চলতি সপ্তাহে বাজারে চালসহ কয়েকটি পণ্যের মূল্য আবারো বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সবজি মাছসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার সকালে রাজধানীর কাওরান বাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার, হাতিরপুল কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে গিয়ে ও খোঁজ নিয়ে এই চিত্র উঠে এসেছে।

চলতি সপ্তাহে বাজারে আরেক ধাপ বৃদ্ধি পেয়েছে চালের দাম। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চালের দাম একটু একটু করে বেড়েই চলেছে। একই সাথে রসুন, ময়দা ও চিনির দামও বেড়েছে গত সপ্তাহের তুলনায়। তবে রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা চাল বিক্রেতারা বরাবরের মতই দাম বাড়ার দায় মিল মালিকদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। তাদের দাবি মিল মালিকদের কাছ থেকে বেশি দামে চাল আমদানির কারণে আগের থেকে বেশি দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে।

বাজারে মিনিকেট চাল মানভেদে কেজিপ্রতি ৪৮ থেকে ৫৫ টাকা, আটাশ ৪৩ থেকে ৪৫ টাকা, নাজিরশাইল ৪৫ থেকে ৪৮, পাইজাম ৪৩ থেকে ৪৫, গুটি স্বর্ণা ৩৭ থেকে ৩৯। এছাড়া পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গড়পড়তা বস্তাপ্রতি চালের দাম আবারো ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে।

চলতি সপ্তাহেও বাজারে বিভিন্ন শীতকালীন সবজির প্রাচুর্যতা লক্ষ্য করা গেছে। আলু বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ১৮ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি সাইজভেদে ১৫ থেকে ২৫ টাকা, মুলা ১০ থেকে ১৫ টাকা, সিম জাতভেদে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, পেঁপে ১৮ থেকে ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া পিসপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা, করোল্লা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, প্রতি পিস লাউ বা চাল কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাঁচকলা হালিপ্রতি ২০ থেকে ২৪ টাকা, কাঁচামরিচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বাজারে লালশাক, সরিষাশাক, কলমিশাক, পালংশাক, মুলাশাক ও লাউশাক পাওয়া যাচ্ছে। শাকের আঁটি সাইজভেদে ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

রসুনের দামও কিছুটা বেড়েছে চলতি সপ্তাহে। তবে পেয়াজ ও অন্যান্য মসলা জাতীয় পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা; যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে। এছাড়া আদা মানভেদে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, খোলা হলুদ ও শুকনা মরিচ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, জিরা ৪৫০, দারুচিনি ৩৫০, ধনে ১২০ থেকে ১৫০, তেজপাতা ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ সপ্তাহেও প্রায় একই দামে বিক্রি হচ্ছে ডালজাতীয় পণ্য। দেশি মসুরের ডাল ১৩০ থেকে ১৩৫ এবং বিদেশী মসুরের ডাল ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মুগ ডাল মানভেদে ৯০ থেকে ১১০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে।

তেলের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। মানভেদে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে লিটারপ্রতি ৮৮ থেকে ৯০ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন তেল ৯৮ থেকে ১০২ টাকা, লুজ পামওয়েল ৭২ থেকে ৭৪, পামওয়েল সুপার ৭৫ থেকে ৭৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

চলতি সপ্তাহে চিনি ও ময়দার দাম বাড়তে দেখা গেছে। চিনি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৬৮ থেকে ৭০ টাকা; যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ২ থেকে ৩ টাকা বেশি। তাছাড়া মানভেদে আটা বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৪ টাকা ও ময়দা ৩৪ থেকে ৪২ টাকা দরে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে। লবণ প্যাকেট মানভেদে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গুড়া দুধ কোম্পানিভেদে ৪২০ থেকে ৫৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম কিছুটা কমতে দেখা গেছে। ফার্মের মুরগির ডিম হালি প্রতি ৩০ থেকে ৩২ ও হাঁসের ডিম ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

চলতি সপ্তাহেও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে হরেক রকমের মাছ, দামও মোটামুটি কম। বিক্রেতারা বলছে আমদানি বেশি হওয়ার কারণে পাইকারি বাজারে মাছের দাম কমেছে। বাজারে রুই মাছ সাইজভেদে কেজি প্রতি ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৮০ টাকা, কাতলা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙ্গাস ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ফার্মের কৈ মাছ কেজিপ্রতি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, শিং মাছ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কোরাল সাইজভেদে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, বেলে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি প্রকারভেদে ৪০০ থেকে ৮০০, চাপিলা ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, পুটি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, ট্যাংরা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে ব্রয়লার মুরগির কমেছে। অন্যান্য মাংসের দামে আসেনি পরিবর্তন। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা কেজি দরে। এছাড়া লেয়ার ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, দেশি মুরগি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস কেজি প্রতি ৪২০ থেকে ৪৪০ টাকা, খাসির মাংস ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বিবার্তা/ওরিন/জিয়া