শিরোনাম
লঞ্চের বাইরেও যাত্রী, ঝুঁকি নিয়েই রাজধানীতে ফিরছে মানুষ
প্রকাশ : ২২ জুলাই ২০২১, ১৭:২০
লঞ্চের বাইরেও যাত্রী, ঝুঁকি নিয়েই রাজধানীতে ফিরছে মানুষ
নাঈম কামাল
প্রিন্ট অ-অ+

চাঁদপুর টু ঢাকাগামী লঞ্চে যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। ধারণ ক্ষমতার তিন থেকে চার গুন যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর থেকে ঢাকার উদ্দ্যেশে ছেড়ে যাচ্ছে প্রতিটি লঞ্চ। ভেতরে যায়গা না পেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাইরে দাঁড়িয়েই রাজধানীতে ফিরছে মানুষ। তার উপরে নতুন ভোগান্তি যোগ হয়েছে কাউন্টার গুলো অনিয়ন্ত্রিত টিকেট বিক্রি।


বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) দুপুর ১টায় ঢাকাগামী এমবি সোনার তরী ৩ লঞ্চ ঘুরে এই তথ্য পাওয়া গেছে।


লঞ্চের বাহিরে দাঁড়িয়ে এবং বসে থাকা একাধিক যাত্রী বলেন, ভেতরে বসার যায়গা তো দূরে থাক দাঁড়ানোর যায়গা নেই।গরম থেকে বাঁচতে বাধ্য হয়েই বাহিরে এসে দাঁড়িয়ে আছি। বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকাতো রিস্ক তারপরেও বাহিরে দাঁড়িয়ে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, ভেতরে চেয়ে বাহিরে রিস্ক কম। ভেতরে উচ্চ করোনা ঝুঁকি রয়েছে যা বাইরে নেই। বাইরে মানুষের সংখ্যা অনেক কম।



চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা থেকে ঢাকায় যাওয়ার জন্য একই লঞ্চে উঠেন মো. আল আমিন। বিবার্তাকে তিনি বলেন, ঢাকায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থায় চাকরি করেন। ২৩ জুলাই থেকে তার অফিস খোলা। অনেকটা বাধ্য হয়েই ফিরতে হচ্ছে তাকে। কিন্তু লঞ্চে উঠেই তীব্র ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। করোনা পরিস্থিতে সরকার নির্ধারিত ভাড়া দেয়ার পরেও তার পাশের সীটের টিকেট অন্যের কাছে বিক্রির অভিযোগ করেন তিনি বলেন, এনিয়ে টিকেট নিয়ে আশা যাত্রীর সেঙ্গে কথা কাটাকাটিও হয়েছে। পরে টিকেট পরিবর্তন করে আরেকটি টিকেট ইস্যু করে দেয়ার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।


তিন থেকে চার গুন যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছাড়ায় আশঙ্কা প্রকাশ করে লক্ষ্মীপুর থেকে আশা যাত্রী রুবেল মৃধ্যা বলেন, লঞ্চ ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের ১ ঘণ্টা আগে এসেও কোন সীট পাইনি। এই একটি লঞ্চ ছাড়া আর কোন লঞ্চও ঘাটে ছিলো না। বাধ্য হয়ে লঞ্চের ভেতরে এক কোনায় কোন রকমে বসতে পেরেছি। অনেকটা আতঙ্ক নিয়ে ঢাকায় ফিরছি। এখান থেকে যে বের হবো সে উপায়ও নেই। চতুর্দিকেই যাত্রীতে পূর্ণ।


রাজধানীর নয়া বাজারে কাগজ তৈরি কারখানায় কর্মরত শ্রমিক সাইফুল বলেন, ঈদের আগের লকডাউনে তিনি বাড়িতে ছিলেন। এবারের লকডাউনে থাকবেন ঢাকায়। তিনি বলেন, পরিবহন সুবিধার জন্য চাঁদপুর হয়ে লঞ্চে করে ঢাকায় যাচ্ছি। কিন্তু সুবিধার চেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছি বেশি। কোথাও বসার যায়গা নেই। দাঁড়িয়ে থাকতেও পারছি না। স্বাস্থ্যবিধির তো কোনা বালাই নেই। অনেকটা আতঙ্ক নিয়ে ফিরতে হচ্ছে।



সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন শিশুদের নিয়ে আসা বাবা-মা। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে লঞ্চের বিতরে দেখা দিয়েছে তীব্র গরম। অতিরিক্ত গরম এবং যাত্রীর কারণে প্রায় প্রতিটি শিশুই ছটপট করছে। কোনভাবেই কান্না থামানো যাচ্ছে না তাদের। অনেকটা অতিষ্ট হয়ে বাচ্চাদেরকে নিয়ে এদিক-সেদিক ঘুরতে দেখা গেছে একাধিক বাবা-মাকে।


‘এমবি সোনার তরী ৩’র মাস্টার (সুকানি) জশিম উদ্দিন বলেন, এই লঞ্চের যাত্রী ধারন ক্ষমতা ৭০০ কিন্তু যাত্রী উঠেছে ১৫শ থেকে ১৬শ। যার কারণে ভেতরে দেখা দিয়েছে প্রচণ্ড গরম। যাত্রীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। আমরা অনেকটা বাধ্য হয়েই এত যাত্রী নিয়ে রওনা দিয়েছি।



স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা তো বারবার স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলছি। কিন্তু তারা যদি না মানে আমাদের করার কি আছে?


এদিকে পুরো লঞ্চ ঘুরে দেখা যায় যাত্রী সংখ্যা তিনগুনেরও বেশি হবে। ডেকের কোন অংশ তো খালি নেই উপরে উঠার সিড়িতেও পা ফেলার যায়গা নেই। এমনকি টয়লেটের দরজার সামনের যায়গাটিও যাত্রীদের দখলে। যা ভোগান্তিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।


বিবার্তা/এনকে/ইমরান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com