বিশ্বের সম্ভাব্য সকল স্থানে রফতানি বাজারকে ছড়িয়ে দিতে হবে: রাষ্ট্রপতি
প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:১৬
বিশ্বের সম্ভাব্য সকল স্থানে রফতানি বাজারকে ছড়িয়ে দিতে হবে: রাষ্ট্রপতি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। বিশ্বের সম্ভাব্য সকল স্থানে আমাদের রফতানি পণ্যের বাজারকে ছড়িয়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।


২৭ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার জাতীয় বস্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।


এ সময় বস্ত্রখাতে বিনিয়োগ, উৎপাদনশীলতা, কর্মসংস্থান ও রফতানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে শিল্পপতি, শিল্প উদ্যোক্তাগণসহ দেশপ্রেমিক নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান মো. সাহাবুদ্দিন।


কয়েকটি পণ্যের ওপর নির্ভর না করে রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা বাড়ানোর জোর তাগিদ দিয়ে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কূটনৈতিক মিশনগুলোকে কাজে লাগাতে হবে এবং অর্থনৈতিক কূটনীতিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।


তিনি বলেন, কোন দুষ্টচক্র বা স্বার্থান্বেষী মহল যাতে উৎপাদনমুখী কারখানার পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে সে ব্যাপারে ব্যবসায়ী নেতাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। সরকার সবসময় আপনাদের পাশে আছে ও থাকবে।


সাহাবুদ্দিন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কারিগরি শিক্ষা সম্প্রাসারণ ও দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী শিল্পপতি ও বিনিয়োগকারীদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।


তিনি বলেন, পূর্বের যেকোনো সময়ের তুলনায় বৈদেশিক বাণিজ্য এখন অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং, প্রতিযোগিতামূলক এবং জ্ঞান ও নীতিমালাভিত্তিক। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দদের এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।


ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ও পারিশ্রমিক নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকরাই উৎপাদনমুখী শিল্পের চালিকাশক্তি। কারখানা ও শ্রমিক একে-অপরের পরিপূরক। শ্রমিক ভালো থাকলে কারখানা ভালো থাকবে। মনে রাখতে হবে আপনারা শুধু মুনাফার জন্য ব্যবসা পরিচালনা করছেন না। আপনাদের সামাজিক দায়িত্বের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে।


তিনি বলেন, তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সক্ষম, শক্তিশালী, নিরাপদ ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদানুযায়ী ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন নতুন প্রযুক্তিসমূহকে সাদরে গ্রহণ করতে হবে।


দেশের সমাজ, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানে বস্ত্র ও পাট খাতের ভূমিকা অপরিসীম উল্লেখ করে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা বিবেচনায় বস্ত্র খাতের সম্প্রসারণের লক্ষ্যে নানামুখী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।


তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে বস্ত্র শিল্পের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের সর্ববৃহৎ শ্রমঘন এই সেক্টরে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যমে ‘স্মার্ট টেক্সটাইল’ সেক্টর গড়ে তোলা সম্ভব।


সাহাবুদ্দিন বলেন, বর্তমানে বস্ত্রখাত আমাদের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে শুধু জাতীয় অর্থনীতিকেই সমৃদ্ধ করেনি, একই সঙ্গে নিশ্চিত করেছে অগণিত মানুষের কর্মসংস্থান যার ৮০ শতাংশ মহিলা এবং পরোক্ষভাবে প্রায় এক কোটি মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস।


তিনি জানান, দেশের মোট রফতানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ বস্ত্র শিল্প থেকে অর্জিত হচ্ছে। গ্রামীণ দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে বস্ত্রখাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।


তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্পের ইতিহাস সুপ্রাচীন এবং গৌরবময়। বর্তমান সরকারের নেওয়া সকল কার্যক্রম বাংলাদেশের বিকাশমান বস্ত্রখাতকে আরও সমৃদ্ধ করবে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিকট আকর্ষণীয় করে তুলবে।


অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক। অন্যদের মধ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন এবং বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারারর্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সহ সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ আযম বক্তব্য দেন।


অনুষ্ঠানে ১১টি প্রতিষ্ঠান-ব্যবসায়ীকে রাষ্ট্রপতির সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। সূত্র: বাসস


বিবার্তা/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com