শিরোনাম
চক্রটি শতাধিক ব্যক্তির কিডনি বিক্রি করেছে: র‍্যাব
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২১, ১৬:৪৮
চক্রটি শতাধিক ব্যক্তির কিডনি বিক্রি করেছে: র‍্যাব
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবৈধভাবে কিডনি কেনাবেচা সংঘবদ্ধ চক্রের অন্যতম হোতা ও সংশ্লিষ্ট ফেসবুক পেইজ অ্যাডমিন মো. শাহরিয়ার ইমরানসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতারক চক্রটি শতাধিক ব্যক্তির কিডনি বিক্রি করেছে বলে জানিয়েছে র্যাব। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) ভোরে তাদের গ্রেফতার করা হয়।


শাহরিয়ার ছাড়া গ্রেফতার অন্যরা হলেন- মেহেদী হাসান (২৪), সাইফুল ইসলাম (২৮),আবদুল মান্নান (৪৫) ও তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু (৩৮)।গ্রেফতারের সময় ভুক্তভোগী কিডনিদাতাদের চারটি পাসপোর্ট, চিকিৎসার জন্য পাসপোর্ট এবং ভিসা-সম্পর্কিত কাগজপত্র, পাঁচটি মুঠোফোন এবং দেশি-বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।


চক্রটি তিনটি দলে ভাগ হয়ে কিডনি ক্রয় ও বিক্রয়ের কাজ করতো। এ জন্য চক্রটি রোগীদের কাছ থেকে নিত ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। আর কিডনিদাতার সঙ্গে চার লাখ টাকার চুক্তি করলেও দিত মাত্র দুই লাখ।


এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।


তিনি বলেন, চক্রের সদস্যরা জয়পুরহাটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্যকে টার্গেট করে অর্থের প্রলোভন দেখাত। ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে কিডনিদাতার কাছ থেকে কিডনি সংগ্রহের পর নির্ধারিত রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হত।


খন্দকার আল মঈন বলেন, চক্রটি প্রায় ১০ বছর ধরে সক্রিয়। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও রোগী ও দাতা সংগ্রহ করে। এই চক্রে ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য রয়েছেন। তারা তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে কিডনি ক্রয়-বিক্রয়ের পুরো কাজ সম্পন্ন করেন। একটি গ্রুপ ঢাকায় অবস্থান করে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে কিডনি প্রয়োজন এমন বিত্তশালী রোগী খুঁজে বের করে। তারপর রোগীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিডনি সংগ্রহ করে দেয়ার কথা বলে সম্পর্ক স্থাপন করে।


দ্বিতীয় গ্রুপটি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র মানুষ খুঁজে বের করে। তাদের অর্থনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অর্থের বিনিময়ে কিডনি বিক্রির জন্য প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসে।


তৃতীয় দলটি প্রলোভনের শিকার কিডনিদাতাদের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীর সঙ্গে রক্তের নমুনা মেলানোসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ করে।


খন্দকার আল মঈন আরো বলেন, পরীক্ষায় কিডনি প্রতিস্থাপনের উপযুক্ততা নিশ্চিত হলে তৃতীয় দলটি ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে কিডনিদাতার পাসপোর্ট ও ভারতে ভিসার ব্যবস্থা করে। পাশের দেশে অবস্থানকারী আরেকটি চক্র বাংলাদেশি চক্রের যোগসাজশে ভুক্তভোগী কিডনিদাতাকে বিমানবন্দর বা স্থলবন্দর থেকে নিজেদের জিম্মায় নিয়ে নেয়। তারপর বিভিন্ন হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে নির্ধারিত রোগীর জন্য কিডনি সংগ্রহ করা হয়। সব প্রক্রিয়া শেষে ভুক্তভোগীদের বৈধ বা অবৈধ উপায়ে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।


র্যাবের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, একটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য চক্রটি ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা নেয় রোগীদের কাছ থেকে। আর কিডনিদাতার সঙ্গে চার লাখ টাকার চুক্তি করলেও দিত মাত্র দুই লাখ। এমনকি নির্ধারিত টাকা না দিয়ে তাদের ভয় দেখায়। একটি কিডনি প্রতিস্থাপনের পর চক্রের প্রধান ইমরান নেন ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা।


বিবার্তা/আবদাল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com