বলেন, দ্বিতীয়ত, ইউএসএর যে ইনভেস্টমেন্ট, সেটি আরও সহজে কীভাবে বাংলাদেশে আসবে। সে বিজনেসটা যেন ইনোভেশনের মধ্যে থাকে এবং আমাদের মূল টার্গেট এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশনে হেল্প করে। আর সবশেষে বাংলাদেশ এবং ইউএসএর মধ্যে সম্পর্ক আরও শক্তিশালীকরণ।


প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা কটন নিয়ে কথা বলেছি। আমরা ইউএস কটনের বড় আমদানিকারী দেশ। সেই ইউএস কটন থেকে তৈরি করা পণ্য কীভাবে মার্কেট অ্যাকসেস পেতে পারে, সেজন্য তারা কাজ করবে।


বাংলাদেশ এমন কোনও পলিসি করবে কি না, যার মাধ্যমে দেশের বাইরে ট্রানজেকশন করা যায়? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই। আমরা সেন্ট্রাল ওয়্যার হাউজের মাধ্যমে গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে যুক্ত হব।


বৈঠকে এফবিসিসিআই এর প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলমসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় দেশীয় হস্তশিল্পের বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শনী করা হয়।


তিনি বলেন, আমাদের নেগেটিভ কোনও আলোচনা হয়নি, সব পজিটিভ আলোচনা হয়েছে। আমরা একক কোনো কোম্পানির ব্যবসায়িক প্রমোশনের জন্য এখানে বসিনি। তারা ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এসেছে। তারা (ইউএসএর প্রতিষ্ঠানগুলো) আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে চায়। তারা তাদের কোনও ব্যবসায়িক লাভ নিয়ে আলোচনা করেনি। বরং তারা আমাদের আর্থসামাজিক ব্যবসায়িক পরিবেশ কীভাবে উন্নয়ন করা যায়, সেসব নিয়ে আলোচনা করেছে। একইসঙ্গে আমাদের দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশ কীভাবে ভালো করা যায়, সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।


কিছু কিছু মার্কিন কোম্পানি বাংলাদেশের পুঁজিবাজার থেকে তাদের বিনিয়োগ উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ সময়ে সোশ্যাল বিজনেস গুরুত্বপূর্ণ না কি যারা বড় বিনিয়োগ থেকে মুখ ফেরাচ্ছে তাদের ফেরানো গুরুত্বপূর্ণ? এ প্রশ্নের জবাবে আহসানুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ দেশের মার্কেট যেখানে অ্যাকসেস পাবে এবং ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেট যারা আগ্রহ নিয়ে আমাদের দেশে আসবে। যেমন- ফেসবুক, অ্যামাজন, শ্যাভরন, কোক ও বোয়িং। তারা যদি বাংলাদেশের বিজনেস ভ্যালু অ্যাডিশনের সাথে যুক্ত হয়, তাহলে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার যে পথ, সেটি সহজ হবে।


বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আরো বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ এলডিসি উত্তরণ হতে যাচ্ছে। ২০২৪ থেকে ২০২৬ এ দুই বছরের মধ্য বিভিন্ন দেশের মার্কেটে অ্যাকসেস পেতে মন্ত্রণালয় এখন কাজ করছে। এ ধরনের বড় কোম্পানি যখন কোনও চেম্বারের মাধ্যমে আসে, বাংলাদেশের টেকসই ভবিষ্যৎ দেখেই আসে। আমরা চেষ্টা করব কীভাবে আমাদের পলিসি দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে পারি। বাংলাদেশ কোনও ছোট মার্কেটপ্লেস নয়। এটা ৩৩০ মিলিয়ন মানুষের মার্কেট৷ সুতরাং তারা বড় একটি জনসমুদ্র দেখেই এসেছে। এ দেশে আগামী পাঁচ বছর একটা স্থিতিশীল সরকার থাকবে এবং আগামী পাঁচ বছর তারা উন্নয়নে কাজ করবে, সেই মানসিকতা নিয়েই তারা এখানে এসেছে। তাদের মাধ্যমে আমাদের নতুন বাজার সম্প্রসারণ এবং নতুন কোম্পানি এ দেশে আসার পথ উন্মুক্ত হবে।


এদিকে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সঙ্গে আজ রাশিয়ার ট্রেড কমিশনার ডক্টর আলেকজান্ডার রাইবাস এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় টেলিকমিউনিকেশন, অফসোর ব্যাংকিং সুবিধাসহ বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্প্রসারণের বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করা হয়।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com