কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা সিন্ডিকেট করে আলুর দাম বাড়াচ্ছে : কৃষিমন্ত্রী
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:০৪
কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা সিন্ডিকেট করে আলুর দাম বাড়াচ্ছে : কৃষিমন্ত্রী
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, কোল্ড স্টোরেজে মোটামুটি আলু আছে। আমরা আলুর যে দাম স্থির করে দিয়েছিলাম, তাতেও তাদের লাভ হওয়ার কথা। কিন্তু সেই দামের ধারেকাছেও তারা থাকছে না। কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা একটি সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। কিন্তু পরিস্থিতি এমন যে, কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা আলু বের করেন না, লুকিয়ে রাখেন।


৩০ অক্টোবর, সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।


কৃষিমন্ত্রী বলেন, আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুরোধ করা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে আলু আমদানি করতে চায় তারা। আমরাও সার্বিক দিক বিবেচনা করে দেখেছি, এত দাম দিয়ে মানুষ আলু কিনতে পারছে না। আন্তর্জাতিক বাজারে আলুর দাম কম। তারা আলু আনতে চাচ্ছে। আমরা সম্মতি দিয়েছি। আজকে থেকেই আইপিও ইস্যু করা শুরু হবে। দেশে আলুর দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ও ভোক্তার কষ্টের কথা বিবেচনা করে আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আসলে এত কম জমিতে এত বেশি মানুষের চাহিদা পূরণ করা কঠিন।


মন্ত্রী আরও বলেন, এতে আলুর দাম কমবে, মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবে। বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা নিজেদের তৎপরতা আরও বাড়াবে, যাতে করে কোল্ড স্টোরেজ সিন্ডিকেট যেভাবে আলুর দাম বাড়াচ্ছে, তা কমিয়ে আনা যায়। আড়ত ও কোল্ড স্টোরেজ মিলেই দাম বাড়াচ্ছে। এটা কমিয়ে আনতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও তৎপরতা শুরু করবে।


তিনি বলেন, আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় মধ্যবিত্তদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। দেশে আলুর উৎপাদন বেড়েছে প্রচুর। আমরা বলি, আলু উদ্বৃত্ত থাকে। আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি ও উন্নত জাত প্রবর্তনের কারণে উৎপাদন বেড়েছে। আবহাওয়া আলু উৎপাদনের অনুকূল। আন্তর্জাতিক বাজারে আলু রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। এ বছর অস্বাভাবিকভাবে আলুর দাম বেড়েছে। আলুর দাম বেড়ে যাওয়া কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য না। এতে নিম্নেয়ের মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে। গত দুদিনে আলুর দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।


তিনি আরও বলেন, গত বছরও আমরা আলু রপ্তানির চেষ্টা করেছি। কিছু রপ্তানি হয়েছে। এ বছরও রপ্তানি হয়েছে। কিন্তু যতটুকু রপ্তানি হয়েছে, তাতে দাম এত অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার কথা না। গত বছর আলুর দাম অনেক কম ছিল, তখন চাষিরাও দাম পাননি, কোল্ড স্টোরেজ মালিকদেরও লোকসান হয়েছে। কিন্তু এবার কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা তাদের সেই লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ হিসেবে দেখছেন।


আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তারা একেবারে এবারে সর্বাত্মক আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন। একজন কৃষিবিদ হিসেবে বলতে চাই, বাংলাদেশের আলুর সম্ভাবনা অনেক বেশি। রপ্তানিও করা যাবে। নতুন যে জাতগুলো পেয়েছে, তাতে উৎপাদন আরও বাড়বে। চাষিরা বলছেন, গত বছর চাষিরা যেহেতু আলুর দাম পাননি, সেহেতু এবার তারা সরিষার দিকে ঝুঁকেছে। আমি বলতে চাই, ১৭ কোটি মানুষের চাহিদা অল্প জমি দিয়ে পূরণ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আবার এর মধ্যে ভুট্টা চাষ করতে হচ্ছে, পেঁয়াজ চাষও করতে হচ্ছে। পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতি ও তেলের দাম বেশি হওয়ায় আমরা চাহিদা পূরণ করতে পারছি না।


কৃষিমন্ত্রী বলেন, গত বছর কৃষকেরা সরিষা চাষ করেছে অথবা আলু উৎপাদন করেনি, যেটা আমাদের মূল্যায়নে আমরা সঠিকভাবে জরিপ করতে পারিনি। তাহলে আমরা একেবারেই রপ্তানি করতাম না। কিন্তু আমরা তো আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকতে চাই। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আলু রপ্তানি করেছি।


বিবার্তা/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com