শিরোনাম
পিরোজপুরে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০১৭, ১২:২০
পিরোজপুরে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি
পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বর্তমান সরকারের বহুমুখী ও সময়োপযোগী কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন ও যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ফলে উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরে ইলিশের উৎপাদন প্রতি বছর ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি অর্থ বছরের ইলিশ মৌসুমে বিপুল সংখ্যক ইলিশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা ও জেলেরা।


বলেশ্বর, কচা, কালিগঙ্গা, গাবখান, মধুমতিসহ ২১টি নদ-নদী বেষ্টিত পিরোজপুর জেলার ভৌগোলিক অবস্থান বঙ্গোপসাগরের অদূরবর্তী হলেও ক্রমাগত মাছের আকালে জেলেরা চরম সংকটে পড়ে। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে পর্যায়ক্রমে তা বাস্তবায়ন শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় মা-ইলিশ এবং জাটকা নিধন বন্ধে বিভিন্ন কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়।


পিরোজপুর জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মোশারেফ হোসেন জানান, ডিম ছাড়ার জন্য ঝাঁকে ঝাঁকে মা-ইলিশ নোনা পানির সাগর থেকে মিঠে পানির নদ-নদীতে চলে আসে। আর এসময় জেলেরা মা-ইলিশ শিকারে জাল পেতে নদ-নদী ছেয়ে ফেলে।


চলতি অর্থ বছরের ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত মা-ইলিশ শিকার বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ সময় এ জেলায় প্রায় ৭০ লক্ষ টাকার জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দেয়া হয় এবং শতাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতিদিন নদ-নদীতে অবৈধভাবে ইলিশ শিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। এ সময় আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতা সৃষ্টি, ১৪ হাজার ৮শ ৭৫ জেলে পরিবারকে বিনামূল্যে ২০ কেজি করে ৩শ মেট্রিক টন চাল প্রদান, অবৈধ জাল জব্দ করে বৈধ জাল প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ণ করা হয়।


জেলা মৎস্য অফিসের একটি সূত্র জানায়, এবার অনেকটাই অবাধে ডিম ছেড়ে মা-ইলিশ সাগরে ফিরে যেতে পেরেছে। ইলিশের লাখ লাখ পোনা নদ-নদীতে বিচরণ করে পূর্ণ ইলিশে রুপান্তরিত হয়ে সাগরে ফিরে যাবে। এ সময় এই জাটকা নিধন ও কঠোর হস্তে দমন করার লক্ষ্যে ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ‘জাটকা মাছ রক্ষা পেলে, খাদ্য-অর্থ দুই মেলে’ -স্লোগানকে সামনে রেখে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ সময় এ জেলায় ৯ হাজার ৯শ ৫১ জেলে পরিবারকে প্রতিমাসে ৪০ কেজি করে চার মাসে ১ হাজার ৫শ ২৮ মেট্রিক টন বিনামূল্যে চাল প্রদান করবে সরকার।


প্রকৃত জেলেদের আইডি কার্ড প্রদানের পাশিপাশি মাছ শিকারের সময় সাগর বা নদীতে মৃত্যু হলে প্রতিটি পরিবারকে নগদ ৫০ হাজার টাকা প্রদানেরও কার্যক্রম বর্তমান সরকার শুরু করেছে। এ সব পদক্ষেপের ফলে এ জেলায় ইলিশের উৎপাদন ইতিমধ্যেই বৃদ্ধি পেয়েছে।


জেলা মৎস্য অফিসের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে এ জেলোর ৪-৫টি নদনদীতে মাত্র ৩ হাজার ৪শ ৭৩ মেট্রিক টন ইলিশ ধরা পড়লেও চলতি বছরে শুধুমাত্র সেপ্টেম্বরে পাওয়া গেছে দেড় হাজার মেট্রিক টন ইলিশ। যা ২০১৫ সালে একই সময়ে ছিল ৪ শ মেট্রিক টন। এছাড়া এ জেলার অন্তত ১০টি নদীতে এবার ইলিশের প্রাচুর্য্য লক্ষ্য করা গেছে।


পাড়েরহাটের জেলে কুদ্দুস পশারী জানান, এ বছর মা-ইলিশ নিধন বন্ধে এবং জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ করে সরকারি বিভিন্নমুখী পদক্ষেপের ফলে চলতি বছর এবং আগামী বছরগুলোতে এ জেলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সকল নদ-নদীতে মাছ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। এ জেলায় চলতি অর্থ বছরে ইলিমের উৎপাদন প্রায় ৫ হাজার টনে পৌছাবে বলে আশা প্রকাশ করছেন মৎস্য বিভাগ। এর ফলে প্রকৃত অর্থে উপকৃত হবে জেলেরা এবং স্থানীয়রা কমমূল্যে ইলিশ ক্রয় করতে পারবে।


বিবার্তা/প্লাবন/সফিকুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com