
রাজধানীর সদরঘাটে পন্টুনের সঙ্গে বেঁধে রাখা একটি লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে পাঁচ যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তাদের সাত দিন করে রিমান্ড পেতে ইতিমধ্যে আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) রাতে ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা) ইসমাইল হোসাইন বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
নৌ পুলিশের সদরঘাট থানার ডিউটি অফিসার এসআই নকিব জানান, শুক্রবার সকালে সংস্থাটির যুগ্ম পরিচালক ইসমাইল হোসেন বাদি হয়ে পাঁচ জনকে আসামি করে এ মামলা করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ওই পাঁচ জনকে আটক করে নৌ পুলিশ।
সদরঘাট নৌ থানা সূত্রে জানা যায়, এ মামলায় গতকাল আটক ৫ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) আদালতে পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন, তাসরিফ -৪ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার মো. মিজানুর রহমান (৪৮), দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মো. মনিরুজ্জামান (২৭), এম ভি ফারহান-৬ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার মো. আবদুর রউফ হাওলাদার (৫৪), দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মো. সেলিম হাওলাদার (৫৪) ও ম্যানেজার মো. ফারুক খান (৭০)।
এদিকে ঢাকা নৌপুলিশের এসপি ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, অনিয়ন্ত্রিত বার্দিং এবং লঞ্চ চালনায় স্বেচ্ছাচারিতার কারণে এই প্রাণহানী ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা যাচ্ছে।
তিনি জানান, ফারহান লঞ্চ কর্তৃপক্ষ নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে এক লাখ করে টাকা দেবে।
বৃহস্পতিবার রাতে এমভি ফারহান-৬ ও এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চ দুটির রুট পারমিট ও সময়সূচি স্থগিত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে প্রত্যেক মৃত ব্যক্তির নমিনির কাছে দাফন বাবদ ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
অপরদিকে সদরঘাট নৌ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লিয়াকত আলী বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে নিহতদের মরদেহ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গ থেকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে সদরঘাট ১১নং পন্টুনের সামনে এমভি তাশরিফ ৪ নামে একটি লঞ্চ ও এমভি পূবালী ১ নামে আরও একটি লঞ্চ রশি দিয়ে পন্টুনে বাঁধা ছিল। এ দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে ফারহান নামে আরেকটি লঞ্চ ঢুকানোর সময় এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে গেলে পাঁচ যাত্রী লঞ্চে উঠার সময় গুরুতর আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এমভি তাসরিফ-৪ ও এমভি পূবালী-১ লঞ্চ দুটি রশি দিয়ে সদরঘাটের পন্টুনে বাঁধা ছিল। এ দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে ফারহান নামে আরেকটি লঞ্চ ঢুকে পড়ে। এ সময় ওই লঞ্চের ধাক্কায় পন্টুনে বেঁধে রাখা এমভি তাসরিফ-৪-এর দড়ি ছিঁড়ে গেলে যাত্রীরা নিচে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]