শিরোনাম
বাংলাদেশ ওষুধের কাঁচামাল রপ্তানি বাড়াবে
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০১৬, ১২:৫৯
বাংলাদেশ ওষুধের কাঁচামাল রপ্তানি বাড়াবে
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশ শুধু শতাধিক দেশে ওষুধ রপ্তানি করেই ক্ষান্ত নয়; বরং ওষুধের পাশাপাশি ওষুধের কাঁচামাল রপ্তানিতেও বেশ খানিকটা এগিয়ে গেছে। আর এই খাতটাকে আরও এগিয়ে নিতে গাজীপুরে ওষুধের কাঁচামাল তৈরির একটি বিশেষ শিল্পজোনও দ্রুত তৈরি করছে।


বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসনের পদস্থ একজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে এখন ওষুধ তৈরির কাঁচামাল তৈরি হচ্ছে। প্রতিবছর সীমিতহারে কাঁচামাল রপ্তানিও করা হচ্ছে। কাঁচামাল উৎপাদন ও রপ্তানির পরিমাণ বাড়ানোর লক্ষ্যে ঢাকার অদূরে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ওষুধ কাঁচামাল তৈরির জন্য একটি এপিআই পার্ক স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই পার্কে অচিরেই ওষুধ কাঁচামাল উৎপাদন শুরু হবে। এতে করে বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানির পরিমাণ হ্রাসের পাশাপাশি বাংলাদেশ কাঁচামাল রপ্তানি করে কোটি কোটি ডলার আয় করতে পারবে।


এক সময় বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় ওষুধের ৮০ শতাংশেরও বেশি আমদানি করতে হতো। মাত্র বছর কয়েকের ব্যবধানে দৃশ্যপট পুরোপুরি পাল্টে গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় ওষুধের মাত্র দুই শতাংশ আমদানি করে। বাকি ৯৮ শতাংশ ঔষধই উৎপাদিত হচ্ছে দেশে।


প্রস্তাবিত ওষুধ শিল্প পার্ক


বাংলাদেশ ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের ১২৫টি দেশে ওষুধ এবং ওষুধ তৈরির কাঁচামাল রপ্তানি করে ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বাংলাদেশ বছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ওষুধ রপ্তানি করছে। ওষুধ আমদানির পরিমাণ মাত্র দুই শতাংশে নামিয়ে আনার ফলে কোটি কোটি ডলার সাশ্রয় হচ্ছে। ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকাসহ বিশ্বের দেশে দেশে বাংলাদেশি ওষুধের বেশ বড় বাজার গড়ে ওঠেছে।


ওষুধ শিল্পের সম্প্রসারণে গাজিপুরে ওষুধের কাঁচামাল তৈরির বিশেষ একটি শিল্পপার্ক গড়ে তোলারও প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে ওষুধের বাজার বেশ বড়। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজার বিশ হাজার কোটিরও বেশি।


ওষুধশিল্পের এই বিরাট কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হচ্ছে অসংখ্য ওষুধ কারখানায়। বাংলাদেশে বর্তমানে সর্বমোট ২৬৯টি এলোপ্যাথিক ওষুধ প্রস্তুতকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব কারখানায় বছরে ২৪ হাজার ব্র্যান্ডের বিভিন্ন ধরনের ওষুধ উৎপাদন করছে। দেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর, পাবনা, খুলনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে এসব কারখানা রয়েছে। কারখানাগুলোর মধ্যে বেশ কিছু কারখানা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয়েছে।


বিশেষ করে স্কয়ার, বেক্সিমকো, গ্লাক্সো, রেনেটা, ইনসেপটা, হেলথ কেয়ার, এসকেএফ, সেনডোজসহ বিভিন্ন কারখানা আন্তর্জাতিক মানের ওষুধ উৎপাদন করে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গড়ে তোলা বিশ্বমানের ৪২টি ওষুধ কারখানায় উৎপাদিত অন্তত এক হাজার কোটি টাকার ওষুধ ইউরোপ এবং আমেরিকা অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও জাপান, কোরিয়া, আফ্রিকা, মালয়েশিয়া, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। গত বছর আটশ’ কোটিরও বেশি টাকার ওষুধ রপ্তানি হয়েছে। চলতি বছর যা অন্তত এক হাজার কোটি টাকা ছুয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।


এব্যাপারে একটি শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানির পদস্থ একজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের ওষুধশিল্পের বিকাশ পুরোপুরি বেসরকারি খাতে। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতাকে অস্বীকার করা যাবে না। তিনি বলেন, ২০০১ সালে বাংলাদেশে ওষুধ কারখানার সংখ্যা ছিল দেড়শ’টির মতো। ওই সময়ও বাংলাদেশ থেকে কয়েকটি দেশে ওষুধ রপ্তানি হতো। ২০০১ সালে ১৭টি দেশে ৩১ কোটি ৮০ লাখ টাকার ওষুধ এবং ১ কোটি ১০ লাখ টাকার ওষুধ কাঁচামাল রপ্তানি হয়েছিল। মাত্র বছর কয়েকের মাথায় বর্তমানে ১২৫টি দেশে অন্তত এক হাজার কোটি টাকার ওষুধ রপ্তানি ‘চাট্টিখানি’ কথা নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।


তিনি বলেন, কেবল ওষুধই নয়, ওষুধ তৈরির কাঁচামাল তৈরির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। এখন শত শত কোটি টাকার কাঁচামাল বিদেশ থেকে আনতে হয়। অথচ এখানে কাঁচামাল প্রস্তুত করা গেলে অনেক বেশি সুফল মিলবে।


বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com