
খালে ময়লা ফেললে আইনের আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, খালে যারা বর্জ্য ফেলবে আমি যদি দেখতে পারি তাহলে চোর চুরি করলে যেমন আইনের ধারায় শাস্তি হয় ঠিক তেমনি এদের জরিমানা করা হবে।
১৫ মে, বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলশান-২ ডিএনসিসির নগর ভবনের সামনে সপ্তাহব্যাপী চলমান বর্জ্য প্রদর্শনী পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন খালে, ড্রেনে ও যত্রতত্র ফেলে দেয়া বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য সংগ্রহ করে সপ্তাহব্যাপী বর্জ্য প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ডিএনসিসি। গুলশান-২ ডিএনসিসি`র নগর ভবনের সামনের রাস্তায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। ১১ মে থেকে শুরু হওয়া এই প্রদর্শনী ১৭ মে পর্যন্ত চলবে।
প্রদর্শনী পরিদর্শন শেষে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, এই শহরে আমরা থাকি, এই শহরেই আমরা উপার্জন করি। এই শহরে আমাদের ছেলেমেয়েরা পড়ালেখা করে। অথচ আমরা এই শহরের খালে ফ্রিজ, লেপ, তোশক, সোফা ফেলে দেই। আমি যেটা মনে করি অবশ্যই আমাদের নিজেদের একটা ইচ্ছা দরকার। যিনি ঢাকা শহরে বাস করেন তিনি কীভাবে একটা নষ্ট ফ্রিজ খালের মধ্যে ফেলতে পারে। সর্বপ্রথম আমাদের মানসিকতা চেঞ্জ (পরিবর্তন) করতে হবে। একটা সোফা বা একটি জাজিম কিন্তু কোনোভাবেই খালের মধ্যে ফেলা যায় না। এগুলো কিন্তু অহরহ আমরা আমাদের ড্রেন এবং খাল থেকে উদ্ধার করছি। ড্রেনে প্লাস্টিকের বোতলে ভর্তি। এসবের ফলে একটু বৃষ্টি হলেই বিভিন্ন ধরনের ট্রল হচ্ছে, যে রাস্তায় পানি জমে যাচ্ছে। কিন্তু পানিটা কি জন্য জমে যাচ্ছে এটা আমরা কেউ চিন্তা করি না।
তিনি বলেন, আমাদের সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) আছে। আমরা মেইন বর্জ্য যেখানে ফেলি সেটা হচ্ছে আমিনবাজার ল্যান্ড ফিল্ড। আমাদের বিভিন্ন এলাকাতেও সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন আছে। সেখানে কিন্তু ইজিলি আমরা বর্জ্য ফেলতে পারি। আসলে ইচ্ছাটা থাকতে হবে।
মেয়র আরও বলেন, বর্জ্য-প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে, যাতে নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতার সৃষ্টি হয়। জনগণ যেন বুঝতে পারে কি ধরনের বর্জ্য ড্রেনে ও খালে ফেলে পরিবেশ দূষণ করছে এই জন্যই এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছি। এই উদ্যোগ বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করছে।
তিনি বলেন, রাতের আঁধারে চোর যেভাবে চুরি করে, ডাকাত যেভাবে ডাকাতি করে তাদের থেকেও খালে নোংরা ফেলছে যারা তারা বড় অপরাধী। শহরকে পরিষ্কার করার জন্য আমাদের নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে। এ শহর আমাদের। এখানে আমরা থাকি। এখান থেকে উপার্জন করি। এখান থেকে পড়ালেখা করি। আমাদেরও কিন্তু দায়িত্ব আছে। দায়িত্বটা কি? নির্দিষ্ট ময়লা নির্দিষ্ট জায়গা যেন ফেলি। না হলে কিন্তু অল্প বৃষ্টিতেই আমাদের ড্রেনগুলো আটকে যাচ্ছে, খালগুলো আটকে যাচ্ছে। এখানে দুই ধরনের চ্যালেঞ্জ। একটা হলো মানুষের পয়ঃবর্জ্য। আরেকটি হলো কঠিন বর্জ্য। আমি বলেছি যারা যারা বর্জ্য ফেলবে আমি যদি দেখতে পারি তাহলে চোর চুরি করলে যেমন আইনের ধারায় শাস্তি হয় ঠিক তেমনি এদের জরিমানা করা হবে। এদের যদি আমরা ধরতে পারি তাহলে তাদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে যাবো।
তিনি বলেন, আমাদের নিজেদের শহরকে ভালোবাসতে হবে। এ নগর থেকে আমরা সবাই নিচ্ছি আর নিচ্ছি। আমাদের কিন্তু সময় এসেছে দেওয়ার জন্য। দেয়াটা কি? নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলা, নিজের শহরকে পরিষ্কার রাখা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, উত্তর সিটি এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলের ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ প্রমুখ।
বর্জ্য প্রদর্শনীতে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমান, সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর আমেনা বেগম এবং নিলুফার ইয়াসমিন ইতি প্রমুখ।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]