গত ৩০ বছরে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব ব্যাংকের সফররত প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। আজ সোমবার সকালে সচিবালয়ে এক বৈঠকে এ মন্তব্য করেন বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার সন্তোষজনক, তবে প্রবৃদ্ধি আরো বাড়াতে হবে।
আগামীতে দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা ও জলবায়ু খাতে বাংলাদেশকে আরো সহায়তার আশ্বাস দেন জিম ইয়ং কিম।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি জানান, আগামী দুই বছরে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত একশ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দেয়ার পরিকল্পনা করছে বিশ্বব্যাংক। তিনি বলেন, ‘এ টাকা বাংলাদেশের শিশু পুষ্টি এবং নারীর কর্মসংস্থানে ব্যয় হবে।’
জিম ইয়ং কিম বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক এমনিতেই সবাংলাদেশে সহায়তা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। বিশ্বব্যাপী যদি বিশ্বব্যাংক সহায়তা বাড়ায় তবে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ এমনিতেই সহায়তা পাবে। এ ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক জলবায়ু পরিবর্তনে তহবিল বাড়ানোর বিষয়টি প্রাধান্য দেবে। দারিদ্র বিমোচন সম্মেলনে এর বিষয়ে আরও আলোচনা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তবে মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং নারী কর্মসংস্থানের বিষয়টিতে বাংলাদেশকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা আইডা আগামী তিন বছরে বাংলাদেশকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে। এই সহায়তার শর্ত খুবই সাধারণ। তবে মানি মার্কেট থেকে আইডা টাকা সংগহের চেষ্টা করছে। যদি সেটা করতে পারে তবে বাংলাদেশকে আরও ৫০ শতাংশ বা আড়াই বিলিয়ন অতিরিক্ত সহায়তা দিতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে আইডার শর্ত কিছুটা কঠিন হলেও হতে পারে। যা বাংলাদেশ সরকারের ওপর নির্ভর করছে।’
বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করছে এটা বিশ্বব্যাংক কিভাবে নিয়েছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্বব্যাংকে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের যে অর্থায়ন করার কথা ছিল সেই টাকা অন্য প্রকল্পে দেয়া হচ্ছে।’
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘এটি তার প্রথম বাংলাদেশ সফল। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। যোগাযোগসহ বিভিন্ন অবকাঠামোখাতে বিশ্বব্যাংক সব সময় আমাদের সহায়তা করে। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দরিদ্রের হার শুন্য শতাংশে নামিয়ে আনা হবে তা জানিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আমাদের কিছু বিষয়ে সমস্যা ছিল। এ প্রেসিডেন্টের সময়ে তা অনেকটা কেটে কেছে। যেকারণে এ প্রেসিডেন্টের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতুর তহবিল বিশ্বব্যাংক অন্য খাতে দিচ্ছে, আমরা সেটা পাচ্ছি।’
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট এনেডডিকসন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের প্রধান চিমিয়াও ফান।
আর বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অর্থপ্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, বিশ্বব্যাংকে নিযুক্ত বাংলাদেশের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, ইআরডির সিনিয়র সচিব মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ এবং অর্থবিভাগের অতিরিক্ত সচিব জালাল উদ্দিন আহমেদ।
বিবার্তা/জিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]