মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তৎপরতা থাকা সত্ত্বেও দেশে প্রায় ৩০ ধরনের মাদক সেবন চলে। তবে এসব মাদকদ্রব্যের মধ্যে কোকেনের বাজারমূল্য অনেক বেশি। অন্যান্য মাদকের চেয়ে এটির বেচাকেনা কম। তবে কোকেন পাচারের রুট হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করছে আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান চক্র।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার পৃথক অভিযানে শতকোটি টাকার বেশি কোকেনসহ দুই বিদেশি নাগরিককে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তবে কার মাধ্যমে কোন দেশে এসব কোকেন পাচার করা হচ্ছিল, তা জানতে তদন্ত করছে সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে যত মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়, এর চেয়ে অনেক বেশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে সেবনকারীদের হাতে পৌঁছে যায়। দেশে মাদকদ্রব্য আসা রোধে আকাশ ও নৌপথ এবং স্থল সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো জরুরি।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে ২০০ গ্রাম কোকেনসহ তানজানিয়ার মোহাম্মদি আলী (৫৫) নামের এক নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) ও বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) একটি দল তাদের ডগ স্কোয়াডের সহায়তায় এ অভিযান চালায়।
এ বিষয়ে বিমানবন্দর এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এপিবিএন ও ডিএনসির যৌথ দল উত্তরার হোটেল এফোর্ড ইনে অভিযান চালায়। হোটেলে অবস্থান করা মোহাম্মদি আলীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি মাদক থাকার কথা অস্বীকার করেন।
এসময় এপিবিএনের ডগ স্কোয়াডের সহায়তায় মোহাম্মদি আলীর কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে কালো একটি ব্যাগে লুকানো ২০০ গ্রাম কোকেন উদ্ধার করা হয়।
এপিবিএন জানায়, মোহাম্মদি আলী তানজানিয়ার নাগরিক। গত ২০ জানুয়ারি তিনি আদ্দিস আবাবা থেকে কাতারের দোহা হয়ে ঢাকায় আসেন। হোটেল এফোর্ড ইনের একটি কক্ষ ভাড়া নেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আট কেজি ৩০০ গ্রাম কোকেন জব্দসহ পূর্ব আফ্রিকার দেশ মালাবির নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো (৩৫) নামের এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিএনসি বলেছে, নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো মালাবির নাগরিক এবং সেখানের একটি হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে চাকরি করেন। তিনি বাংলাদেশি কারো কাছে ওই কোকেন পৌঁছে দিতে এসেছিলেন। কোকেন চোরাচালানে আন্তর্জাতিক চক্র বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করতে সোকোর মাধ্যমে এই চালান এনেছিল।
পর পর দুই দিনে গ্রেফতার দুই বিদেশি নাগরিক এসব কোকেন কোথায় বা কোন দেশে পাচার করছিলেন, দেশের কেউ এতে জড়িত কি না—এমন প্রশ্নে ডিএনসির পরিচালক (অপারেশন ও গোয়েন্দা) তানভীর মমতাজ জানান, কোন দেশ থেকে এগুলো তারা সংগ্রহ করেছিলেন এবং কোন দেশে পাচার করার কথা ছিল, তা সঠিকভাবে জানতে একটু সময় লাগবে। দুজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]