এবার এনটিএমস’র তথ্যভাণ্ডার থেকে বাংলাদেশিদের ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ২২:৪৬
এবার এনটিএমস’র তথ্যভাণ্ডার থেকে বাংলাদেশিদের ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত
বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশের মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হওয়ার ঘটনা আবারও ঘটল। চার মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশে একটি সরকারি ওয়েবসাইট থেকে আবারও নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হওয়ার খবর এসেছে। এবারের তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশের সংস্থা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি)।


মার্কিন প্রযুক্তি বিষয়ক সাময়িকী ওয়্যার্ডের খবরে বলা হয়েছে, ফাঁস হওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে নাগরিকের নাম, পেশা, রক্তের গ্রুপ, মা-বাবার নাম, ফোন নম্বর, বিভিন্ন ফোনকলে তিনি কত সময় কথা বলেছেন সেই হিসাব, গাড়ির নিবন্ধন নম্বর, পাসপোর্টের বিস্তারিত তথ্য ও আঙুলের ছাপের ছবি।


বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) ওয়্যার্ড ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।


এবার তথ্য ফাঁসের ওই ঘটনা ঘটেছে সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) একটি তথ্যভাণ্ডার থেকে, যারা ফোনে আড়ি পাতার এখতিয়ার রাখে এবং আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে নজরদারি করে।


প্রতিবেদনে বলা হয়, মাসের পর মাস ধরে নাগরিকদের মোবাইল ফোন কল ও ইন্টারনেট কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ করা গোয়েন্দা সংস্থা এনটিএমসি তার সিস্টেমে একটি অরক্ষিত তথ্যভাণ্ডারে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করে আসছে। গত সপ্তাহে অজ্ঞাত হ্যাকাররা উন্মুক্ত এই তথ্যভাণ্ডারে হাত দেয়। সিস্টেম থেকে বিপুল তথ্য চুরির দাবি করেছে তারা।


তবে প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদ মাধ্যমটির এই খবর ‘সঠিক নয়’ বলে দাবি করেছেন এনটিএমসির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, প্রকাশিত তথ্য সঠিক নয়। এটা স্যাম্পল ডেটা, স্যাম্পল ডেটা সবসময় আরঅ্যান্ডডির জন্য…. নেওয়া হয়। দিস ইজ নট আরজিনাল ডেটা।


এর আগে বাংলাদেশের সরকারি একটি ওয়েবসাইট থেকে লাখ লাখ নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার খবর দিয়েছিল আমেরিকান ওয়েবসাইট টেকক্রাঞ্চ।


সেবার বাংলাদেশি নাগরিকদের সম্পূর্ণ নাম, ফোন নম্বর, ইমেইল ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরসহ ব্যক্তিগত তথ্য উন্মুক্ত হয়ে ছিল ইন্টারনেটে। পরে জানা গিয়েছিল, তথ্য উন্মুক্ত হয়ে পড়ার ওই ঘটনা ঘটেছে জাতীয় জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন ওয়েবসাইট থেকে।


এবার এনটিএমসির ক্ষেত্রে কিছু নাম, ফোন নম্বর, ইমেইল এড্রেস যাচাই করে ওয়্যার্ড বলছে, সংগৃহীত তথ্যের সঠিক প্রকৃতি ও উদ্দেশ্য অস্পষ্ট। কিছু তথ্যকে পরীক্ষামূলক, ভুল ও আংশিক রেকর্ড বলে মনে হয়েছে।


এনটিএমসির ওই ‘অনিরাপদ’ তথ্যভাণ্ডারের খোঁজ পেয়েছিলেন ‘ক্লাউডডিফেন্স.এআই’ এর নিরাপত্তা গবেষক ভিক্টর মার্কোপোলোস। এর আগে গত জুলাইয়ে ইন্টারনেটে বাংলাদেশিদের ব্যক্তিগত তথ্য উন্মুক্ত হয়ে থাকার খবরটিও মার্কোপোলোসই দিয়েছিলেন।


তিনি বলেন, কোনো গোয়েন্দা সংস্থার ক্ষেত্রে এমনটি ঘটবে, তা আমি আশা করিনি। এমনকি সেসব তথ্য যদি স্পর্শকাতর না হয়, তারপরও।


মার্কোপোলোস বলেছেন, উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার আবিষ্কারের পর তিনি এনটিএমসির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি মনে করেন, কোনো ‘মিসকনফিগারেশনের’ কারণে তথ্যভাণ্ডারটি উন্মুক্ত হয়ে ছিল।


এনটিএমসির ওই উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডারের বিষয়ে বাংলাদেশের কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমকে (সিআইআরটি) গত ৮ নভেম্বর অবহিত করার কথা বলেছেন মার্কোপোলোস। সিআইআরটি তার বার্তা গ্রহণ করে ‘ধন্যবাদও’ জানায়। এরপর ওয়্যার্ড একই বিষয়ে জানতে চাইলে এক ইমেইলে সিআইআরটি জানায়, বিষয়টি তারা এনটিএমসিকে ‘অবহিত করেছে’।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com