টিকটক ও ফেসবুকে নারী-শিশুদের ফাঁদে ফেলছে পাচারকারীরা
প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:৪৪
টিকটক ও ফেসবুকে নারী-শিশুদের ফাঁদে ফেলছে পাচারকারীরা
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা দেশের মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ছেন। মানব পাচারকারীরা বাস্তুচ্যুত এসব মানুষকে ফাঁদে ফেলছেন।


বাংলাদেশে এবং দেশের বাইরে নারী এবং মেয়েশিশুরা পাচার ও যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। পাচার ও নিপীড়নের শিকার এসব নারী এবং শিশুদের মধ্যে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁদে পড়ার সংখ্যা বাড়ছে।


জাতিসংঘের মাদক এবং অপরাধবিষয়ক সংস্থার মানব পাচারবিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে এই মন্তব্য করা হয়েছে।


ভিয়েনাভিত্তিক জাতিসংঘের মাদক এবং অপরাধবিষয়ক সংস্থার (ইউএনওডিসি) ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তনকে মানব পাচারের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনে মানব পাচার বেড়ে যাওয়ার পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগকে অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।


বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে ইউএনওডিসির মানব পাচারবিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদন ঢাকায় প্রকাশ করেছে। এ উপলক্ষ্যে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) রাজধানীর একটি হোটেলে প্রতিবেদনের বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার আয়োজন করে। অবশ্য গত মঙ্গলবার বৈশ্বিক ওই প্রতিবেদনটি ভিয়েনা থেকে প্রকাশ করা হয়েছে।


মানব পাচারকারী শুধু যৌন নিপীড়ন নয়, মানব দেহের অঙ্গ পাচারেও যুক্ত বলা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড-১৯-এর পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট মন্দায় হতদরিদ্ররা মানব পাচারের ঝুঁকিতে আছেন।


ইউএনওডিসির দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রতিনিধি মার্কো টেক্সেরিয়া বলেন, ‘অনলাইনে মানব পাচারের নিয়োগ এবং সাইবার অপরাধের মাধ্যমে মানব পাচারের মতো বিষয়গুলো উঠে এসেছে প্রতিবেদনটিতে। করোনা মহামারিতে এই পরিস্থিতি বেড়েছে। যেখানে মানব পাচারকারীরা আরও প্রযুক্তি-সচেতন হয়ে উঠছেন। তবে সফলভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা মানব পাচারকারীদের শনাক্ত, তদন্ত এবং বিচার করতে পারি।’


বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেন, ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১৪১টি দেশের সংগৃহীত তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে মানব পাচারবিষয়ক এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে ইউএনওডিসি। প্রতিবেদন তৈরিতে বিভিন্ন দেশের আদালতের মানব পাচারসংক্রান্ত ৮০০টি মামলার বিশ্লেষণকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। অভিন্ন এই সমস্যা সমাধানের জন্য কোথায় কোথায় নজর দেওয়া দরকার, তা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে করোনা মহামারি মানব পাচারের ঝুঁকি কীভাবে বাড়িয়েছে, সেটা উঠে এসেছে। এর পাশাপাশি মানব পাচারের মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।


স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খায়রুল আলম শেখের সভাপতিত্বে আলোচনায় বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মিজানুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জাতিসংঘ অনু বিভাগ) তৌফিক ইসলাম শাতিল, ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন দূতাবাসের উন্নয়ন সহযোগিতা বিভাগের প্রধান মরিজিও সিয়ান, কানাডা হাইকমিশনের রাজনৈতিক কাউন্সেলর ব্র্যাডলি কোটস, ইউএনওডিসি সদর দপ্তরের কর্মকর্তা এইমি কোমরিয়ে এবং এডুরিস মারকুয়েজ ও ইউএনওডিসি বাংলাদেশের জাতীয় কর্মসূচি সমন্বয়কারী মেহেদি হাসান।


বিবার্তা/এমএইচ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com