শিরোনাম
রোহিঙ্গার ‘অনুপ্রবেশ’ থামানো যায়নি
প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০১৭, ০৮:১০
রোহিঙ্গার ‘অনুপ্রবেশ’ থামানো যায়নি
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সাম্প্রতিক গোলযোগের পর থেকে এ পর্যন্ত ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে ‘অনুপ্রবেশ’ করেছে। তাদেরকে ঠাঁই করে দিতে দেশের বেশ কিছু ‘প্রভাবশালী ব্যক্তি’ তৎপর রয়েছেন। আবার রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে বেশ কিছু এনজিও মাঠের পাশাপাশি অনলাইনেও সক্রিয় রয়েছে। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের দুর্দশাকে পুঁজি বরে এক শ্রেণীর স্থানীয় দালালও টাকা কামিয়ে নিচ্ছে।


সূত্র মতে, গত ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ কিছুটা কমে আসলেও চলতি জানুয়ারি মাসে স্থানীয় এপার ওপারের দালালদের তৎপরতায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ব্যাপক হারে বেড়েছে।


জাতিসংঘও বলেছে, গত সপ্তাহে ২২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। তাদের হিসাব মতে, এ পর্যন্ত মিয়ানমারের সহিংস ঘটনায় ৬৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে।


সম্প্রতি উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালীতে নতুন গড়ে উঠা রোহিঙ্গা বস্তির লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মিয়ানমারের রাখাইনের মংডুতে সেনা নির্যাতনের সামনে টিকতে না পেরে তারা বাংলাদেশে ঢুকতে বাধ্য হচ্ছে। পাশাপাশি বর্তমানে আরাকানে রোহিঙ্গাদের খুবই দৈন্যদশায় দিন কাটাতে হচ্ছে। তাই আর্থিক কষ্ট ও খাদ্য সংকট লাঘবেও তারা বাংলাদেশে চলে আসছে।


খবর নিয়ে জানা গেছে, সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের অধিকাংশের পরিবারের একাংশ মিয়ানমারে নিজ গ্রামে থেকে গেছে। রাজাপালং ইউনিয়নের স্থানীয় কুতুপালং ওয়ার্ড মেম্বার বখতিয়ার আহমদসহ অনেক গ্রামবাসী জানান মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর জুলুম নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে কিছু কিছু এলাকায়। কিন্তু ইদানিং পুরো আরাকান থেকে যে ভাবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটছে তা খুবই উদ্বেগজনক।



কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তি পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু সিদ্দিক জানান, কুতুপালংয়ে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের আনাগোনা অনেকটা কমেছে। তবে বালুখালীতে নতুন গড়ে উঠা রোহিঙ্গা বস্তি চাঙ্গা করতে সীমান্ত এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোক দালালের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো থেকে ব্যাপক হারে রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে। গত দুদিনে সেখানে ১৭৫ পরিবারের প্রায় হাজার খানেক রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটেছে বলে তিনি জানান।


কুতুপালং শরনার্থী ও সংলগ্ন বস্তিতে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের নজরদারির দায়িত্বে নিয়োজিত একাধিক সংস্থার মতে, নির্যাতনের অজুহাতে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের নিয়ে আরএসও, এআরআইএফ, এআরএনওসহ বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন তৎপরতা চালাচ্ছে। তাদের সাথে আন্তঃসংযোগকারী বাংলাদেশী কিছু উগ্র সংগঠনও রয়েছে বলে জানা গেছে।


পূর্ব থেকে কুতুপালং এ অবস্থানকারী আরএসওর সাবেক সামরিক ট্রেইনার ডাক্তার জয়নাল প্রকাশ ফায়সাল আনোয়ার, মৌলভী আবদুস সালাম, ডাক্তার লালু, হাফেজ নাইম, হাফেজ জালাল আহমদসহ রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বিভিন্নভাবে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন দুর্দশার চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে বিভিন্ন এনজিও, আইএনজিও এর মাধ্যমে নগদ অর্থ, ত্রাণ সহায়তা পাওয়ার ব্যবস্থা করছে। এতে মিয়ানমার থেকে আরো ব্যাপক হারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটানোর ষড়যন্ত্র করছে তারা।


বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com