শিরোনাম
চলতি অর্থবছরেই ভৈরব নদীর খনন শুরু
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০১৭, ১০:২৫
চলতি অর্থবছরেই ভৈরব নদীর খনন শুরু
এইচ আর তুহিন, যশোর
প্রিন্ট অ-অ+

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ভৈরব নদী পুনঃখননের লক্ষ্যে ২৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নদ খননের কাজ বাস্তবায়ন শুরু হবে। খনন কাজ ১ জুলাই ২০১৭ থেকে শুরু করে যার সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন হবে ২০২১ সালের মধ্যে। এ লক্ষ্যে সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে।


যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী জানান, ৯৬ কিলোমিটার ভৈরব নদীর পুনঃখনন ও ড্রেজিংয়ের জন্য ১৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যার খনন কাজ চলতি অর্থবছরে শুরু হয়ে ২০২১ সালের মধ্যে শেষ হবে।


বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে (পাউবো) যশোরের বাবলাতলা থেকে শুরু করে যশোরের আফ্রাঘাট পর্যন্ত ৯৬ কিলোমিটার ভৈরব নদী খনন ও ড্রেজিং করা হবে। এর মধ্যে বসুন্দিয়া থেকে আফ্রাঘাট পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার নদীর ড্রেজিং করার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি গত বছরের ১৬ আগস্ট একনেকের সভায় অনুমোদনও দেয়া হয়। যার প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়া হয়েছে একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর।


সূত্র মতে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে টেকসই ও সমন্বিত নদী ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে, ভৈরব নদীর রিভার বেসিন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি গ্রহণ করে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তাহেরপুর থেকে যশোরের আফ্রাঘাট পর্যন্ত ৯২ কিলোমিটার ভৈরব নদী পুনঃখনন বাবদ ১৯৫৮১.০৯. লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আফ্রাঘাট থেকে বসুন্দিয়া পর্যন্ত চার কিলোমিটার নদী ড্রেজিং করা বাবদ ১৩৯২.৩৬ লাখ টাকা, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদার জীবননগর বুড়ি ভৈবর (আপার ভৈরব) নদীর সঙ্গে মাথাভাঙ্গা নদীর সংযোগ স্থাপনের জন্য ৩৩ কিলোমিটার নদী খনন বাবদ ২৮৭৯.৯৬ লাখ টাকা, ২০ কিলোমিটার দাইতলা খাল পুনঃখনন বাবদ ২৩২৫.৫৮ টাকা. ৪.৪৭৫ কিলোমিটার চারটি সংযোগ খাল পুনঃখনন বাবদ ১৭৬.৮৬ লাখ টাকা ও যশোর শহর এলাকার ভৈরব নদীর দু‘তীরে ১০ কিলোমিটার হেরিংবন্ড রাস্তা নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২৭২.১৯ লাখ টাকা।


পাশাপাশি চলতি অর্থবছরে যশোর হতে বসুন্দিয়া পর্যন্ত নদীর ভাটির অংশের ৩৭ কিলোমিটার খননের জন্য টেন্ডার আহবান করা হবে। যার প্রথম অংশের টেন্ডার চলতি মাসেই আহবান করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ লক্ষে খনন জরিপের কাজও ইতিমধ্যে শেষ করা হয়েছে।


এছাড়া নদীর দু‘ধারের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের জন্য যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে একটি সার্ভে টিম গঠন করেছে। যার উচ্ছেদ কাজ দ্রুত শুরু করা হবে। এলাকার ভুমিদস্যুরা ভৈরব নদের জমি দখল করে দু’পাড়ে ছোট বড় একাধিক ভবন নির্মাণ করেছে। যা আজ পর্যন্ত উচ্ছেদ করা হয়নি।


পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, যশোরের তাহেরপুর পুরাতন ভৈরব নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে ভৈরব নদীটি যশোর-খুলনা জেলা দিয়ে প্রবাহিত। শেষ পর্যন্ত পুরাতন ওই নদীটি খুলনার রুপসা নদীতে মিলিত হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে এ নদীটি অত্র অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষের কৃষি, মৎস্যচাষ, যোগাযোগ ও মালামাল পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহ্নত হয়ে আসছে।


এদিকে চুয়াডাঙ্গার জেলার দামুরহুদা উপজেলা হতে যশোর জেলার চৌগাছার তাহেরপুর পর্যন্ত দীর্ঘ ৩৩ কিলোমিটার মাথাভাঙ্গা নদীটি ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে ভৈরব নদীর উৎসে প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ওই নদীতে জোয়ারবাহিত পলি জমে এর নাব্যও হারিয়ে গেছে। বর্তমানে ভৈরব নদীটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় পাশাপাশি তার প্রস্থও সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে।


এলাকার সর্বস্তরের মানুষ, রাজনৈতিক নেতা ও ভৈরব নদ সংস্কার আন্দোলন কমিটির লাগাতার আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নদীটির নাব্য ফিরে আনার জন্য তার নির্দেশে নদীর সম্ভাব্যতা সমীক্ষার সুপারিশ অনুযায়ী ভৈরব নদী পুনঃখনন এবং তার সংযোগ খালেও পুনঃখননের কাজ অন্তর্ভুক্ত করে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।


বিবার্তা/তুহিন/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com