
অবশেষে নিত্যপণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে ধান, চাল, গম, আটা ও আলু। আর যুক্ত হচ্ছে বিদ্যুৎ। তবে এবারও স্বীকৃতি পাচ্ছে না পানি। আর নিত্যপণ্যের তালিকা থেকে বাদ পড়ছে সিগারেট, কয়লা ও কাঠ।
এছাড়া সাবান, কীটনাশক, ডিটারজেন্ট পাউডার, টুথপেস্ট- এগুলো সমাজের সর্বস্তরে প্রতিদিন কমবেশি ব্যবহৃত হলেও নিত্যপণ্য হিসেবে আইনি স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে না।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তৈরি প্রস্তাবিত অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন, ২০২৪-এর খসড়া বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে। এই আইনটির নাম ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৫৬’। এটি পাল্টিয়ে করা হচ্ছে ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন, ২০২৪’।
২০১২ সালে একবার সরকার অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকা সংশোধন করে। তখন ১৭ ধরনের পণ্যকে নিত্যপণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
মঙ্গলবার (৭ মে) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. হাফিজ আল আসাদের স্বাক্ষরিত এক নোটিশসহ খসড়াটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, ‘দ্য কন্ট্রোল অব এসেনসিয়াল কমোডিটিজ অ্যাক্ট-১৯৫৬’ অনুযায়ী বাংলায় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন, ২০২৪ প্রণয়নের লক্ষ্যে প্রস্তুতকৃত খসড়া অধিকতর মতামত দেওয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। পরবর্তী ০১ (এক) সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে মতামত দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয় তাতে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, তালিকায় থাকলে দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার যেকোনো সময় ব্যবস্থা নিতে পারে। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে কেউ কারসাজি করলে, লম্বা সময়ের জন্য মজুত রাখলে বা কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে তখন আইনি পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হয়। শুধু মূল্য নিয়ন্ত্রণ নয়, আইন অনুযায়ী অত্যাবশ্যকীয় নিত্যপণ্যের উৎপাদন ও বিপণন নিয়ন্ত্রণ করারও ক্ষমতা রাখে সরকার।
জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ২০১২ সালের জুলাইয়ে ১৭টি পণ্যকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ঘোষণা করে। এগুলো হচ্ছে পেঁয়াজ, রসুন, মসুর ডাল, ছোলা, শুকনা মরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচি, ধনে, জিরা, আদা, হলুদ, তেজপাতা, সয়াবিন তেল, পাম তেল, চিনি ও খাওয়ার লবণ। চিনি ও ভোজ্যতেল মূল আইনেও ছিল, ২০১২ সালেও নতুন করে উল্লেখ করা হয়।
অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের মধ্যে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে-
১. খাদ্যদ্রব্য যার মধ্যে ধান, চাল, গম ও আটা, আলু, বীজ ও চারা, মশুর ডাল, ছোলা, ভোজ্য তেল ও তৈলবীজ, পেঁয়াজ, রসুন, শুকনা মরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, ধনে, জিরা, আদা, হলুদ, চিনি, খাবার লবণ (বিট লবণ ব্যতীত), চিনি, গুড়, মাছ, মৎস্যজাত খাদ্য, মাংস, দুধ, ডিম;
২. শিশু এবং রোগীর খাবার এবং অনুরূপ দ্রব্যাদি;
৩. ওষুধপত্র, সেইসাথে যা ইনজেকশনের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়;
৪. চিকিৎসা এবং শৈল্য চিকিৎসার যন্ত্রপাতি এবং চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি;
৫. কাগজ, নিউজপ্রিন্ট;
৬. সার;
৭. জ্বালানি তেল (পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিন, ফার্নেস অয়েল);
৮. গ্যাস (পাইপলাইনে সরবরাহকৃত গ্যাস ও এলপিজি) ও রাসায়নিক দ্রব্যাদি;
৯. বিদ্যুৎ (সৌর বিদ্যুৎসহ);
১০. লোহা ও ইস্পাত;
১১. সিমেন্ট;
এছাড়াও অন্যান্য পণ্য, যা সরকার কর্তৃক এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সময়ে সময়ে গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা অব্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে ঘোষিত হওয়ার কথা জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]